খুঁজুন
শুক্রবার, ২৩শে মে, ২০২৫, ৯ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে আওয়ামী লীগের নেতারা

হাসিনার পতনে দায়ী ‘গ্যাং অব ফোর’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২২ আগস্ট, ২০২৪, ১১:৫১ অপরাহ্ণ
হাসিনার পতনে দায়ী ‘গ্যাং অব ফোর’

গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা | ফাইল ছবি

‌‌‘‘আমি আপনার সঙ্গে দেখা করতে পারবো না’’; ‘‘আমি আত্মগোপনে আছি, আপনার সাথে ফোনে কথা বলতে পারি’’; ‘‘আমি নিরাপদ কোনও স্থানে আপনার সাথে দেখা করার চেষ্টা করবো’’; ‘‘আপনার গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হবে, যে কারণে আমি আপনার সাথে দেখা করতে পারবো কি না জানি না।’’

ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার মন্ত্রীসহ আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা ও পূর্ববর্তী সরকারের সাথে সংশ্লিষ্ট অ্যাকটিভিস্টদের কাছ থেকে এসব বার্তা পেয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস। গত এক সপ্তাহ ধরে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সাংবাদিক শুভজিত রায় বাংলাদেশের অজ্ঞাত কিছু স্থানে তাদের কয়েকজনের সাথে দেখা করেছেন এবং বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীসহ বিরোধী দলগুলোর প্রতিশোধের ভয়ে আত্মগোপনে থাকা এসব ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেছেন।

তাদের সবাই প্রায় একটি কথা বলেছেন, ‘‘হাসিনা দল ও জনগণকে ত্যাগ করেছেন।’’ আওয়ামী লীগের এক নেতা শেখ হাসিনার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘‘আপা আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন।’’

নেতাকর্মীদের রেখে চলে যাওয়ার এই একই অনুভূতি আরও অনেকে শেয়ার করেছেন। যারা ৫ আগস্টের ঘটনাপ্রবাহ সম্পর্কে আগে কোনও আঁচই পাননি। সেই দিন শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেন এবং তার বোন শেখ রেহানাসহ দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় যুক্তরাষ্ট্রে এবং মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ বর্তমানে ভারতে রয়েছেন।

আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র বলেছে, শেখ হাসিনার দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত তার মন্ত্রিসভা, এমনকি তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীদেরও ‘‘একেবারে বিস্মিত’’ করেছে। আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেছেন, ‘‘আমরা তার দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার বিষয়ে টেলিভিশন থেকে জানতে পেরেছি।’’

শেখ হাসিনার এভাবে দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত তাদের জীবনকে বিপদে ফেলেছে এবং বিক্ষুব্ধ জনতা—বিক্ষোভকারী, রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর কর্মী এবং সুযোগসন্ধানীরা আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং পার্টি অফিসগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করছে। তারা সেগুলো জ্বালিয়ে দিচ্ছে, ভাঙচুর করছে, লুটপাট করছে।

আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেন, ‘‘আমরা ঠিক সময়েই আমাদের বাড়ি থেকে বের হতে পেরেছিলাম, যখন সেনাপ্রধান বিকেল ৩টার দিকে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিচ্ছিলেন এবং লোকজন টিভি পর্দায় নজর রাখছিল।’’

আরেক নেতা, যিনি শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন তিনি বলেন, ‘‘ধরা পড়লে আমার পরিবার ও আমাকে পিটিয়ে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হতো।’’

আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে বিরোধীদলের নেতারা শেখ হাসিনা সরকারের লক্ষ্যবস্তু হয়েছেন। তাদের জেলে ভরানো হয়েছে, মারধর, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও হয়রানি করা হয়েছে। কিন্তু হঠাৎ করে পরিস্থিতি বদলে যায়।

সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহের দিকে ফিরে তাকালে দেখা যায় কেউ কেউ বিশেষ করে জুলাই মাসে ছাত্র ও বিক্ষোভকারীদের ওপর যখন গুলি চালানো হয় এবং তারপর ৩-৪ আগস্ট লোকজন রাস্তায় নেমে আসেন, তখন দুঃখ প্রকাশ করেছেন। বিক্ষোভকারীরা ৫ আগস্ট, যেদিন সরকার পতন হয়েছিল সেদিন কারফিউ ভাঙেন।

