হবিগঞ্জে পানি বাড়ছে, জনদুর্ভোগ চরমে

জেলা প্রতিনিধি, হবিগঞ্জ
প্রকাশের সময়: বুধবার, ১৯ জুন, ২০২৪ । ৮:১৬ অপরাহ্ণ

হবিগঞ্জের খোয়াই, কুশিয়ারা ও কালনীসহ সব নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুশিয়ারা নদীর বাঁধ উপচে নবীগঞ্জ উপজেলার ১০-১২টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। হবিগঞ্জ সদর উপজেলার জালালাবাদ গ্রামে খোয়াই নদীর বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়েছে।

টানা বর্ষণে হবিগঞ্জ শহরের বেশ কিছু এলাকা ডুবে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড, সার্কিট হাউস, অনন্তপুর, মাহমুদাবাদ, শ্যামলী, চৌধুরী বাজারসহ অনেক এলাকার লোকজন পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা করছেন হবিগঞ্জের মানুষ।

হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম হাসনাইন মাহমুদ জানান, বৃষ্টির পাশাপাশি ভারত থেকে আসা পানির জন্য খোয়াই, কুশিয়ারা, কালনী, সুতাং, করাঙ্গী নদীসহ হাওরে পানি বাড়ছে। বুধবার সকাল ৯টায় খোয়াই নদীর পানি চুনারুঘাটের বাল্লা সীমান্তে বিপৎসীমার ১৩১ সেন্টিমিটার, শায়েস্তাগঞ্জে ২১ সেন্টিমিটার এবং হবিগঞ্জ শহরের মাছুলিয়া পয়েন্টে ৭৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুশিয়ারা নদীর শেরপুর পয়েন্টে বিপৎসীমার ১২ সেন্টিমিটার এবং মার্কুলী পয়েন্টে ২১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কালনী-কুশিয়ারা নদীর আজমিরীগঞ্জে ৩১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

তিনি জানান, মঙ্গলবার জেলায় ১১৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বুধবারও প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে। ভারত থেকেও পানি আসছে। নদীর বাঁধ রক্ষায় ৪ হাজার ব্যাগ জিও ও ১২ হাজার সিনথেটিক ব্যাগ মজুত করা হয়েছে।

এদিকে, নবীগঞ্জ উপজেলার দীঘলবাক এলাকায় কুশিয়ারা নদীর পানি বেড়ে কুশিয়ারা ডাইক উপচে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়েছে। এতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে আহমদপুর, দূর্গাপুর, কুমার কাদা, পাহারপুর গ্রাম। লোকজন বালি ভর্তি বস্তা ফেলে পানি আটকানোর চেষ্টা করছেন।

হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক জিলুফা সুলতানা জানান, সম্ভাব্য বন্যা মোকাবিলায় ১৭১ টন চাল, ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা ও ৭৮ বান্ডিল টিন মজুত রাখা হয়েছে। এছাড়া ৪২০ মেট্রিক টন চাল ৯ উপজেলায় পাঠানো হয়েছে। জেলায় এ পর্যন্ত  ৮৮টি আশ্রয়কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। প্রয়োজনে আরও আশ্রয়কেন্দ্র বাড়ানো হবে।

খোয়াই নদীর বাঁধে ভাঙন
হবিগঞ্জে খোয়াই নদীর বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। বুধবার দুপুরে শহরতলীর জালালাবাদে নদীর বাঁধে হঠাৎ ভাঙন দেখা দেয়। ফলে প্রবল বেগে নদীর পানি জালালাবাদসহ আশপাশের এলাকায় প্রবেশ করছে। সকাল থেকেই খোয়াই, কুশিয়ারা, কালনী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম হাসনাইন মাহমুদ জানান, দুপুর ১টার দিকে খোয়াই নদীর বাল্লা পয়েন্টে পানি কমতে শুরু করেছে। খুব দ্রুতই পানি নিচে নেমে যাবে। তিনি বলেন, শহরের গরুর বাজারের পরের অংশটিকে আমরা বলি ফসলরক্ষা বাঁধ। যদি বর্ষা মৌসুমে এসব বাঁধ না ভাঙে, তাহলে শহর রক্ষা বাঁধের দুর্বল অংশ ভেঙে পানি শহরে প্রবেশ করতে পারে। তাই শহরকে রক্ষার স্বার্থেই আসলে এসব অংশের ভাঙন দিয়ে পানি ছাড়তে হয়। এছাড়া এখন আসলে হাওরে পানিও প্রয়োজন। নদীর পানি ভাটিতে হাওরে প্রবেশ করবে এটিই স্বাভাবিক। এসব ভাঙন আবার ফসল রক্ষার জন্য বর্ষার পর সংস্কার করা হবে। এটি নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।

প্রকাশক ও সম্পাদক : মাহাবুর রহমান আঙ্গুর কর্তৃক মাহাবুব মার্কেট, নিচ তলা (রুম-১৬), বীরগঞ্জ, দিনাজপুর থেকে প্রকাশিত ।
ফোন : +৮৮০৯৬৯৬৫৫৫৭৩৯, বিজ্ঞাপন : ০১৭১৬৫০৮৩১৪, ০১৭৮৩২৫৫৭৩৯, ই-মেইল : info@uttarerkantho.com.

প্রিন্ট করুন