সুনামগঞ্জের ছাতকে পূর্ব বিরোধের জেরে হামলা ও ঘরে আগুন দিয়ে ঘর জ্বালিয়ে দেওয়া অভিযোগ উঠেছে। গত সোমবার উপজেলার ছৈলাÑআফজলাবাদ ইউনিয়নের বাগইন গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয়সুত্রে জানাযায়, বাগইন গ্রামের মতিউর রহমানের ছেলে মাহবুবুর রহমান ইমন গং ও একই গ্রামের মতিন মিয়া, মৃত. ময়না মিয়ার ছেলে শহিদ মিয়া ও মালুন মিয়া গংদের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবৎ জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিল।
ভুক্তভোগী মাহবুবুর রহমান ইমন গংদের অভিযোগ তাদের বসতবাড়ীর সীমানার পাশে নদী ভাঙ্গনের কারণে গাছ ও বাঁশের বেড়া দেওয়া ছিল। গত শনিবার সকাল আনুমানিক ৯ ঘটিকার সময় উক্ত বাঁশের বেড়ার পাশে লাগানো গাছের চারা অনিষ্ট করছিলেন প্রতিপক্ষের লোকজন। এতে বাধা প্রদান করায় প্রতিপক্ষের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে দেশীয় অস্ত্রসহ বাঁশের লাঠি-শোটা নিয়ে মাহবুবুর রহমান ইমনের বসত ঘরের সামনে এসে তাকে ও তার পরিবারের লোকজনকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।
এক পর্যায়ে মাহবুবুর রহমান ইমনের উপর হামলা করা হয়। এতে তার শরীরের বিভিন্ন অংশে ফোলা জখম হয়। এ সময় মাহবুবুর রহমান ইমন ও তার পরিবারকে ভয়ভীতি ও হুমকি-ধমকি প্রদর্শন করা হয়। প্রতিপক্ষের লোকজন ঘটনাস্থল ত্যাগ করে যাওয়ার পথে বেড়া ও লাগানো গাছের চারা উপড়ে ফেলে দিয়েছেন এমন অভিযোগ ভুক্তভোগী পরিবারের। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবার ঘটনার দিনই ছাতক থানার অধীনস্থ্য জাহিদপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। অন্যদিকে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বিষয়টি নিস্পত্তির জন্য উভয় পক্ষের সাথে আলোচনা করে এক সালিস বৈঠকের উদ্দ্যোগ গ্রহন করেন।
ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ সালিস বৈঠকের আগে রবিবার দিবাগত রাত তাদের বসত ঘরে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেন প্রতিপক্ষের লোকজন। এতে ঘরে থাকা ৩টি মুঠোফোন, ১ টি ল্যাপটপসহ বেশ কিছু মালামাল পুড়ে যায় এবং সালিস কার্যক্রম ব্যস্তে যায়। এদিকে গত সোমবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন জাহিদপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই আরজু মিয়া। অপরদিকে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বিষয়টি নিস্পত্তির জন্য উভয় পক্ষের সাথে আলোচনা করে ফের সালিস বৈঠকের উদ্যোগ গ্রহন করেন।
গত বুধবার ঐ সালিস বৈঠক অনুষ্টিত হবার কথা থাকলেও প্রতিপক্ষের লোকজন সালিস বৈঠকে উপস্থিত না হওয়ায় সালিস কার্যক্রম ব্যস্তে যায় অভিযোগ ভুক্তভোগী পরিবারের। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী সুয়েবুর রহমান, মানিক মিয়া, খয়রুন বেগম. রাসেল মিয়া জানান, প্রতিপক্ষের লোকজনের নির্যাতনে আমরা অতিষ্ট হয়ে পড়েছি। বিগত সময়েী ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে আমরা অসহায় পরিবারের প্রতি জুলুম নির্যাতন করে আসছিলে বর্তমানে তা অব্যাহত রেখেছেন। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় ডাকাতি মারামারিসহ বিভিন্ন মামলা রয়েছে। এমনকি আমাদের সাথে বিভিন্ন সময় বিরোধ সৃষ্টি হলে ষ্ট্যাম্পে লিখিতও দিয়েছেন তারা।
অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করনে অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, আইন উপদেষ্ট, প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সৃদৃষ্টি কামনা করেন ভুক্তভোগীরা। এ বিষয়ে অভিযুক্ত মতিন মিয়ার সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে মুঠোফোনে বন্ধ পাওয়া যায়। এ বিষয়ে সালিস ব্যক্তিত্ব আব্দুল আউয়াল বলেন, প্রথমদিকে আস্থা না থাকায় মাহবুবুর রহমান ইমন গংরা সালিস মানছিলেন না। পরবর্তীতে আমরা বিচারকার্যে ৫ হাজার টাকা করে উভয় পক্ষকে জামানত ধার্য্য করি। এচাড়ও ন্যায় বিচার প্রাপ্তির নিশ্চয়তা প্রদান করে তাদের আস্থা ফিরিয়ে আনি।
গত বুধবার সালিস বৈঠক অনুষ্টিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্ত সকাল ১১ টার দিকে ২য় পক্ষের মতিন মিয়া আমাকে মুঠোফোনে কল দিয়ে বৈঠকে আসতে পারবেন না বলে সময় চান। বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে সময় দিতে না পারার অপপরগতা প্রকাশ করি। এসময় মতিন মিয়া বলেন, সময় চেয়েছি দিলে দিবেন না দিলে কিছু করার নাই বলেন। এ বিষয়ে জাহিদপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই আরজু মিয়া ঘটনাস্থল পরিদর্শনের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।