জাতিসংঘকে অবশ্যই উদাহরণ সৃষ্টি করতে হবে নারীদের নেতৃত্বে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ (বুধবার) বলেছেন, নারীদের জীবনে ইতিবাচক সিদ্বান্ত গ্রহণে প্রভাব ফেলতে তাদের অবশ্যই নেতৃত্বের অবস্থানে থাকতে হবে।
তিনি বলেন. “আমাদের কর্মকান্ডকে অংশগ্রহণ থেকে নেতৃত্বে উন্নীত করতে হবে এবং নেতৃত্বের ক্ষেত্রে জাতিসংঘকে অবশ্যই উদাহরণ সৃষ্টি করতে হবে। এটা দুঃখজনক যে জাতিসংঘের মহাসচিব হিসেবে এখন পর্যন্ত কোনো নারীকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। সময় এসেছে, আমরা শিগগিরই একজনকে পাবো।”
তিনি জাতিসংঘ সদর দপ্তরে প্রতিনিধি ডাইনিং রুমে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৮তম অধিবেশনের ফাঁকে ইউএনজিএ প্ল্যাটফর্ম অব উইমেন লিডারদের বার্ষিক সভায় বক্তব্য রাখছিলেন।
নেতা হিসাবে, আমাদের তাদের সাথে জড়িত থাকতে হবে এবং তাদের এই বিষয়ে সাহসী উদ্যোগ নিতে উৎসাহিত করতে হবে।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি দেশ আলাদা এবং তাদের ভিন্ন চ্যালেঞ্জ এবং সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ভিন্নতা রয়েছে। তিনি যোগ করেন, তবে, সবাই যেহেতু ঐতিহাসিক এজেন্ডা ২০৩০ গ্রহণ করেছে সেহেতু তাদের লিঙ্গ সমতা অর্জনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকা উচিত।
ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম (সিভিএফ)-এর থিম্যাটিক অ্যাম্বাসেডর সায়মা ওয়াজেদ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
“সুতরাং আমরা আমাদের সমগ্র মানব সম্পদ পুঁজিকে কাজে লাগানোর এবং একটি সমৃদ্ধ দেশ গঠনে আমাদের সমান অংশীদার হিসেবে নারীদের অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
তিনি উল্লেখ করেন, মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি ও বিনামূল্যে বই দেওয়ার পাশাপাশি দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত মেয়েদের শিক্ষা অবৈতনিক করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা নিশ্চিত করেছেন যে প্রাথমিক স্তরের ৬০ শতাংশ স্কুল শিক্ষক মহিলা এবং দেশের তৈরি পোশাক শিল্পে ৪০ লাখেরও বেশি মহিলা কর্মরত রয়েছে।
তিনি বলেন, “আমরা নারী উদ্যোক্তাদেরকে উৎসাহিত করতে এবং তাদের অর্থায়নে সহায়তা করার জন্য নির্দিষ্ট নীতিগত পদক্ষেপ নিয়েছি। আমরা নারী উদ্যোক্তাদের জন্য রেয়াতি হারে ঋণ নিশ্চিত করেছি।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাজনৈতিক ক্ষেত্রে, সরকারের শীর্ষ থেকে সর্বনিম্ন স্তর পর্যন্ত সকল স্তরে নারীদের প্রতিনিধিত্ব রয়েছে।’’ নারীরা এখন সর্বোচ্চ আদালতের বিচারক, রাষ্ট্রদূত, বেসামরিক প্রশাসনের উচ্চ পদে আসীন, সশস্ত্র বাহিনী, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ইত্যাদি হচ্ছেন। তাঁর সরকার ব্যবসায়িক উদ্যোগে নারীদের প্রচার ও সহায়তার জন্য জয়িতা ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেছে এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানে উচ্চ পদে আসীন হওয়ার ক্ষেত্রে নারীদের জন্য দুয়ার অবারিত করেছে।
তিনি বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হল প্রযুক্তিগত স্টার্ট আপ এবং ই-কমার্স সেক্টরসহ আইসিটি সেক্টরে লিঙ্গ সমতা অর্জন করা। আমরা জেন্ডার-সংবেদনশীল বাজেট প্রবর্তনকারী প্রথম দেশগুলোর অন্যতম। আমাদের বাজেটের ত্রিশ শতাংশ নারী উন্নয়ন কর্মকা-ের জন্য বরাদ্দ করা হয়।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের নারীরাও স্থিতিশীলতা অর্জনে অব্যাহত প্রচেষ্টার অবিচ্ছেদ্য অংশ।
তিনি বলেন, “আমাদের লিঙ্গ-সমতা ভিত্তিক দুর্যোগ মোকাবিলা পরিকল্পনা বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি অর্জন করেছে। নারী উন্নয়নে আমাদের বিনিয়োগ আমাদের লভ্যাংশ দিয়েছে। আজ, জিডিপিতে নারীর অবদান ৩৪ শতাংশে পৌঁছেছে।
আপনার মতামত লিখুন