মধ্যপাড়া পাথরখনিতে রেকর্ড পরিমাণে পাথর উত্তোলন

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর পার্শ্ববর্তী মধ্যপাড়া পাথরখনিতে গত অক্টোবর মাসে দেড় লাখ মেট্রিক টন পাথর উত্তোলনের মাধ্যমে পাথর উত্তোলনে পূর্বের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে খনিটি। এতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানী লিমিটেডের (এমজিএমসিএল) সংশ্লিষ্টরা।
খনি সূত্রে জানা যায়, মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানী লিমিটেডের (এমজিএমসিএল) সাথে খনির উন্নয়ন ও উৎপাদন কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জার্মানিয়া ট্রেস্ট কনসোর্টিয়ামের (জিটিসি) চুক্তি অনুযায়ী প্রতিমাসে এক লাখ ২৩ হাজার মেট্রিক টন পাথর উত্তোলন করার কথা। কিন্তু গত অক্টোবর মাসে দেড় লাখ মেট্রিক টন পাথর উত্তোলনের মাধ্যমে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি পাথর উত্তোলনের পূর্বের সকল রেকর্ড ভেঙ্গে দিয়েছে।
দেশের একমাত্র মধ্যপাড়া পাথরখনিটি ২০০৭ সালে বানিজ্যিকভাবে ভূগর্ভ থেকে পাথর উত্তোলন শুরু হয়। খনি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী জার্মানিয়া ট্রেস্ট কনসোর্টিয়ামকে (জিটিসি) প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণে পাথর উত্তোলন করতে হয়। চুক্তি অনুযায়ী ছয় বছরে ৮৮ লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন পাথর উত্তোলন করতে হবে জিটিসিকে। ছয় বছরের পাথর উত্তোলনের হিসাব অনুযায়ী প্রতি মাসে জিটিসিকে পাথর উত্তোলন করতে হয় এক লাখ ২৩ হাজার মেট্রিক টনের কিছু বেশি পাথর। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জিটিসি তাদের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে পাথর উত্তোলনের প্রচেষ্টার ধারাবাহিকতায় গত অক্টোবর মাসে নতুন রেকর্ড গড়েছে। প্রতিষ্ঠানটি তাদের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ২৩ হাজার মেট্রিক টন হলেও অক্টোবর মাসে পাথর উত্তোলন করেছে দেড় লাখ মেট্রিক টন। যা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৭ হাজার মেট্রিক টন পাথর বেশি।
খনি সূত্রে জানা যায়, পাথর উত্তোলনের পূর্বের সকল রেকর্ড ভেঙ্গে দিয়ে অধিক পরিমাণে পাথর উত্তোলনের চেষ্টা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জিটিসি তাদের কাজের সক্ষমতা প্রমাণ করছে। তাদের এই পাথর উত্তোলনের সফল্যে পাথরখনিটিও আগামীতে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হওয়ার পথে এগিয়ে যাবে।
এদিকে পাথর উত্তোলনে খনিটি সাফল্যের দিকে এগুলেও শঙ্কা দেখা দিয়েছে উত্তোলিত পাথর বিক্রি নিয়ে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পাথর মজুদ থাকলেও বিক্রিতে রয়েছে অতি ধীরগতি। খনির উত্তোলিত পাথরের গুণগত মান অন্যান্য পাথরের চেয়ে অনেক গুণ ভালো হওয়া সত্বেও যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে খরচ বেড়ে যাওয়ায় অনেকে আমদানি নির্ভর হয়ে পড়েছেন। আবার দেশের মেগা প্রকল্পগুলো বন্ধ থাকায় সেখানেও পাথর পাঠানো যাচ্ছে না। ফলে বিক্রিতে হতাশ রয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। বর্তমানে খনির পাথর ইয়ার্ডসহ বিভিন্ন স্থানে ১০ লাখ মেট্রিক টনেরও বেশি পাথর মজুদ রয়েছে খনিটিতে। যার সবগুলোই বিক্রির অপেক্ষায় পড়ে রয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জার্মানিয়া ট্রেস্ট কনসোর্টিয়ামের (জিটিসি) কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, জিটিসি সব সময় চেষ্টা করছে লক্ষ্যমাত্রা চেয়ে অধিক পরিমাণে পাথর উত্তোলনের মাধ্যমে খনিটিকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে। এরই ধারাবাহিকতায় অতিতের সকল রেকর্ড ভেঙ্গে অক্টোবর মাসে দেড় লাখ মেট্রিক টন পাথর উত্তোলন করা হয়েছে।
মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানী লিমিটেডের (এমজিএমসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি-চলতি দায়িত্ব) মো. ফজলুর রহমান রেকর্ড পরিমাণে পাথর উত্তোলনের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, পাথর উত্তোলনের এমন অবস্থা অব্যাহত থাকলে অচিরেই খনিটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে।
আপনার মতামত লিখুন