শরীরডা পুইড়া যায়’

প্রচণ্ড তাপদাহে পুড়ছে প্রায় গোটা দেশ। ফুটপাত ও রাস্তায় জীবিকা নির্বাহ করে যারা সংসার চালান তাদের কষ্টটা বেশি। হকার, রিকশাচালক, বাসচালক ও সহকারীসহ খোলা আকাশের নিচে কাজ করা শ্রমজীবীরা প্রখর তাপে বেশিই বিপর্যস্ত।
শনিবার (২৭ এপ্রিল) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
কথা হয় ফুটপাতে শসা-গাজর বিক্রেতা খলিলের সঙ্গে। রাজধানীতে ফেরি করে এসব বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন মধ্যবয়সী এই হকার। ঘুরে ঘুরে ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করেন এই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘মামা রোদে শরীরডা পুইড়া যায়। কি করুম। সংসারও চালাইতে অইবো।’
‘আজ সাপ্তাহিক ছটি ও গরম দুটো মিলে বাসের যাত্রী কম। প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হচ্ছেন না রাজধানীবাসী। গরমে সবাই হাঁসফাঁস করছেন। বাসেও উঠছেন না,’ বলেন বিটিআরসি বাসের চালকের সহকারী রহিম।
বাসে যাত্রী কম উঠায় আগের তুলনায় ভাড়াও আদায় কম হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
তবে কয়েকগুণ বেশি যাত্রী চলাচল করছেন মেট্রোরেলে। মেট্রো শীততাপ নিয়ন্ত্রিত হওয়ায় অতি গরমেও ঠাসাঠাসি করে যাতায়াত করছেন তারা।
নওগাঁ থেকে এসে ঢাকায় রিকশা চালান জাহাঙ্গীর। থাকেন তেজগাঁওয়ের বেগুন বাড়ি বস্তিতে। সারাদিন রিকশা চালিয়ে তার রোজগার হয় ৭০০ টাকা। গরমে পুরো দিন রিকশার প্যাডেল টানতে পারেন না। অর্ধবেলা গাড়ি টেনে ইনকাম করেন ৩/৪ শত টাকা।
তিনি ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘গরমে গাড়ি টানা যায় না মামা। বার বার পানি খাই। পানি শরীরে থাকে না। বের হয়ে যায়। কি করমু। তারপরও গাড়ি চালাই। পেটে ভাত দিতে অইবো তো।’
প্রসঙ্গত, ঢাকাসহ দেশের ৪৫টির বেশি জেলায় তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। একইসাথে, দিনের গড় তাপমাত্রা কয়েক ডিগ্রি বেড়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। ফলে তীব্র গরম অনুভূত হওয়ায় সারাদেশেই জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। অতি গরমে মানুষের সচেতনতা বাড়াতে টানা তিনবার হিট অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অধিদফতর।
ছুটি শেষে আগামীকাল রোববার খোলা কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। তবে প্রাক-প্রাথমিক বন্ধই থাকছে অতি গরমে। কবে নাগাদ এই তাপদাহ ইতি টানবে এবং জনজীবনে স্বস্তি ফিরে আসবে সেটাই সবার প্রশ্ন।
আপনার মতামত লিখুন