‘সব কিছুতেই আগুন জ্বলা দাম, আর পেরে উঠছি না’

বাজারে এলেই ঘাম ছুটে যায়। সব কিছুতেই আগুন জ্বলা দাম! যে জিনিসের মূল্য জিজ্ঞেস করি, সেটারই দাম বাড়তি। সবকিছুর দাম বৃদ্ধিতে নিজের সামান্য আয় দিয়ে আর পেরে উঠছি না। এভাবে কী চলা যায়?
প্রতিনিয়ত দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির এমন অভিযোগ শুধু রবিউল ইসলামেরই নয়, বেসরকারি চাকরিজীবী আব্দুল হামিদেরও একই অভিযোগ। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘যেভাবে সবকিছুর দাম বাড়ছে, তাতে আমাদের মতো মানুষদের কিছুই কিনে খাবার উপায় নেই।’
এছাড়াও বাজারে প্রতি পিস ফুলকপির দাম ৬০ টাকা, বাঁধা কপি ৬০ টাকা ও লাউ ৬০ থেকে ৮০ টাকা পিস, প্রতি কেজি গাজর ৭০ টাকা, পেঁপে ৮০ টাকা, টমেটো ৫০ থেকে ৬০ টাকা, আলু ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা কেজি করে।
বাজার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবারকে কেন্দ্র করে সব ধরনের পণ্যেই কিছুটা বাড়তি উত্তাপ থাকে। চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষও এখন একদিনেই সপ্তাহের বাজার করে কিছুটা নিশ্চিন্তে থাকতে চান। তাই শুক্রবারকেন্দ্রিক মানুষের এই চাহিদাকে ঘিরে প্রায় প্রতিটি পণ্যেরই দাম বেড়ে যায় কেজিপ্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত।
বাজার করতে আসা নাঈম আহমেদ নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, বন্ধুরা মিলে একসঙ্গে থাকি, শুক্রবারেই সব বাজার করে ফেলার চেষ্টা করি। কিন্তু এখন দেখি যে অন্যান্য দিনের তুলনায় এই দিন বাজার থাকে বেশি চড়া। প্রতিটি জিনিসের দাম ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে যায়। অন্যান্য দিনে কম থাকবে আর শুক্রবার বেড়ে যাবে, এটা কেমন কথা? এই দিন কি বাজারে সবজি কম থাকে?
মাহমুদা আক্তার আরেক ক্রেতা বলেন, আমাদের স্বল্প বেতনে প্রতিদিন মাছ বা মাংস খাওয়া যায় না। কিন্তু সবজির দামও যদি এমন বাড়তি যায়, তাহলে এটা খাওয়াও কমিয়ে দিতে হবে।
এদিকে সবজির দাম বাড়তি প্রসঙ্গে বিক্রেতা সায়েদুল ইসলাম বলেন, বাজারে সবজির সরবরাহ কমে যাওয়ায় দামটা একটু বাড়তি। গরম কমলে সামনে দাম কিছুটা কমতে পারে। তাছাড়া কিছু জিনিসের দাম শুক্রবার এলে এমনিতেই বেড়ে যায়। যেমন, শসা অন্যান্য দিনে ৩০-৪০ টাকা বিক্রি করি, কিন্তু শুক্রবারে ৫০-৫৫ টাকা বিক্রি করি। গাজরের চাহিদাও বাড়ে, যেকারণে দামটাও বাড়ে।
আরেক সবজি বিক্রেতা মো. কবির হোসেন বলেন, গত কিছুদিন ধরে সারা দেশেই গরমটা একটু বেশি পড়তেছে। প্রচণ্ড রোদের কারণে অনেক কৃষকের সবজি নষ্ট হয়েছে, তাই সব সবজির দামটা একটু বেড়ে গেছে। আমরা যে ইচ্ছাকৃতভাবে বেশি দামে বিক্রি করি বিষয়টা এরকম নয়।
তিনি আরও বলেন, শুক্রবারে প্রায় অধিকাংশ মানুষ পুরো সপ্তাহের বাজার করে ফেলে। যে কারণে চাহিদা থাকে অনেক বেশি। অন্য দিনগুলোতে সারাদিনে যা বিক্রি করি শুক্রবার এলে সকালের দিকেই সেই পরিমাণ বিক্রি হয়ে যায়। দামটা যদি আর একটু কম থাকতো তাহলে হয়তো বিক্রি আরও বেশি হতো।
আপনার মতামত লিখুন