যুদ্ধবিরতির নতুন প্রস্তাব পেশ হামাসের

গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতির নতুন একটি প্রস্তাব পেশ করেছে উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাস। প্রস্তাবটির খসড়া অনুলিপি ইতোমধ্যে ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা এবং যুদ্ধের তিন মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার, মিসর এবং যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের কাছে পাঠানোও হয়েছে।
আরও বলা হয়েছে, যদি এই যুদ্ধবিরতি সফল হয়— তাহলে উভয়পক্ষ স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আলোচনা শুরু করবে।
মধ্যস্থতাকারী দুই দেশ কাতার ও মিসরের কর্মকর্তারা হামাসের প্রস্তাব সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করতে চাননি। তবে রয়টার্সকে তারা বলেছেন, হামাস ও ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা— উভয়পক্ষের মধ্যকার যাবতীয় মতবিরোধ সর্বনিম্ন পর্যায়ে নামিয়ে আনার চেষ্টা করছেন তারা এবং এই প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
তবে সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিল হামাস-ইসরায়েল উভয়ই। প্রত্যাখানের কারণ হিসেবে হামাসের মুখপাত্ররা বলেছিলেন, ইসরায়েল যদি যুদ্ধবিরতির চল্লিশ দিন গাজা উপত্যকা থেকে তার সেনাদের সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করে, তাহালে চুক্তিতে স্বাক্ষর করবে তারা।
অন্যদিকে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানের প্রধান লক্ষ্য হলো হামাসকে চিরতরে নির্মূল করা; তাই এমন কোনো শর্ত তারা অনুমোদন করবে না যা এই লক্ষ্যের পথে বাধা সৃষ্টি করে।
গত কাল প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর দপ্তর থেকে বিবৃতি দেওয়ার কিছু সময় পর পৃথক এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের জন্য রমজান একটি পবিত্র মাস। বিগত বছর গুলোর মতে এ বছরও এই মাসের পবিত্রতা অক্ষুন্ন রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে ইসরায়েল।’
প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ইরেজ সীমান্তে অতর্কিত হামলা চালিয়ে সামরিক-বেসামরিক ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিকসহ ১ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করে গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। সেই সঙ্গে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় আরও ২৪০ জন ইসরায়েলি এবং অন্যান্য দেশের নাগরিককে।
১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর গত ৭৫ বছরের ইতিহাসে সেদিন প্রথম একদিনে এতজন মানুষের হত্যা দেখেছে ইসরায়েল। অভূতপূর্ব সেই হামলার জবাবে সেদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী এবং তার এক সপ্তাহ পর বিমান বাহিনীর সঙ্গে যোগ দেয় স্থল বাহিনীও।
অভিযানে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৩১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি, আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৭৩ হাজার। নিহত ও আহতদের মধ্যে একটি বড় অংশই নারী, শিশু, কিশোর-কিশোরী এবং বেসামরিক লোকজন।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ব্যাপক প্রচেষ্টায় গত ২৫ নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মানবিক বিরতি ঘোষিত হয়েছিল গাজায়। সে সময় ১০৮ জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। তার পরিবর্তে বিভিন্ন কারাগারে বন্দি ১৫০ জন ফিলিস্তিনিকে ছেড়ে দিয়েছে ইসরায়েলও।
হিসেব অনুযায়ী, এখনও ১৩২ জন জিম্মি রয়েছেন হামাসের কব্জায়।
সূত্র : রয়টার্স
আপনার মতামত লিখুন