
শতভাগ মেধা, যোগ্যতা ও স্বচ্ছতার মাধ্যমে শুধুমাত্র আবেদন খরচ ১২০ টাকা দিয়ে পুলিশের চাকরি হয়েছে পঞ্চগড়ের ২৫ তরুণ-তরুণীর। এ তালিকায় রয়েছেন জাতীয় হ্যান্ডবল দলের খেলোয়াড় তেঁতুলিয়ার সাকিবা জান্নাত শাম্মিও। এবার তার স্বপ্ন পুলিশের হয়েই খেলায় অংশ নিয়ে শিরোপা জেতার।
গত বুধবার (১৩ মার্চ) পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে নিয়োগের ফলাফল ঘোষণা হয়েছে। পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা ট্রেইনি পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করেন। নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে ২১ জন পুরুষ ও ৪ জন নারী রয়েছেন।
পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে নিয়োগ পাওয়া ৪ নারীর মধ্যে তেঁতুলিয়ার সীমান্তবর্তী এলাকার তিরনইহাট ইউনিয়নের ভোলাজোত তালকুবাড়ী গ্রামের সেকান্দার আলীর মেয়ে সাকিবা জান্নাত শাম্মি রয়েছেন। তিন বোনের মধ্যে সবার বড় তিনি। তিন বোনের মধ্যেই দুই বোনই জাতীয় হ্যান্ডবল দলের খেলোয়াড়।
শাম্মির মতো ছোট বোন সীমাও হ্যান্ডবল খেলোয়াড়। দুই বোন তেঁতুলিয়া টিমের হয়ে ৪৯তম গ্রীষ্মকালের হ্যান্ডবল ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় গোল্ড মেডেল অর্জন করেন। ৫০তম গ্রীষ্মকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতাতেও হ্যান্ডবলে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়। তেঁতুলিয়া টিম হয়ে পাঁচবার ন্যাশনাল গেমসে রানার্স আপ ট্রফি অর্জন করে শাম্মির টিম। ২০২৩ এ জামালপুর হয়ে খেলে আমি জামালপুরকে রানার্স-আপ করেন।
পুলিশের চাকরি পাওয়ার পর সাকিবা জান্নাত শাম্মী বলেন, ‘জীবনে প্রথমবার চাকরির আবেদন করে বিনামূল্যে চাকরি পেয়ে খুবই খুশি আমি। খুশি আমার পরিবারও। কারণ, কঠিন দারিদ্র্যতার সঙ্গে লড়াই করে বাবা আমাদের লালন পালন করে আসছেন। সরকারি চাকরি সোনার হরিণ। সেখানে কোনো প্রকার হয়রানি, সুপারিশ ও ঘুষ ছাড়া পুলিশের গর্বিত সদস্য হতে পেরে আমি আনন্দিত। এ জন্য বাংলাদেশ পুলিশকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। আমি হ্যান্ডবল খেলোয়াড় হিসেবে দেশ-বিদেশে খেলেছি। অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছি, অর্জন করেছি একাধিক শিরোপাও। এবার বাংলাদেশ পুলিশের হয়ে খেলতে চাই। সেবা করতে চাই মানুষের। অর্জন করতে চাই বাংলাদেশ পুলিশের হয়ে শিরোপা।
শাম্মীর বাবা সেকান্দার আলী বলেন, আমি খুবই আনন্দিত যে আমার মেয়ের পুলিশে চাকরি হয়েছে। কঠিন দারিদ্র্যতার মধ্যেই তিন মেয়েকে লেখাপড়া করানোর চেষ্টা করে যাচ্ছি। তিন মেয়ের মধ্যে দুই মেয়ে জাতীয় দলে হ্যান্ডবল খেলছে।
পঞ্চগড় জেলা পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা বলেন, নিজের যোগ্যতা ও মেধার ভিত্তিতে পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে ২৫ জন তরুণ-তরুণী চাকরি পেয়েছেন। যারা নিয়োগ পেয়েছে তারা সবাই নিজেদের যোগ্যতা ও মেধায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। এতে তাদের কোনো যোগাযোগ, লবিং ও ঘুষ দিতে হয়নি। তাদের মাত্র আবেদন করতে যে খরচ হয়েছে ১২০ টাকা, সেটিই খর হয়েছে। আশা করছি, যারা আজ বাংলাদেশ পুলিশের নতুন সদস্য হলেন তারা সবাই দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করবেন।