সরকারের পতনের ঘটনায় আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ একটি গোষ্ঠীকে দায়ী করে একজন নেতা বলেন, ‘‘তিনি (শেখ হাসিনা) আমাদের কথা শোনা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। নেতাদের একজন এই গোষ্ঠীকে ‘‘দ্য গ্যাং অব ফোর’’—বলে অভিহিত করেছেন। যারা তাকে (শেখ হাসিনা) মাঠের বাস্তব অবস্থা থেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

এই গ্যাং অব ফোর হলেন, শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান রহমান, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। আওয়ামী লীগের ওই নেতা বলেন, ‘‘এই গ্যাং অব ফোরই তার পতনে নেতৃত্ব দিয়েছেন। আর এই চারজনের প্রতি শেখ হাসিনার অন্ধ বিশ্বাস ছিল এবং অতীতে তার যে রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ছিল, তা তাদের কারণেই হারিয়েছেন।’’

চলতি বছরের জানুয়ারিতে বিএনপিকে নির্বাচনে না আনাকে শেখ হাসিনার ‘‘বড় ভুল’’ হিসেবে বর্ণনা করা হচ্ছে। একাধিক সূত্র বলেছে, আওয়ামী লীগের কিছু নেতা লন্ডনে বিএনপি নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমানের সাথে মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে যোগাযোগ করেছিলেন।

একটি সূত্র বলেছে, বিএনপিকে নির্বাচনে আনার বিষয়ে একটি ব্যাকচ্যানেলের মাধ্যমে প্রস্তাবও করা হয়েছিল। আমরা ২০২৪ সালের জানুয়ারির নির্বাচনের এক বছর আগে ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে তারেকের সাথে ওই চ্যানেলটি প্রতিষ্ঠা করার কথা ভেবেছিলাম। কিন্তু শেখ হাসিনা এই প্রস্তাবে সবুজ সংকেত দেননি।

আওয়ামী লীগের একজন নেতার মতে, বিএনপির প্রধানের ছেলের সাথে যোগাযোগ রক্ষার বিষয়টিতে অস্বীকৃতি জানানোই ছিল শেখ হাসিনার জন্য বড় ভুল। কেননা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনে আনার জন্য বিএনপিকে প্রস্তুত করা হলে তা বিরোধীদের ক্ষোভ ও অভিযোগকে লাঘব করতো।

ওই নেতা বলেন, ‘‘আমরা দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, পুলিশি নির্যাতনের কারণে জনগণের মাঝে তৈরি হওয়া ক্ষোভের বিষয়টি আঁচ করতে পেরেছিলাম… এবং নির্বাচনের জন্য বিএনপিকে বোর্ডে আনা গেলে সেই ক্ষোভ থেমে যেত। সেটি করা হলে আমরা জিততে পারতাম এবং দলকে ক্ষমতায় রাখতে পারতাম।’’

তিনি বলেন, বিশেষ করে ২০২৪ সালের জানুয়ারির নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর শেখ হাসিনা অনেক বেশি একগুঁয়ে হয়ে ওঠেন এবং কারও পরামর্শ কর্ণপাত করেননি বলে নেতাকর্মীরা মনে করেন। টানা চতুর্থ জয়ের পর তিনি অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠেন এবং কোটা সংস্কার ঘিরে শুরু হওয়া প্রতিবাদ-বিক্ষোভে জনগণের ক্ষোভের মাত্রা বুঝতে ব্যর্থ হন তিনি।

সূত্রগুলো বলেছে, জুলাইয়ের শুরুতে বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের সাথে বসার জন্য কৌশলে কিছু নেতা শেখ হাসিনাকে আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। পুলিশের গোয়েন্দা শাখার জুলাই মাসে বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রদের তুলে নিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও জোরপূর্বক আন্দোলন প্রত্যাহারের প্রতিশ্রুতি নিয়ে তাদের ছেড়ে দেওয়ার ঘটনা শেখ হাসিনার সরকারের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেয়।

এই কৌশল হিতে বিপরীত হয়ে দাঁড়ায় এবং কীভাবে জোরপূর্বক আন্দোলন প্রত্যাহারে বাধ্য করা হয়েছিল শিক্ষার্থীরা তা প্রকাশ করেন। এর পরপরই কিছু ঘটনা ঘটে, যার ফলে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন শেখ হাসিনা। প্রাণের ভয়ে আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী ও বুদ্ধিজীবী দেশের বিভিন্ন সেনানিবাসে আশ্রয় নেন।

এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জানায়, ২৬ জন রাজনীতিক নেতাসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার ৬২৬ জনকে সারা দেশের বিভিন্ন সেনানিবাসে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক নেতারা ছাড়াও ৫ জন বিচারক, বেসামরিক প্রশাসনের ১৯ কর্মকর্তা, পুলিশের ২৮ কর্মকর্তা, বিভিন্ন পদের ৪৮৭ জন পুলিশ সদস্য, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন পেশার ১২ জন এবং ৫১টি পরিবারকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।

২০২৪ সালের জানুয়ারির নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর শেখ হাসিনা অনেক বেশি একগুঁয়ে হয়ে ওঠেন এবং কারও পরামর্শ কর্ণপাত করেননি

শেখ হাসিনার বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আইনমন্ত্রী আনিসুল হকসহ কয়েকজন মন্ত্রী দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় সময় ধরা পড়েছেন। এছাড়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসান মাহমুদ বিদেশ যাওয়ার সময় আটক হয়েছেন।

হাসিনা চলে যাওয়ার পর আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতারা আত্মগোপনে গেছেন এবং কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দলের নেতারা বলেছেন, সাড়ে ১৫ বছর ধরে দেশ শাসন করা ৫০ বছর বয়সী দলটি এখন অস্তিত্ব সংকটের মুখোমুখি হয়েছে।

দল গোছানোর বিষয়ে ভবিষ্যতের প্রথম পদক্ষেপ সম্পর্কে আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেছেন, ‘‘দল পুনর্গঠনের জন্য তার (হাসিনা) উচিত হবে তৃণমূলের লোকজনকে বাছাই করা, কিছু তরুণ আওয়ামী নেতা; যাদের বিশ্বাসযোগ্যতা রয়েছে, জনগণের সাথে যোগাযোগ রয়েছে এবং অবশ্যই পরিবারের (শেখ হাসিনার) প্রতি আনুগত্য রয়েছে… এটি দীর্ঘ পথ হতে যাচ্ছে।’’

আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে এখন যেসব মামলা ও অভিযোগ দায়ের করা হচ্ছে, এসব মামলার দীর্ঘ প্রস্তুতির বিষয়ে তিনি বলেন, অন্তত একজন সাধারণ সম্পাদক বা একজন পদাধিকারী নির্ধারণ করতে হবে; যিনি আওয়ামী লীগের ব্যানারে সরকারের কাছে পিটিশন লিখতে পারবেন। যদি গ্রেপ্তারকৃত নেতা-কর্মীদের আইনগত অধিকার চাইতে হয়, তাহলে এটি করতে হবে। তবে এই মুহূর্তে কাউকে এমন পদের জন্য মনোনীত করা হয়নি বলে জানান তিনি।

খালেদা জিয়া কারাগারে এবং তারেক রহমান লন্ডনে থাকাকালীন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আবদুল মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বাধীন বিএনপির দিকে ইঙ্গিত করে আওয়ামী লীগের ওই নেতা বলেন, ‘‘আমাদের একটি শক্তিশালী ভিত্তি এবং মানুষের নেটওয়ার্ক ছিল। অনেকে দলত্যাগ করেছেন, যেমন কিছু সুবিধাবাদীরা এটি করছেন। সমর্থকদেরও মাঝেও এমন লোকজন থাকবেই। তবে আমাদের অন্তত এমন কেউ একজন বা একদল লোক থাকা উচিত যারা অন্তর্বর্তী সরকারের সাথে যুক্ত হতে পারেন এবং নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে তাতে অংশগ্রহণ করতে পারে। এটি সময়ের প্রয়োজন।’’

রাজপথে জনসাধারণের মনোভাব শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ বিরোধী হলেও আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করেন, হাসিনা পরিবার ও তার উত্তরাধিকারী সজীব ওয়াজেদ জয়ের ন্যূনতম বক্তব্য-বিবৃতি দেওয়া উচিত।

আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেন, ‘‘লোকজন এখনও ক্ষুব্ধ…তাদের সময় দিতে হবে। ক্ষমতায় থাকা কয়েকটি বছর তা অন্তর্বর্তী সরকার কিংবা বিএনপি বা জামায়াতের নেতৃত্বাধীন ভবিষ্যৎ সরকার হোক না কেন, আমাদের ঘুরে দাঁড়ানোর সক্ষমতা আছে। কিন্তু আমাদের দীর্ঘমেয়াদে নিজেদের পুনর্গঠন ও সংগঠিত করার কথা ভাবতে হবে।’’

