বিএনপি-জামায়াতের ডাকা অবরোধের প্রথম দিন মঙ্গলবার বগুড়ার ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক এবং বগুড়া-ঢাকা মহাসড়কে আওয়ামীলীগের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় উভয়পক্ষ একে অপরের দিকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। বিস্ফোরণ ঘটানো হয় কয়েকটি ককটেল। পুলিশকে লক্ষ্য করে অবরোধকারীরা ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে এবং ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষায় পুলিশ টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। পুলিশের পাশাপাশি ঘটনাস্থলে বিজিবি এবং র্যাব সদস্যরা রয়েছেন। বগুড়ায় সকাল থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটি কুরিয়ার সার্ভিসের গাড়ি এবং তিনটি মোটরসাইকেলে আগুন দিয়েছে অবরোধ সমর্থকরা। এছাড়া, শাহ ফতেহ আলী পরিবহনের তিনটি বাস, শ্যামলী পরিবহনের একটি বাস, পণ্যবাহী কার্গো ট্রাকসহ অন্তত ৮টি যানবাহনে ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ পওয়া গেছে। অবরোধের সমর্থনে সকাল থেকেই ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের মাটিডালি, বাঘোপাড়া-গোকুল এলাকায় লাঠি নিয়ে অবস্থান নেয় বিএনপির নেতাকর্মীরা। অন্যদিকে বগুড়া-ঢাকা মহাসড়কের বনানী এলাকার লিচুতলা দ্বিতীয় বাইপাস মোড়ে অবস্থান নেয় অবরোধকারী। এ সময় তারা ওষুধ পরিবহনকারী গাড়ি এবং অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া সব প্রকার যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। অবরোধের কারণে ঢাকা থেকে আসা একাধিক যানবাহন আটকা পড়ে। একপর্যায়ে পুলিশ ও বিজিবি সদস্যদের নিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট সেখানে অবস্থান নেয়। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে শাজাহানপুর উপজেলা আওয়ামীলীগ মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে বনানী দ্বিতীয় বাইপাস এলাকায় আসলে অবরোধকারীদের সঙ্গে আওয়ামীলীগ নেতাদের সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।
এ সময় উভয়পক্ষ ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা ইটপাকেটেলের মুখে তাদের তিনটি মোটরসাইকেল দ্বিতীয় বাইপাস মোড়ে ফেলে রেখে চলে যান। পরে মোটরসাইকেলগুলোতে আগুন ধরিয়ে দেয় অবরোধকারীরা। পাশাপাশি তারা তিনটি যানবাহন ভাঙচুর চালায়। এ সময় পুলিশ ছত্রভঙ্গ করতে গেলে অবরোধকারীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে করতে ২য় বাইপাস সড়কের দিকে চলে যায় এবং সেখানে অবস্থান নেয়। ঘটনাস্থলে থাকা বগুড়া জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুর রশিদ বলেন, অবরোধকারীদের ছত্রভঙ্গ করা হয়েছে। অন্যদিকে, সকালে শহরের মাটিডালী ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে এবং এরুলিয়া এলাকায় বগুড়া-নওগাঁ আঞ্চলিক সড়কে শাহ ফতেহ আলী পরিবহনের তিনটি বাস ভাঙচুর করার ঘটনা ঘটে। এ সময় আহত হয়েছেন অন্তত পাঁচ জন যাত্রী।
মাটিডালি এলাকায় শ্যামলী পরিবহনের একটি বাস ভাঙচুর করা হয়। এর আগে সকালে মাটিডালি মোড়ে অবরোধকারীরা মহাসড়কে ইট-পাটকেল ফেলে টায়ারে আগুনে জ্বালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকেন। এছাড়া দুপুরের দিকে বাঘোপাড়া এলাকায় ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে এজেআর কুরিয়ার সার্ভিসের একটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি গাড়ি ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভায়। বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আখতার বলেন, জেলার কয়েকটি স্থানে দুর্বৃত্তরা হামলা চালিয়ে মানুষের জানমালের ক্ষতি করার চেষ্টা করেছে। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছি। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে ককটেল বিস্ফোরণে আমাদের সদর থানার এসআই জহুরুল আহত হয়েছেন।
উত্তরের কন্ঠ /এ ,এস