
আজ শহীদ নতুন দিবস। ১৯ মার্চ কুড়িগ্রামের ইতিহাসে একটি শোকাবহ দিন হিসেবে পরিচিত। প্রতিবছরের ন্যায় এবারো শহীদ নতুনের কবরে পুষ্পার্ঘ অর্পন এবং আলোচনা সভার আয়োজন করে শহীদ নতুন স্মৃতি পরিষদ।
১৯৮৭ সালের ১৯ মার্চ কুড়িগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র শহীদ রেজাউল করিম নতূন কে নির্মম নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা করে ততকালীন জামায়াত শিবিরের একদল গুন্ডা বাহিনী।
বর্তমান কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ গেট সংলগ্ন স্থানে তাকে অতর্কিতভাবে পিটিয়ে হত্যার পর ইট দিয়ে মুখ থেতলে দিয়েছিলো সন্ত্রাসীরা। তাকে হত্যার পর ততকালীন ৮০’র দশক ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ নেতারা শহীদ নতুনের লাশ নিয়ে কুড়িগ্রাম শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। পরে নতুনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কুড়িগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে হাজার হাজার মানুষের অংশগ্রহণে তার জানাযা অনুষ্ঠিত হয়।
শহীদ নতুনের হত্যার পর কুড়িগ্রামের সর্বদলীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ জামায়াত শিবিরের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিল। ততকালীন জামায়াত শিবিরের গুন্ডা বাহিনী কুড়িগ্রাম থেকে পালিয়ে গেলেও একটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক মহলের ছত্রছায়ায় তারা আইনের ফাঁকফোকরে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হয়। ফলে নতুন হত্যার সুস্থ বিচার থেকে বঞ্চিত হয় তার পরিবার।
৩৭তম মৃত্যুবার্ষিকীতে কুড়িগ্রাম জেলার আশির দশক ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ নেতা ছানালাল বকসী, অলক সরকার, শহীদ নতুনের মামা ইমদাদুল হক এমদাদ, কমিউনিষ্ট পার্টির নেতা হারুন অর রশিদ লাল, বিশিষ্ট আইনজীবী একুশে পদক এবং স্বাধীনতা পদক প্রাপ্ত এস এম আব্রাহাম লিংকন, কবি ও কমিউনিষ্ট নেতা জোতি আহমেদ, মাজেদ সরকার, দুলাল বোস, এটিএম আমিনুল ইসলাম, নূরল ইসলাম, যুবলীগ নেতা আনিছুর রহমান চাঁদ, রাকিবুজ্জামান রাকিব, তর্পন চৌধুরী, শহীদ নতুনের বড় ভাই সহিদুল ইসলাম সাজু, রিপন সহ ছাত্র ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ শহীদ নতুনের ৩৭ তম মৃত্যুবার্ষিকীতে তার কবরে পুষ্পার্ঘ অর্পন শেষে আলোচনা সভায় অংশ নেন।
এসময় শহীদ নতুনের মামা বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ইমদাদুল হক এমদাদ বলেন শহীদ নতুন তার আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে কুড়িগ্রামের রাজনীতিতে একটি নতুন ধারা সৃষ্টি করে গেছেন। তার মৃত্যুর পরে জামায়াত শিবিরের গুন্ডারা কুড়িগ্রাম জেলার রাজনীতিতে কোণঠাসা হয়ে পরে। এসময় নতুনের মেজো মামা এটিএম আমিনুল ইসলাম বর্তমান প্রজন্মের নিকট শহীদ নতুনের অবদান তুলে ধরার জন্য তার নামে একটি পাঠাগার নির্মানের প্রস্তাব তুলে ধরেন।
আলোচনা সভায় বক্তারা শহীদ নতুনের স্মৃতি সংরক্ষনে তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কুড়িগ্রাম সরাকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে একটি স্মৃতি ফলক করার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষে নেয়ার আশ্বাস দেন।
উত্তরের কণ্ঠ/পিআর/এম জি রাব্বুল ইসলাম পাপ্পু