বৈষম্যের শিকার হরিজন সম্প্রদায়

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশের সময়: সোমবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ । ৮:১৭ পূর্বাহ্ণ

‘মেথরের ঘরে জন্ম নেওয়াই যেন পাপ, তাদের ঘরে জন্ম নেওয়া নিষ্পাপ শিশুরাও এই বৈষম্য থেকে রেহাই পায় না। প্রতিনিয়ত তাদের সন্তানদের মেথরের ছেলেমেয়ে বলে তুচ্ছতাচ্ছিল্য আর অবহেলার শিকার হতে হয়। হোটেল কিংবা রেস্টুরেন্টে ঢুকতে দেওয়া তো দূরের কথা, এক গ্লাস পানি পর্যন্ত পান করতে দেওয়া হয় না। কারণ তাদের খাওয়া পাত্রে খেলে  নাকি অন্যদের জাত চলে যাবে।

বলতে গেলে সমাজ থেকে তারা একেবারেই বিচ্যুত জাতি।’ নিজেদের অসহায়ত্বের কথা এভাবেই বলছিলেন দিনাজপুরের বীরগঞ্জ পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা শিবকুমার (৪৫)। 

সত্যাগ্রহ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা মহাত্মা গান্ধী দলিতদের মেথর বা সুইপার না বলে হরিজন বলার বাণী দিয়ে গেছেন। এর মাধ্যমে মহাত্মা গান্ধী সমাজের অবহেলিত সম্প্রদায়কে একটি সম্মানজনক অবস্থানে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন, কিন্তু দুঃখের বিষয় সুশীল সমাজ আজও তার স্বীকৃতি দেয়নি।

অর্থনৈতিক, সামাজিক নানা বৈষম্যের বেড়াজালে তারা আজও জর্জরিত। তাদের কাছে সেবা নেওয়া যাবে, কিন্তু তাদের স্পর্শ করা যাবে না। বিভিন্ন মৌলিক ও মানবিক অধিকার থেকে তারা আজও বঞ্চিত। এই সম্প্রদায়ের জীবনমান উন্নয়নে এখনই পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
শিবানী (১০) নামের এক শিক্ষার্থী জানান, স্কুলে গেলে সহপাঠীরা একসঙ্গে বসতে চায় না, কথা বলতে চায় না।

১৯৯১ সালে আদমশুমারিতে ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর তালিকায় প্রথম হরিজন নামটি পাওয়া যায়। ব্রিটিশ শাসনামলে জঙ্গল পরিষ্কারের জন্য ভারতের কয়েকটি তেলেগু পরিবারকে ঢাকায় আনা হয়। কালের বিবর্তনে তারা একসময় এ দেশের নাগরিক হয়ে যায়। তখন থেকে তারা দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বসবাস করে আসছে।

হরিজনদের বড় একটি অংশ বাংলাদেশ রেলওয়েতে চাকরি করে। তাদের অধিকাংশ সময় মাস্টার রোলে নিয়োগ দেওয়া হয়। ফলে মেডিক্যাল ভাতা, মাতৃত্বকালীন ছুটি, উৎসব ভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা তারা পায় না।  বর্তমানে হরিজন সম্প্রদায়ের পেশায় ভিন্ন পেশার লোকজন প্রবেশ করায় তাদের কর্মসংস্থান সংকুচিত হয়ে আসছে। হরিজনরা সাধারণত সরকারি খাস জমিতে বসবাস করে।

উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মো. তরিকুল ইসলাম জানান, উপজেলার অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য পঞ্চাশোর্ধ্ব ২৯ জনকে মাসিক ৫০০ টাকা হারে ২৯ জনকে ভাতা প্রদান করা হয়। শিশুদের শিক্ষার জন্য ভাতা আসলে দেওয়া হবে।

প্রকাশক ও সম্পাদক : মাহাবুর রহমান আঙ্গুর কর্তৃক মাহাবুব মার্কেট, নিচ তলা (রুম-১৬), বীরগঞ্জ, দিনাজপুর থেকে প্রকাশিত ।
ফোন : +৮৮০৯৬৯৬৫৫৫৭৩৯, বিজ্ঞাপন : ০১৭১৬৫০৮৩১৪, ০১৭৮৩২৫৫৭৩৯, ই-মেইল : info@uttarerkantho.com.

প্রিন্ট করুন