
দিনাজপুরের বীরগঞ্জে কালীপূজা উপলক্ষে বিক্রি বেড়েছে মাটির তৈরি প্রদীপ এবং পূজার অন্যন্য সামগ্ৰীর। এই দিন হিন্দু ধর্মালম্বীরা ঘরে ঘরে ছোট ছোট মাটির প্রদীপ জ্বালিয়ে আলোর এ উৎসবে মেতে ওঠে। এবার দুই দিন ধরে৷ চলবে এ উৎসব। হিন্দুশাস্ত্র অনুযায়ী, রোববার দুপুর থেকে পরদিন সোমবার দুপুর পর্যন্ত তিথি পড়েছে দীপাবলির। দীপাবলির দুই দিন তিথি পড়লেও সোমবারকে দীপালির জন্য সঠিক সময় মনে করছেন না পুরোহিতরা।
সোমবার দুপুরেই দীপালির তিথি শেষ হয়ে যাওয়ায় রোববারের সন্ধ্যাকে সঠিক সময় বলে মনে করছেন তারা। এ হিসাব মতে,তিথি অনুযায়ী দীপাবলি উৎসব দুই দিন হলেও হিন্দু ধর্মালম্বীরা আজ রোববারই পালন করবেন আলোর এ পবিত্র উৎসব। এদিন সারাদেশের প্রতিটি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়িতে সন্ধ্যায় প্রদীপ জ্বালানো হয়।
রবিবার (১২ নভেম্বর) বিকেলে সরজমিনে উপজেলার সদর ও পৌরসভার দৈনিক বাজার ও বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, অন্যান্য দিনের থেকে শ্যামা পূজা উদযাপন উপলক্ষে মাটির প্রদীপ এবং পূজার অন্যন্য সামগ্ৰী এবং আতসবাজির বিক্রি বেড়েছে। এইসব দোকানে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করার মতো। বাবা-ছেলে, দাদী- নাতনী সহ নানা বয়সের মানুষ পূজার এই অনুসঙ্গ নিতে আসে। এদিকে প্রদীপের দাম গত বছরের থেকে কিছুটা বেশি বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা।
বলাকা মোড় এলাকায় সংকর নামে একজন বলেন,”গত বছর ২২ পিস প্রদীপ ১২ থেকে ১৫ টাকায় বিক্রি হলেও এবছর ২০ টাকার নিচে প্রদীপ নেই।”
বীরগঞ্জ পৌরশহরের দৈনিক বাজারে প্রদীপ কিনতে আসা নরেন চন্দ্র দাস নামে এক বৃদ্ধা বলেন, “প্রদীপের দাম একটু বেশি কিন্তু আমরা প্রতিবছর মাটির প্রদীপেই আলো জ্বালাই তাই বেশি দামেই নিলাম।” তিনি ১০০ প্রদীপ ৭০ টাকায় কিনেছি।
প্রদীপের দাম এবং বেচাকেনা কেমন হচ্ছে জানতে চাইলে উপজেলার পাল্টাপুর ইউনিয়নের পাল্টাপুর গ্রামের বংকৈশ পাল
বলেন, “গতবছরের তুলনায় এবছর প্রদীপ এবার বিক্রি কিছুটা কম। প্রদীপ তৈরীর খরচও আগের থেকে বেড়েছে। যে দামে বিক্রি করছি তা দিয়ে কোনমতে খরচটা উঠে। লাভ নেই বললেই চলে।”
গত কয়েক বছর ধরে মাটির প্রদীপের পরিবর্তে অনেক বাড়িতেই জায়গায় করে নিচ্ছে রঙিন ইলেকট্রিক বাতি। তবুও এখনও বেশিরভাগ বাড়িতেই ঐতিহ্য ধরে রাখতে মাটির প্রদীপ জ্বালানো হয় কালীপূজায়।
বীরগঞ্জ কলেজপাড়া মন্দিরে পূজা করতে আসা সুনীল চক্রবর্তী জানান,সনাতন বা হিন্দু ধর্মে দীপাবলিতে লক্ষ্মী ও গণেশ পূজার রীতি রয়েছে। শাস্ত্রমতে, এ দুই পূজার শুভ দিন রোববার সন্ধ্যা ৫টা ৪০মিনিট থেকে ৭টা ৩৬মিনিট পর্যন্ত। আর ৩১ মিনিট পর্যন্ত। এ তিথিতে লক্ষ্মী ও গণেশ পূজা করলে ব্যক্তির জীবন অঢেল অর্থ আর সুখ-সমৃদ্ধিতে ভরে উঠে। আর দীপাবলির তিথিতে প্রজ্জ্বলিত প্রতিটি বাতি জীবনের অন্ধকার দূর করে জীবনকে করে তোলে ঝলমলে। অন্ধকারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রতীকও মনে করা হয় দীপাবলির আলোকে। ভারতীয় অবাঙালিরা দীপাবলির তিথিতে করে ধনতেরাস উৎসব। তবে বাঙালিরা লক্ষ্মী ও গণেশ পূজা শুভ সময় সন্ধ্যা পেরেয়ে যাওয়ার পর উদযাপন করেন কালী পূজাও। দীপাবলির দিন মধ্যরাতেই শুরু হবে শ্রী শ্রী শ্যাম পূজা বা কালী পূজা। অমাবস্যার এ তিথিতে সব হিন্দুই কালী পূজা করেন না। বাঙালি সাংস্কৃতিকতে কালীপূজার পাশাপাশি দীপাবলির উৎসব গুরুত্বপূর্ণ।
উত্তরের কন্ঠ/ এ,এস