সূত্র: দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

‘পদত্যাগের’ কথা ভাবছেন ড. ইউনূস, না করার অনুরোধ নাহিদের

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫, ১২:৩১ পূর্বাহ্ণ
‘পদত্যাগের’ কথা ভাবছেন ড. ইউনূস, না করার অনুরোধ নাহিদের

দেশের সর্বত্র উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে গুঞ্জন শুরু হয়েছে পদত্যাগের চিন্তা করছেন অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এমন গুঞ্জনের মধ্যে তার সঙ্গে দেখা করে আসলেই পদত্যাগ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ভাবছেন বলে নিশ্চিত করলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। অবশ্য তিনি যেন এমন সিদ্ধান্ত না নেন সেই অনুরোধ জানিয়েছেন সাবেক তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গিয়ে তার সাথে সাক্ষাৎ করেন নাহিদ ইসলাম। পরে বিবিসি বাংলাকে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘দেশের চলমান পরিস্থিতি, স্যারেরতো পদত্যাগের একটা খবর আমরা আজকে সকাল থেকে শুনছি। তো ওই বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে স্যারের সাথে দেখা করতে গেছিলাম। প্রধান উপদেষ্টা দেশের চলমান পরিস্থিতিতে কাজ করতে পারবেন না এমন শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।’

এসময় তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদও ছিলেন বলে জানা গেছে।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘স্যার বলছেন আমি যদি কাজ করতে না পারি… যে জায়গা থেকে তোমরা আমাকে আনছিলা একটা গণঅভ্যুত্থানের পর, দেশের পরিবর্তন, সংস্কার…। কিন্তু যেই পরিস্থিতি যেভাবে আন্দোলন বা যেভাবে আমাকে জিম্মি করা হচ্ছে। আমিতো এভাবে কাজ করতে পারবো না। তো রাজনৈতিক দলগুলা তোমরা সবাই একটা জায়গায়, কমন জায়গায় না পৌঁছাতে পারো।’

প্রধান উপদেষ্টাকে পদত্যাগের মতো সিদ্ধান্ত না নিতে আহ্বান জানিয়েছেন নাহিদ। এ প্রসঙ্গে নাহিদ বলেন, ‘আমাদের গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা এবং জাতীয় নিরাপত্তা ও দেশের ভবিষ্যৎ সবকিছু মিলিয়ে উনি যাতে শক্ত থাকেন এবং সব দলকে নিয়ে যাতে ঐক্যের জায়গায় থাকেন, সবাই তার সাথে আশা করি কো-অপারেট করবেন।’

প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগের বিষয়টি বিবেচনা করছেন জানিয়ে নাহিদ বলেন, ‘হ্যাঁ, যদি কাজ করতে না পারেন, থাকবেন, থেকে কী লাভ। উনি বলছেন উনি এ বিষয়ে ভাবছেন। ওনার কাছে মনে হয়েছে পরিস্থিতি এরকম যে তিনি কাজ করতে পারবেন না।’

পদত্যাগের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার এখনকার মনোভাবের বিষয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘এখন ওনি যদি রাজনৈতিক দল তার পদত্যাগ চায়… সেই আস্থার জায়গা, আশ্বাসের জায়গা না পাইলে উনি থাকবেন কেন?’

জুলাই ঐক্য বিনষ্টের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ঢাবিতে বিক্ষোভ

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫, ১২:২৮ পূর্বাহ্ণ
জুলাই ঐক্য বিনষ্টের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ঢাবিতে বিক্ষোভ

জুলাইয়ের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক শক্তির মধ্যে ফাটল তৈরি ও ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ র‍্যালি ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে গণ-অভ্যুত্থানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৮০টি সংগঠনের ঐকবদ্ধ প্লাটফর্ম ‘জুলাই ঐক্য’।

আজ বৃহস্পতিবার (২২ মে) রাত ১১ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে  প্রতিবাদ র‌্যালি শুরু হয়ে শাহবাগ মোড় ঘুরে আবারও রাজু ভাস্কর্যের এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

সমাবেশে অংশ নেওয়া সংগঠনগুলোর নেতারা বলেন, “যে ঐক্য নিয়ে আমরা জুলাই গণঅভ্যুত্থান করেছিলাম সে ঐক্য ভাঙতে দেশি বিদেশি ষড়যন্ত্র হচ্ছে। যারা ষড়যন্ত্র করে জুলাই ঐক্যকে বিনষ্ট করতে চাইবে জুলাই জনতা তাদেরকে আবারও দিল্লিতে পাঠিয়ে দেবে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে আমরা লড়ে যাবো। ভারতীয়, মার্কিন আগ্রাসনে ও দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে জুলাই জনতা বুক পেতে আবার রাজপথে নেমে আসবে। আমরা আবারও বুকের তাজা রক্ত দেবো তবুও বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নষ্ট হতে দেবো না।”

