বলছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নৌবাহিনী
ছিনতাই করা জাহাজে চড়েই বাংলাদেশি জাহাজে হামলা সোমালি দস্যুদের

জলদস্যুর কবলে পড়া বাংলাদেশি মালিকানাধীন জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ
ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে পড়েছে বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ। জাহাজটি কয়লা নিয়ে আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিক থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) দুবাইয়ের দিকে যাচ্ছিল।
এরপর কেটে গেছে তিনদিন। যতই সময় যাচ্ছে, এই দস্যুতার ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য মিলছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের নৌবাহিনী বলছে, আগে ছিনতাই হওয়া একটি জাহাজ ব্যবহার করেই বাংলাদেশি জাহাজে হামলা ও পরে জিম্মি করে সোমালিয়ার দস্যুরা।
শুক্রবার (১৫ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
সোমালি জলদস্যুরা ২০১৮ সাল পর্যন্ত এক দশক ধরে গুরুত্বপূর্ণ বৈশ্বিক জলপথে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে রেখেছিল। এরপর তাদের কার্যক্রম কিছুটা স্তিমিত হয়ে পড়লেও গত বছরের শেষের দিকে তাদের আক্রমণ আবারও বাড়তে শুরু করে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের জলদস্যুতা বিরোধী অভিযান ইউন্যাভফর (EUNAVFOR)-এর তথ্য অনুযায়ী, হামলার সময় অন্তত ১২ জন অভিযুক্ত জলদস্যু বাংলাদেশি জাহাজ আবদুল্লাহর ওপরে উঠে পড়েছিল বলে ভিজ্যুয়াল তথ্যে দেখা গেছে।
ইউন্যাভফর বলছে, আবদুল্লাহর ক্রুরা নিরাপদ আছে বলেও জানা গেছে।
অন্যদিকে ব্রিটিশ মেরিটাইম সিকিউরিটি ফার্ম অ্যামব্রে বৃহস্পতিবার বলেছে, ‘সন্দেহ করা হচ্ছিল, অন্যান্য বাণিজ্যিক জাহাজে আরও হামলা চালানোর জন্য মাদারশিপ হিসাবে এমভি রুয়েন জাহাজটিকে ব্যবহার করা হতে পারে’।
অ্যাম্ব্রে অনুসারে, রুয়েনকে সোমালিয়ার ইয়েলের ১৬০ নটিক্যাল মাইল (২৯৬ কিমি) দক্ষিণ-পূর্বে পূর্ব দিকে যাত্রা করতে দেখা গেছে। সংস্থাটি এলাকার অন্যান্য জাহাজকে সতর্কতা বাড়ানোর পরামর্শও দিয়েছে।
রয়টার্স বলছে, ২০১৭ সাল থেকে আন্তর্জাতিক নৌবাহিনীর ব্যাপক তৎপরতার কারণে এডেন উপসাগর এবং ভারত মহাসাগরে ছিনতাই বন্ধ করে দেয় সোমালি জলদস্যুরা। এরপর থেকে গত বছরের ডিসেম্বরে মাল্টিজ-পতাকাবাহী বাল্ক কার্গো জাহাজ এমভি রুয়েন হাইজ্যাক করাই ছিল তাদের প্রথম সফল ছিনতাই।
সেই ঘটনার পর কয়েক মাস পার হলেও রুয়েনের অপহৃত ক্রুদের মুক্তিপণ পরিশোধ করা হয়নি বলে অ্যামব্রে জানিয়েছে। মিডিয়া রিপোর্ট বলছে, জলদস্যুরা চিকিৎসার কারণে একজনকে ছেড়ে দিলেও ১৭ জন ক্রুকে এখনও ধরে রেখেছে।
মেরিটাইম সিকিউরিটি সেন্টার – হর্ন অব আফ্রিকা, ইউন্যাভফর এর পরিকল্পনা ও সমন্বয় কেন্দ্র থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা যাচ্ছে, গত বছরের নভেম্বর থেকে এডেন উপসাগর এবং সোমালি উপকূলের চারপাশে ২০ টিরও বেশি হাইজ্যাকিং বা জাহাজ হাইজ্যাক করার চেষ্টা করা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন