
হজরত আবু নুজাইদ ইমরান ইবনে হুসাইন আল-খুযায়ী থেকে বর্ণিত, একবার জুহাইনাহ গোত্রের একজন নারী রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি সাল্লাল্লাহু আলাইহি কাছে এলেন। তিনি গর্ভবতী ছিলেন, জেনার কারণে তার গর্ভে এই সন্তান এসেছিলো। তবে এই নারী তার কৃতকর্মের কারণে লজ্জিত ছিল। তিনি তার পাপ সম্পর্কে বুঝতে পারার পর তওবার জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠেছিলেন।
তিনি আল্লাহর রাসূলের কাছে এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি হদ্দ (শরীয়ত নির্ধারিত ব্যভিচারের শাস্তি) এর উপযোগী হয়েছি। আমার ওপর তা কার্যকর করুন। তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে তার ওপর শরীয়ত নির্ধারিত ব্যভিচারের শাস্তি আরোপ করতে অনুরোধ করলেন। এখানে হদ্দ বলতে রজমকে (ইসলামি বিধানমতে পাথর মেরে মৃত্যু) বুঝানো হয়েছে; কারণ, সেই নারী বিবাহিত ছিলেন।
এ কথা জানার পর নবীজি সাল্লাল্লাহু‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার অভিভাবককে ডাকলেন এবং বললেন, ‘তাকে ভালোভাবে দেখাশুনা কর। এরপর সে যখন সন্তান প্রসব করবে তখন তাকে আমার কাছে নিয়ে আসবে।’
লো আচরণ করতে বলার আরেকটি কারণ ছিলো- এ ধরণের কাজের কারণে মানুষের অন্তরে তার প্রতি ঘৃণা জন্মায় এবং তারা তাকে কষ্টদায়ক কথাবার্তা বলে।
নির্ধারিত সময় পরে সেই নারী সন্তান প্রসব করলেন। সন্তান প্রসবের পর তিনি আবার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এলেন এবং নিজের পাপের শাস্তি প্রয়োগ করতে বললেন।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে সন্তানের দুধপান শেষ করা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বললেন। সেই নারীর সন্তান দুধ পান ছেড়ে দেওয়ার পর তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এলেন এবং নিজের পাপ থেকে তওবার আগ্রহ প্রকাশ করলেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইসলামি বিধানমতে তার অপরাধের শাস্তি প্রদানের নির্দেশ দিলেন।
শাস্তি বাস্তবায়নের আগে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শক্তভাবে তার কাপড় বেঁধে নিতে বললেন, যেনো রজমের (শরীয়ত নির্ধারিত বিবাহিত নারীর ব্যভিচারের শাস্তি) সময় তার সতর খুলে না যায়। এরপর তিনি শাস্তি কার্যকর করার আদেশ দিলেন। তাকে পাথর মারা হলো।
তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জানালেন, ‘এ নারী এমন বিশুদ্ধ তাওবা করেছে, যদি তা মদীনার ৭০টি অপরাধী লোকের মধ্যে ভাগ করা হয় তা তাদের জন্য যথেষ্ট হবে এবং তাদের উপকার হবে। কারণ, এই নারী আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় এবং ব্যভিচারের গুনাহ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছে। এর থেকে মহান আর কী হতে পারে? (মুসলিম শরিফ)