বগুড়ায় ২২ কেজি গাঁজাসহ গ্রেফতার ২

জন্ম থেকেই বুকের ভেতর এক ক্ষত নিয়ে বেড়ে উঠছে মুরসালিম শিকদার। তবুও তার স্বপ্ন একদিন ডাক্তার হয়ে সেবা করবে মানুষের। বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার বিলকুল গ্রামের আলকাস শিকদার ও নীরু বেগম দম্পতির ছোট ছেলে মুরসালিমের বয়স এখন ১৬ বছর এবং সে দৈবজ্ঞহাটি বিশ্বসর বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। কিন্তু এক কঠিন রোগ তার জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে।
জন্মের মাত্র চার মাস পর পরিবার জানতে পারে মুরসালিমের বুকের হার্টে দুইটি ছিদ্র রয়েছে। দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে চিকিৎসা করাতে করাতে এই পরিবার আজ প্রায় নিঃস্ব। এখন প্রয়োজন জরুরি ভিত্তিতে অস্ত্রোপচারের, যার জন্য প্রয়োজন ৫ লাখ টাকা। এই অসহায় পরিবার ও প্রতিবেশীরা সমাজের হৃদয়বান মানুষের কাছে সাহায্যের আকুল আবেদন জানিয়েছেন, যাতে মুরসালিম স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারে।
আলকাস শিকদার ও নীরু বেগম দীর্ঘ অপেক্ষার পর তাদের সন্তানদের মুখ দেখেছিলেন। বিয়ের চার বছর পর প্রথম কন্যা এবং আরও ১৩ বছর পর তাদের কোলে আসে ছেলে মুরসালিম। কিন্তু জন্মের পর থেকেই মুরসালিম এক কঠিন রোগের সঙ্গে লড়াই করছে। স্থানীয় একটি বেকারিতে দিনমজুরের কাজ করা বাবা আলকাস শিকদার জানান, ছেলের মুখের দিকে তাকালে পৃথিবী তার কাছে অসহায় মনে হয়।
২০১৭ সাল থেকে পরিবারটি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং খুলনার বিভিন্ন শীর্ষ হাসপাতালে নিয়মিত মুরসালিমকে দেখিয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়ছেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে অস্ত্রোপচার করালে মুরসালিম স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবে। কিন্তু ৫ লাখ টাকার বিশাল অঙ্কের কথা শুনে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন নীরু বেগম। কান্নারত কণ্ঠে তিনি বলেন, আমার একমাত্র ছেলে দীর্ঘ ষোল বছর যাবৎ অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে বেঁচে আছে। আমাদের আর কিছু নেই যা দিয়ে ওর চিকিৎসা করাব। আমার সন্তানকে বাঁচাতে এগিয়ে আসুন আপনারা। সারা জীবন আল্লাহর কাছে দোয়া করব আপনাদের জন্য।
মুরসালিমের বড় চাচি রহিমা বেগম বলেন, মাঝে মাঝেই মুরসালিমের বুকে প্রচণ্ড ব্যথা ওঠে, মনে হয় যেন এখনই মারা যাবে। এখন আর আমাদের তেমন কোনো সম্পদ নেই যা দিয়ে ওকে চিকিৎসা করাব। ডাক্তার বলেছে, এখন যদি অপারেশন করানো যায় তাহলে সে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবে।
প্রতিবেশী আব্দুল খালেক বলেন, আমরা দীর্ঘ দিন ধরে দেখছি এই পরিবারটা কিভাবে ধুঁকছে। মুরসালিম খুব ভালো ছেলে, পড়াশোনায়ও মেধাবী। সমাজের বিত্তবানরা যদি এগিয়ে আসে, ছেলেটা একটা নতুন জীবন ফিরে পাবে।
আরেক প্রতিবেশী ফাতেমা বেগম বলেন, ছোটবেলা থেকে ছেলেটাকে কষ্ট পেতে দেখছি। ওর স্বপ্ন ডাক্তার হওয়ার। আমরা সবাই মিলে যতটুকু পেরেছি সাহায্য করেছি, কিন্তু এখন বড় অঙ্কের টাকা দরকার। আমরা আশা করি, সমাজের দয়ালু মানুষরা এই অসহায় পরিবারের পাশে দাঁড়াবেন
মুরসালিমের বাবা আলকাস শিকদার বলেন, আমার ছেলের মুখে হাসি ফোটাতে আপনাদের সাহায্য চাই। জন্ম থেকে অসুস্থ, আমার সন্তানের জীবন এখন চরম ঝুঁকিতে। ডাক্তার বলেছেন জরুরি অপারেশন করাতে, যার জন্য প্রয়োজন ৫ লাখ টাকা। দিনমজুরের সামান্য আয়ে সংসার চালানোই দায়, চিকিৎসা তো দূরের কথা।