এ সময়  বক্তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “সচিবালয়ে ফ্যাসিবাদের অনেক দোসর বসে আছে। ৩১ মে এর মধ্যে সচিবালয় থেকে ফ্যাসিবাদের সকল দোসর  অপসারণ না করলে সচিবালয় ঘেরাও হবে।”

জুলাই ঐক্যের আপ বাংলাদেশের প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ আল মিনহাজ বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে যে সকল ভারতীদের পুনর্বাসন করা হয়েছে তাদের চিহ্নিত করে অতি দ্রুত অপসারণ করতে হবে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “জুলাইয়ের শহীদদের রক্তের ওপর আপনার সরকার গঠিত। আমরা আপনার ওপর আস্থা রাখতে চাই। জুলাইয়ের ঐক্যকে যারা নষ্ট করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। অতি দ্রুত জুলাই ঘোষণাপত্র ঘোষণা দেন এবং আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত করুন।”

জুলাই ঐক্যের অন্যতম সংগঠক মোসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মদ বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের সুচিকিৎসার না দিয়ে উপদেষ্টারা ক্ষমতা উদযাপন শুরু করেছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে ভারতীয় আধিপত্যবদের দোসরা আবারও দেশকে ভারতের কাছে তুলে দিতে চায়। উপদেষ্টা পরিষদে ভারতীয় কোনো দালাল থাকতে পারবে না। জুলাই যোদ্ধারা বেঁচে থাকতে তা সফল হবে না। এবার রাজপথে নামতে হলে আপনাদের উৎখাত করে দেশ ছাড়া করা হবে। যারা জুলাই ঐক্যের ফাটল ধরানোর চেষ্টা করছে তাদের চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থা করুন।”

এছাড়াও জুলাই স্পিরিট ধরে রেখে নতুন বাংলাদেশ গড়তে সকল ভেদাভেদ ভুলে সকল রাজনৈতিক ও সমাজিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

এ সময় মোসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মদ জুলাই ঐক্যের পক্ষ থেকে তিন দফা দাবি জানান। জুলাই ঐক্যের ৩ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে—

ক) জুলাইয়ের সকল শক্তিকে বিনষ্ট করতে যে সকল ভারতীয় এজেন্ট কাজ করছে তাদের অবিলম্বে খুজে বের করে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে হবে।

খ) উপদেষ্টা পরিষদে যারা ভারতের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে ব্যাতিব্যাস্ত অবিলম্বে তাদের অপসারন করে উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন করতে হবে।

গ) অবিলম্বে জুলাই ঘোষণাপত্র যথা সময়ে দিতে হবে।

উপদেষ্টা মাহফুজের পর হাসনাতেরও ঐক্যের ডাক

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫, ১২:০৪ পূর্বাহ্ণ
উপদেষ্টা মাহফুজের পর হাসনাতেরও ঐক্যের ডাক

আগের সব ‘বিভাজনমূলক বক্তব্য ও শব্দচয়নের’ জন্য দুঃখ প্রকাশ করে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম দেশপ্রেমিক শক্তির ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন। তার সঙ্গে সুর মিলিয়ে একই আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহও।

হাসনাত বলেছেন, “এ দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য এবং পতিত ফ্যাসিবাদের নগ্ন, দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র থেকে মুক্তির জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।”

বৃহস্পতিবার (২২ মে) উপদেষ্টা মাহফুজ আব্দুল্লাহ ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার কিছুক্ষণ পরেই নিজের ভেরিফায়েড আইডিতে এমন আহ্বান জানান হাসনাত আব্দুল্লাহ।

সেখানে তিনি লিখেচেন, “জুলাইয়ের ফ্যাসিবাদবিরোধী সব শক্তির প্রতি আহ্বান—যে বিভাজনটা অপ্রত্যাশিতভাবে আমাদের মধ্যে এসেছিল, সেই বিভাজনকে দেশ ও জাতির স্বার্থে মিটিয়ে ফেলতে হবে।”

