কান্না সামলানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন অ্যান্ডারসন

সাদা পোশাকের ক্রিকেটে বর্ণিল এক ক্যারিয়ার জেমস অ্যান্ডারসনের। ইংল্যান্ডের টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে সফলতম বোলার হিসেবে অবসরে যাচ্চঘেন তিনি। আগামী বুধবার শুরু হতে যাওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টই তাঁর শেষ ম্যাচ। ২১ বছর আগে লর্ডসে দীর্ঘতম সংস্করণে অভিষেক হয়েছিল, সেই একই ভেন্যুতে খেলেই তিন সফল এক ক্যারিয়াকে বিদায় জানাবেন তিনি।
ওয়েস্ট ন্ডিজের বিপক্ষে এই টেস্টটি হতে চলেছে অ্যান্ডারসনের ১৮৮তম টেস্ট। সাদা পোশাকে তাঁর চেয়ে বেশি খেলেছেন কেবল ভারতের শচীন টেন্ডুলকার। ৪২ বছর বয়সী ইংলিশ এই পেসার হয়তো আরও কিছুদিন চালিয়ে যেতে পারতেন, কিন্তু নতুনদের জায়গা করে দিতে এবং দলের চাহিদার কারণেই বিদায় জানাতে হচ্ছে তাকে।
ক্রিকেট ইতিহাসের তৃতীয় বোলার এবং একমাত্র পেসার হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে ৭০০ উইকেট নেয়ার মাইলফলক গড়েছেন অ্যান্ডারসন। সবশেষ প্রথম শ্রেনীর ম্যাচেও তিনি এক ইনিংসে নিয়েছেন ৭ উইকেট। ৪২ বছিওর বয়সে এসেও ফর্মের চূড়াতেই আছেন তিনি। তবে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন চক্রকে সামনে রেখে নতুন করে দল সাজাতে চায় ইংল্যান্ড ক্রিকেট।
এই পরিকল্পনার কথাই অ্যান্ডারসনকে জানিয়েছিলেন ইংল্যান্ড ক্রিকেটের তিন বড় কর্তা। তবে তাদের এমন পরিকল্পনার কথা জানতে পেরে ইংলিশ এই পেসার অবাক হননি বলেই জানিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘আমি বলব না যে অবাক হওয়ার মতো ঘটনা ছিল এটি। বড় তিন যখন আমাকে ম্যানচেস্টারের এক হোটেলে কথা বলতে ডাকল, আমি মনে করিনি যে এটা সাধারণ কোনো বিষয়। এমন কিছু যে হতে যাচ্ছে সেটি ধারণা করেছিলাম। বরং তাঁরাই আমাকে শান্ত থাকতে দেখে অবাক হয়েছিল।’
নিজের আচরণে নিজেই অবাক হয়েছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার মনে আমি নিজেও নিজের আচরণে অবাক হয়েছিলাম। আমি আবেগাপ্লুত হইনি, রেগে যাইনি, এমনকি কিছুই করিনি।’
টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানাবার আগে তাঁর কোনো কোষ্ট নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গি জানলাম, তাঁরা যে আমাকে তাঁদের পরিকল্পনা ও কারণগুলো আমাকে বিস্তারিত জানালেন, সে কারণে তাঁদের প্রশংসাও করি। আমি বিষয়টি মেনে নিই, সিদ্ধান্তটি নিয়ে আমার কোনো মনঃকষ্টও নেই।’
তবে নিজের শেষ টেস্টে খেলতে নেমে দলের হয়ে অবদান রাখতে চান বলেই জানিয়েছেন ইংলিশ এই পেসার। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় আমি এখনো সারা জীবন যেভাবে বোলিং করেছি, সেভাবেই এখনো বোলিং করছি। তবে আমি জানতাম আজ না হোক, দুই বছর পরে হলেও একদিন থামতেই হবে। এই সপ্তাহে অল্প কিছু অবদান রাখতে পারলেই আমি খুশি থাকব। ১ উইকেট নিয়ে কিংবা সংখ্যাটা যা-ই হোক না কেন, আমি সামান্য অবদান রেখে হলেও ম্যাচটি জিততে চাই।’
২১ বছরের দীর্ঘ ক্যারিয়া শেষ করতে নেমে আবেগ তো নাড়া দিয়েই যেতে পারে অ্যান্ডারসনকে। ইংলিশ এই পেসার নিজেও জানেন এ কথা। তাই তো তিনি এখন প্রস্তুতি নিচ্ছেন কান্না সামলানোর। তিনি বলেন, ‘আমি নিশ্চিত এই সপ্তাহে আবেগে পরিবর্তন আসবেই, তবে আমি এখন চেষ্টা করছি কীভাবে কান্না সামলানো যায়, সেই বিষয়ে মনোযোগী হতে।’
আপনার মতামত লিখুন