ছেলের মা সারাদিন শুধু ওর সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করে। আমরা আর কিছু চাই না, শুধু চাই ও যেন বেঁচে থাকে। সমাজের দয়ালু মানুষদের কাছে আমার আকুল আবেদন, আপনাদের একটু সাহায্যই আমার ছেলেকে নতুন জীবন দিতে পারে, ফিরিয়ে দিতে পারে ওর মুখে হাসি, চোখে স্বপ্ন। আজই পাশে দাঁড়ান, একটি শিশুর ভবিষ্যৎ বাঁচাতে এগিয়ে আসুন।
মুরসালিম বলেন, শারীরিক অসুস্থতার কারণে মাঝে মাঝে এমন যন্ত্রণা ওঠে, মনে হয় আর বুঝি বাঁচব না। চিকিৎসার জন্য বাবা-মা সবকিছু নিঃশেষ করেছেন। আমার জন্যই মা-বাবা তাদের সব সম্পদ খরচ করেছেন। কিন্তু তাদের স্বপ্ন ছিল আমাকে কোরআনের হাফেজ বানাবে। সেটা আমি পারিনি, মাদরাসা ছাড়তে হয়েছে। মাদরাসা থেকে ফিরে এক বছর পর ভর্তি হই স্কুলে। সেখান থেকেই জীবনের নতুন স্বপ্ন দেখা শুরু। এখন আমার একটাই স্বপ্ন আমি ডাক্তার হব। আমি চাই, যেন একদিন আমার মতো যাদের কষ্ট আছে তাদের আমি চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে তুলতে পারি।
বাগেরহাট সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. অসীম কুমার সমাদ্দার বলেন, মুরসালিমের হার্টে ভেন্ট্রিকুলার সেপ্টাল ডিফেক্ট (হার্টে ছিদ্র) ধরা পড়েছে। দ্রুত অস্ত্রোপচার করালে সে আবারও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবে। তার জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন।
গত এক মাস ধরে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে জম্মু ও কাশ্মিরে। ২২ এপ্রিল পেহেলগামে ঘটে যাওয়া জঙ্গি হামলার পর ২২ মে (বৃহস্পতিবার) উপত্যকায় দেখা গেল গত ৫৭ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। সেখানকার আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এর আগেও ৩০ ডিগ্রির ঘর পার করেছিল কাশ্মিরের তাপমাত্রা। ১৯৬৮ সালে ২৪ মে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়াও ১৯৫৬ সালের ৩১ মে ৩৫ ডিগ্রিতে পৌঁছেছিল উপত্যকার তাপমাত্রা। আর এবার ২০২৫ এর ২২ মে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হলো ৩৪. ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদিকে দক্ষিণ কাশ্মিরের কোকেরনাগ এলাকায় রেকর্ড তাপমাত্রা পার করেছে বলে জানা গেছে। গতকাল এখানে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৩.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে ২০০১ সালের ১৫ মে সর্বোচ্চ ৩২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল এই এলাকায়। তাপমাত্রা বাড়তেই সেখানকার স্কুলের সময়ে পরিবর্তনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রাজধানীর বাজারগুলোতে গরু ও খাসির মাংসের দাম অনেকটাই আকাশছোঁয়া। এদিকে মাছের বাজারেও দামের উত্থান-পতনে মধ্য ও নিম্নবিত্ত শ্রেণিতে একমাত্র স্বস্তির জায়গা হয়ে উঠেছে মুরগির বাজার। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমান বাজারে ব্রয়লার, সোনালি কিংবা দেশি সব ধরনের মুরগির দাম তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল থাকায় ভোক্তাদের বড় অংশ এখন মুরগিতেই নির্ভর করছেন। কেউ কেউ আবার বেশি করে কিনে ফ্রিজে সংরক্ষণও করছেন।
শুক্রবার (২৩ মে) সকালে রাজধানীর বনশ্রী, রামপুরা এবং মালিবাগ এলাকার বাজার ঘুরে এবং বাজার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, আজকের বাজারে গরুর মাংস প্রতি কেজি ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। খাসির মাংস মিলছে ১,২৫০ টাকায় এবং ছাগলের মাংস ১,১০০ টাকা কেজি। এসব দামে হিমশিম খাচ্ছেন সাধারণ ক্রেতারা। অনেকে বাজারে এসে গরুর মাংসের দোকান ঘুরে শেষ পর্যন্ত ফিরে যাচ্ছেন মুরগির দিকে।