তিনি সবাইকে সতর্ক করে বলেন, “মনে রাখবেন আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পতনে দেশে-বিদেশে অনেকে নাখোশ হয়ে আছে। এই নাখোশ বান্দারা আমাদের বিভাজনের সুযোগ নিতে নিতে আজকের এই অস্থিতিশীল দিন এনেছে। আমরা সবাই এক হয়েছিলাম বলেই দীর্ঘ দেড় যুগের শক্তিশালী ফ্যাসিবাদকে তছনছ করতে পেরেছিলাম। আমরা খণ্ড-বিখণ্ড হলে পতিত ফ্যাসিবাদ ও তার দেশি-বিদেশি দোসরেরা আমাদের তছনছ করার হীন পাঁয়তারা করবে।”

হাসনাত বলেন, “দেশ ও জাতির প্রতি দায় এবং দরদ আছে বলেই আমরা এক হয়ে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়েছিলাম। দেশ ও জাতির জন্যই এবার আমাদের এক হয়ে আমাদের স্বদেশকে বিনির্মাণ করতে হবে। কোনও ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর স্বার্থের জন্য এই ঐক্য নয়, বরং আমাদের দেশের জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকার কোনও বিকল্প নেই।”

"> ">
‘পদত্যাগের’ কথা ভাবছেন ড. ইউনূস, না করার অনুরোধ নাহিদের জুলাই ঐক্য বিনষ্টের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ঢাবিতে বিক্ষোভ উপদেষ্টা মাহফুজের পর হাসনাতেরও ঐক্যের ডাক প্রধান উপদেষ্টাকে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার আহ্বান জামায়াত আমিরের ব্রাইডাল লুকে মুগ্ধতা ছড়ালেন অপু বিশ্বাস না আছে মরার ভয় না আছে হারাবার কিছু : আসিফ মাহমুদ গ্রেপ্তারের ক্ষমতা পেলেন ট্টাইব্যুনালের তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন নাহিদ ইসলাম সেনানিবাসে আশ্রয় নেওয়াদের পরিচয় প্রকাশ করল আইএসপিআর বীরগঞ্জে বীজ ডিলার ও কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত চলমান আন্দোলনের বিষয়ে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের প্রেস বিজ্ঞপ্তি নাগরিক ছাত্র ঐক্য সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা বীরগঞ্জে ট্রাক-মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৪ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু শেরপুর সীমাবাড়ি ইউনিয়নের কদিম হাঁসড়া গ্রামে বিমলের বাড়িতে মাদকের আখরা, যেন দেখার কেউ নেই রাষ্ট্র সংস্কারের অংশ হিসেবে গ্রাহক সেবার মানোন্নয়নে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডে বড় ধরনের বদলি! ভবানীপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের উদ্যোগে আরাফাত রহমান কোকো ফুটবল টুর্ণামেন্ট উদ্বোধন হবিগঞ্জের বানিয়াচং থানা পুলিশ অঞ্জাত কিশোরীর লাশ উদ্ধারের পরিচয় সনাক্তে ফেইসবুকে পোস্ট বীরগঞ্জে এনসিপি নেতা হাসনাতের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল নানা কর্মসূচীর মধ্যদিয়ে বীরগঞ্জে আন্তর্জাতিক মহান মে দিবস পালিত বীরগঞ্জে মহান শ্রমিক দিবস পালিত ছোনকায় মহান মে দিবস উপলক্ষে বর্নাঢ্য র‌্যালী শেষে শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পন কাহারোলে স্কাউটস দিবস উপলক্ষে র‍্যালি,পরিষ্কার- পরিচ্ছন্নতা অভিযান ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমারের যন্ত্রাংশ চুরি করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তির মৃত্যু দুদকের আকস্মিক অভিযান: বীরগঞ্জ হাসপাতালে দুর্নীতির চিত্র উন্মোচিত শেরপুরে চোরসহ টলিগাড়ি পাবনার ভাঙ্গুরায় আটক শেরপুরে ইউনিয়ন জামাতের সেক্রেটারীর ভাই ৭৫০ পিস ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার শেরপুরে কলেজের অধ্যক্ষের দূর্ণীতির বিরুদ্ধে মানববন্ধন।। শেরপুরে সভাপতি কর্তৃক অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দূর্ণীতি তদন্ত করার কারনে সভাপতি পরিবর্তন নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে শেরপুর উপজেলা বিএনপি’র আনন্দ শোভাযাত্রা শেরপুরে মাদ্রাসা শিক্ষিকার আত্মহত্যা।