গৃহবধূকে গুলি করে হত্যা : অপরাধীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে থানা ঘেরাও

জেলা প্রতিনিধি, নরসিংদী
প্রকাশের সময়: রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ । ১১:৪৭ অপরাহ্ণ

নরসিংদীর রায়পুরায় গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্বের জেরে শান্তা ইসলাম (২৪) নামের এক গৃহবধূকে গুলি করে হত্যা মামলার প্রধান আসামি জেলা যুবদলের সদস্য সোহেল মিয়া এবং তার সহযোগীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও থানা ঘেরাও করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী। এ সময় বিভিন্ন ফ্যাস্টুন ও ব্যানার হাতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরও অংশগ্রহণ করতে দেখা গেছে।

রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রায়পুরা পৌরসভা মাঠে এ মানববন্ধন করা হয়। পরে পৌরসভার সাবেক মেয়র আব্দুল কুদ্দুসের নেতৃত্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল করা হয়। মিছিলটি রায়পুরা বাজার হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে রায়পুরা থানা প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জের সামনে আসামি গ্রেপ্তারে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন বিক্ষুব্ধ জনতা।

মানববন্ধনে নিহতের স্বামী শাকিল খান ও স্বজনরা বলেন, শান্তা ইসলাম দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিল। গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্বের জেরে সন্ত্রাসী সোহেল বাহিনী তাকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করেছে। ঘটনার ৯ দিন পার হয়ে গেলেও সোহেলকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি প্রশাসন। সে এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরাফেরা করছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তারা। অন্যদিকে, শান্তা হত্যার কয়েক ঘণ্টা যেতে না যেতেই হত্যাকারীরা ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রিয়াজ মোর্শেদ খানের বাড়ি থেকে একটি গরু লুট করে ভূরিভোজ করেছে বলে অভিযোগ করেন নিহতের স্বজনরা।

মামলার বাদী ও নিহতের বাবা আহসান উল্লাহ বলেন, সোহেল ও তার বাহিনী বাড়িঘর লুটপাট করে অন্তঃসত্ত্বা শান্তাকে গুলি করে হত্যা করেছে। শান্তা অনার্স পাস করেছে। কিছুদিন পরই তার অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার কথা ছিল। শান্তাকে যারা গুলি করে হত্যা করেছে তাদের বিচার চাই।

এ বিষয়ে রায়পুরা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মো. আদিল মাহমুদ বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছি শান্তাকে হত্যা করেছে সোহেল। তাকে গ্রেপ্তার করতে রায়পুরা থানা পুলিশের পাশাপাশি র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) ও গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা তৎপর রয়েছে। এ ছাড়া রায়পুরা থানার ১০ জন এসআই ও ৬ জন এএসআই নিয়ে একটি স্পেশাল টিম গঠন করা হয়েছে। সর্বোচ্চ ৭২ ঘণ্টার মধ্যে অপরাধীদের গ্রেপ্তার করার প্রতিশ্রুতি দেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।

তিনি আরও বলেন, দুর্গম চর এলাকা সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য। সারা দেশে অপারেশন ডেভিল হান্টের আওতায় বিশেষ অভিযান চলছে। চর এলাকায় যৌথ অভিযানের জন্য জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে আবেদন করা হচ্ছে। সর্বশেষ র‍্যাব আমাদের সঙ্গে যৌথ অভিযান পরিচালনার জন্য রাজি হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ৭ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) জুমার নামাজের পর রায়পুরার চরাঞ্চলের শ্রীনগর ইউনিয়নে পূর্বশত্রুতার জের ও গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্বে প্রতিপক্ষের অতর্কিত হামলার সময় গুলিতে নিহত হন শান্তা ইসলাম। তিনি ওই এলাকার শাকিল খানের স্ত্রী। ঘটনার এক দিন পর ৮ ফেব্রুয়ারি জেলা যুবদলের সদস্য ও শ্রীনগর এলাকার মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে সোহেল মিয়াকে প্রধান আসামি করে ১৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের বাবা আহসান উল্লাহ।

প্রকাশক ও সম্পাদক : মাহাবুর রহমান আঙ্গুর কর্তৃক মাহাবুব মার্কেট, নিচ তলা (রুম-১৬), বীরগঞ্জ, দিনাজপুর থেকে প্রকাশিত ।
ফোন : +৮৮০৯৬৯৬৫৫৫৭৩৯, বিজ্ঞাপন : ০১৭১৬৫০৮৩১৪, ০১৭৮৩২৫৫৭৩৯, ই-মেইল : info@uttarerkantho.com.

প্রিন্ট করুন