আজকের বাজারে একটু স্বস্তিজনক অবস্থা বিরাজ করছে মুরগির মাংসে। আজকের বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, সোনালি ২৫০–২৬০ টাকা, সাদা ও লাল লেয়ার ২৫০–২৬০ টাকা, দেশি মুরগি ৫৫০–৬০০ টাকা এবং হাঁস প্রতি পিস ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে আজকের বাজারে মাছের দামে কিছুটা বৈচিত্র্য দেখা গেছে। কিছু মাছের দাম পূর্বের ন্যায় স্থিতিশীল থাকলেও কিছু মাছের দামে উত্থান-পতন রয়েছে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, তেলাপিয়া আর পাঙাশ ছাড়া অধিকাংশ মাছের দাম এখনও উচ্চ। বাজারে প্রতি কেজি রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, কাতল বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, চিংড়ি ৬৫০ থেকে ৮০০ টাকা, টেংরা ৬০০-৭০০ টাকা, চাষের শিং ৪০০-৪৫০ টাকা, চাষের কৈ ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, তেলাপিয়া ১৫০ থেকে ২২০ টাকা, চাষের পাঙাশ ১৮০ থেকে ২২০ টাকা এবং কোরাল মাছ ৭৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়াও আজকের বাজারে প্রতি কেজি বোয়াল ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, পোয়া ৪০০ টাকা, আইড় ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা, দেশি কৈ ৮০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা ও দেশি শিং ১০০০ থেকে ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
রামপুরা বাজারে বাজার করতে আসা হাসিবুর রহমান নামক এক ক্রেতা বলেন, ছেলে-মেয়েরা রুই মাছ খুব পছন্দ করে, কিন্তু এখন তো রুইও ৩৫০ টাকা! তেলাপিয়াতেই ফিরতি পথ খুঁজে নিতে হচ্ছে। বেশিরভাগ ক্রেতারাই দেখবেন কমদামি মাছের দোকানগুলোতেই ভিড় বেশি। এছাড়া তো কিছু করার নেই।
তিনি বলেন, ছোটবেলা থেকেই মাছে-ভাতে বড় হয়েছি, এখন মাছ কিনতে গেলে মাসের বাজেট উল্টে যায়। দেশে মাছের উৎপাদন বাড়লেও দাম কমছে না, বরং দিনে দিনে আরও নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। এখন কথা হলো,দেশে এত মাছ চাষ হয়, তাও দাম কমে না কেন? এই প্রশ্নের উত্তর কে দেবে?
পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা চাকরিজীবী ফারজানা ইয়াসমিন বলেন, খুচরা বিক্রেতারা একসময় কম দামে গরুর মাংস বিক্রি করলেও এখন ‘সিন্ডিকেটের চাপে’ পেছিয়ে গেছেন। আর খুচরা বিক্রেতারা দায় দিচ্ছেন পাইকারদের কাঁধে।
তিনি বলেন, এক কেজি গরুর মাংস নিয়েছি ৮০০ টাকায়। দাম কিছুটা বেশিই মনে হচ্ছে। কিন্তু কিছু তো করার নেই। কিছুদিন পরই ঈদ আসছে, জানি না দাম এখানেই থাকে, নাকি আরও বেড়ে যায়।
রফিকুল ইসলাম নামক আরেক ক্রেতা বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে মুরগির দাম এখনও সহনীয়। গরুর মাংসের দিকে তাকাতেও পারি না। তাই একটু বেশি করে মুরগির মাংস কিনে নিয়েছি। আমার মতো আরও অনেকেই নিচ্ছে। বলা তো যায় না, ঈদ উপলক্ষ্যে হয়ত আবারও দাম বেড়ে যাবে।
এদিকে খুচরা পর্যায়ের বিক্রেতারা বলছেন, দাম বাড়া-কমার পেছনে তাদের কোনো অবদান নেই। পাইকারি বাজার থেকে কমে কিনতে পারলে কমেই বিক্রি সম্ভব, যার প্রমাণ ব্রয়লার মুরগি।
মোহাম্মদ আলী নামক এক মুরগি বিক্রেতা বলেন, মুরগির মাংস এখন ভরসার জায়গা। দামও কম, তাই চাহিদা বেশি। মাসখানেক আগেও ব্রয়লার ২০০ টাকার বেশি বিক্রি করেছি। কিন্তু এখন বিক্রি করতে হচ্ছে ১৭০ টাকাতে। কেজিতে দাম ৩০/৪০ টাকা পর্যন্ত কমে গেছে। প্রতি মুরগিতে কোন রকম খরচটা উঠতেছে।
গরুর মাংসের বেশি দাম প্রসঙ্গে মাংস বিক্রেতা আজাহার আলী বলেন, আমরা নিজেরা তো দাম বাড়াই না। পাইকারি বাজার থেকে যদি কমে আসতো, আমরাও কমিয়ে দিতাম। মানুষ ভাবে আমরাই দাম বাড়াই এটা ভুল ধারণা।
মাছ বিক্রেতা জসিম উদ্দিন জানান, মাছের বাজারে খুব বেশি পার্থক্য নেই। কিছু মাছের দাম কিছুটা কমেছে, আবার ইলিশসহ আরও কিছু মাছের দাম বেড়েছে। তবে সবমিলিয়ে ভালোই বিক্রি হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন