খুঁজুন
শুক্রবার, ২৩শে মে, ২০২৫, ৯ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

ফিরে দেখা ২০২৪

বছরের আলোচিত নাম রংপুরের ‘আবু সাঈদ’

ফরহাদুজ্জামান ফারুক, রংপুর প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৭:০৮ অপরাহ্ণ
বছরের আলোচিত নাম রংপুরের ‘আবু সাঈদ’

ঘটনাবহুল ২০২৪ সালে রংপুরে ঘটে গেছে বহু আলোচিত-সমালোচিত ঘটনা। এমনকি রংপুরের কয়েকটি ঘটনা দেশবাসীসহ বিশ্বজুড়ে নাড়াও দিয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত হলো কোটা সংস্কার আন্দোলন দমনে রাষ্ট্রযন্ত্রের নির্যাতন ও অন্যায়ের প্রতিবাদে পুলিশের গুলির সামনে বুক চিতিয়ে সাহস নিয়ে দাঁড়ানো আবু সাঈদের আত্মত্যাগ। ১৬ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে আবু সাঈদের বুকে বিবেকবর্জিত নতজানু পুলিশের গুলি চালানোর সেই দৃশ্য দেখেছে বিশ্ববাসী।

পুলিশের ছোড়া একের পর এক রাবার বুলেটে ক্ষতবিক্ষত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়া আবু সাঈদের মৃত্যুর পর শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দ্রোহের আগুন হয়ে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। শেখ হাসিনার দমননীতি উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নতুন মোড় নেয়। ছাত্র-জনতার ক্রোধ আর ক্ষোভের দীর্ঘ নিশ্বাস পরিণত হয় অপ্রতিরোধ্য শক্তিতে। তরান্বিত হয় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিদায় ঘণ্টা। শেষ পর্যন্ত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মুখে দলীয় নেতাকর্মীদের ফেলে রেখে নিজের জীবন বাঁচাতে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান টানা সাড়ে ১৫ বছর ক্ষমতার মসনদে থাকা শেখ হাসিনা।

ভোটযুদ্ধে জিএম কাদেরের প্রতিদ্বন্দ্বী হিজড়া জনগোষ্ঠীর রানী 

বছরের মাঝামঝি পতন ঘণ্টা বাজানোর সূচনাটা যে রংপুর থেকে রচিত হবে, তা হয়তো কল্পনাতেও আসেনি স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার। তবে ২০২৪ এর শুরুতে শেখ হাসিনার একদলীয় শাসনব্যবস্থা পাকাপোক্ত করার বিতর্কিত সংসদ নির্বাচনও ছিল আলোচনা-সমালোচনার টেবিলে। প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি বিএনপি-জামায়াতকে একঘরে রেখে ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন।

এ নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি আলোচনা-সমালোচনা হয় রংপুর-৩ আসনের প্রার্থী জিএম কাদের ও হিজড়া জনগোষ্ঠীর আনোয়ারা ইসলাম রানীকে ঘিরে। যদিও শেষ পর্যন্ত আসন ভোটযুদ্ধে জিএম কাদেরই জয়ী হন। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে দুর্গখ্যাত রংপুরের ছয়টি আসনের মধ্যে শুধুমাত্র একটিতে জয় পেয়েছিল জাতীয় পার্টি।

‘ভোট রাত ৩টার দিকে হয়েছে’

বিতর্কিত এ নির্বাচনের ছয় দিন পর ১৩ জানুয়ারি রংপুর-২ আসনের পরাজিত কৃষক লীগ নেতার বিস্ফোরক মন্তব্য ছিল বেশ আলোচনায়। ‘ভোট রাত ৩টার দিকে হয়েছে’ বলে অভিযোগ করেছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ও কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ সরকার ওরফে বিটু।

জিআই পণ্য হিসেবে হাঁড়িভাঙার স্বীকৃতি

উত্তরের অর্থনীতিতে আশীর্বাদ হয়ে আসা হাঁড়িভাঙা আমকে ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয় ১২ ফেব্রুয়ারি। এর আগে ২০১৬ সালে রংপুরের শতরঞ্জি জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পায়। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশের মাটিতে স্থান করে নেওয়া হাঁড়িভাঙা আম জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় রংপুরের সম্মানের সঙ্গে দেশের ভাবমূর্তি বৃদ্ধি পেয়েছে।

এক দিনে শ্যামাসুন্দরী খালের ৫ কিলোমিটার পরিষ্কার

রংপুরের ঐতিহ্য শ্যামাসুন্দরী খালকে মরণ দশা থেকে পুনরুজ্জীবিত করতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও জনসচেতনতামূলক অভিযান পরিচালনা করে রংপুর সিটি কর্পোরেশন (রসিক)। ১১ মে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ৭ ঘণ্টায় শ্যামাসুন্দরী খালের ১৫ দশমিক ৮০ কিলোমিটারে মধ্যে ৫ কিলোমিটার বিডি ক্লিনের স্বেচ্ছাসেবীরা একযোগে পরিষ্কার করেন।

 একদিনেই পানিতে ডুবে ৫ শিশুর মৃত্যু

রংপুরে পৃথক ঘটনায় ২৬ জুন একদিনেই পানিতে ডুবে ৫ শিশুর মৃত্যু হয়। মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দ এলাকায় ঘাঘট নদীতে ও নগরীর ভুরারঘাট এলাকায় একই নদীতে ডুবে চারজন এবং মিঠাপুকুরের পশ্চিম বড়বালা গ্রামে পুকুরের পানিতে ডুবে আরেক শিশুর মৃত্যু হয়।

ভিন্ন গ্রুপের রক্তে রোগীর মৃত্যুতে রমেকে তোলপাড়

রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে চিকিৎসকদের ভুলে অস্ত্রোপচারের সময় এক রোগীকে ভিন্ন গ্রুপের রক্ত দেওয়া হয়। ঘটনার ১৮ দিন পর ১০ জুলাই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফাতেমা বেগমের নামে ওই রোগীর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও ভুক্তভোগী পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে তৎকালীন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেন ফাতেমার সন্তানরা।

আবু সাঈদের মৃত্যুতে তরান্বিত হাসিনার পতন

১৬ জুলাই কোটা সংষ্কার আন্দোলনে থাকা শিক্ষার্থীদের ওপর দফায় দফায় হামলা চালায় পুলিশসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা। ওইদিন প্রায় ২০০ রাউন্ড গুলি ও রাবার বুলেট ছোড়ে তারা। এতে পুলিশের গুলিতে মারা যান আবু সাঈদ। নিহত আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন। এর দুদিন পর ১৮ জুলাই পার্ক মোড় তাজহাট থানা এলাকায় পুলিশের গুলিতে মানিক মিয়া নামে এক অটোরিকশা চালকের মৃত্যু হয়।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সারা দেশে ২০ জুলাই কারফিউ দেয় হাসিনা সরকার। এরপরও দমানো যায়নি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একের পর এক কর্মসূচি। শেষ পর্যন্ত ৪ আগস্ট রংপুর নগরী অস্ত্রধারী আওয়ামী সন্ত্রাসীদের তাণ্ডবে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। হামলার শিকার হয়ে পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তোলে বিক্ষুদ্ধ ছাত্র-জনতা। এদিন রংপুর সিটি কর্পোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা হারাধন রায় এবং তার গাড়িচালক কমল রায়সহ পাঁচজন মারা যান।

এত এত মৃত্যুর খবরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচিত ছিল পুলিশের গুলির সামনে বুক চিতিয়ে সাহস নিয়ে দাঁড়ানো আবু সাঈদের আত্মত্যাগের বিরল দৃশ্যটি। যা বিশ্ববিবেককে নাড়া দিয়েছে, কেঁদেছে বহু মানুষ। অনুপ্রাণিত হয়েছে শেখ হাসিনার স্বৈরশাসন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে দেশ-বিদেশে আওয়াজ তোলা লাখ লাখ মানুষকে।

আবু সাঈদ হত্যা মামলায় কলেজছাত্র গ্রেপ্তার 

শহীদ আবু সাঈদ হত্যা মামলায় আন্দোলনকারী কলেজছাত্র আলফি শাহরিয়ার মাহিমকে (১৬) আসামি দেখিয়ে গ্রেপ্তারের বিষয়টি ছিল বেশ আলোচিত। যদিও ১৯ জুলাই মাহিমকে গ্রেপ্তার ও কারাগারে পাঠানোর বিষয়টি অগোচরেই ছিল। একমাত্র ছোট ভাইয়ের কোনো খোঁজ না মেলায় ৩১ জুলাই মাহিমের বোন সানজানা আখতার স্নেহা ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিলে বিষয়টি আলোচনায় আসে। কিশোর শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার ও কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। পরবর্তীতে ১ আগস্ট আদালত তাকে জামিন আদেশ দেন।

পুলিশ সদস্যের ফেসবুক পোস্টে প্রশাসনে তোলপাড়

২০ আগস্ট রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরপিএমপি) এক উপপরিদর্শকের (এসআই) ফেসবুক স্ট্যাটাস নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। স্ট্যাটাসে দাবি করা হয়- ‘গত ১৯ জুলাই রংপুর রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি), বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপার (এসপি) নিজেই রাইডকার দিয়ে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি ছোড়েন।’ এই ফেসবুক স্ট্যাটাসটি রংপুর জেলা ও মহানগর পুলিশের মিডিয়া সেলেও শেয়ার করেন এসআই মজনু। এরপর সেটি নিয়ে রংপুরসহ সারাদেশে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

জামায়াতের হিন্দু শাখা গঠন নিয়ে বিতর্ক

পীরগাছায় ২৫ অক্টোবর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর হিন্দু শাখার কমিটি গঠনের খবরটিও ছিল বেশ আলোচনায়। যদিও পরবর্তীতে জামায়াত নেতারা দাবি করেন- হিন্দু শাখা নয়, অমুসলিম নাগরিক সেবা কমিটি গঠন করা হয়েছে।

ট্রেনের ধাক্কায় আহত কিশোরের অলৌকিকভাবে বেঁচে যাওয়া

২৬ অক্টোবর রংপুর নগরীর সিংগিমারী রেলসেতুতে টিকটক করতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় গুরুতর আহত কিশোরের অলৌকিকভাবে বেঁচে যাওয়ার ঘটনা ছিল বেশ আলোচনায়। কারণ ওই দুর্ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এতে বলা হয় আহত কিশোরের মৃত্যু হয়েছে।

চাকরি ছাড়লেন আবু সাঈদের দুই ভাই

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ আবু সাঈদের দুই ভাই রমজান আলী ও আবু হোসেনের চাকরি ছেড়ে দেওয়ার ঘটনাটিও আলোচিত ছিল। ৯ অক্টোবর রমজান আলীকে বাংলাদেশ প্রতিদিনের রংপুর ব্যুরো অফিসের জ্যেষ্ঠ নির্বাহী এবং আবু হোসেনকে টিভি চ্যানেল নিউজ-২৪ এর রংপুর ব্যুরো অফিসের জ্যেষ্ঠ নির্বাহীর পদে নিয়োগ দিয়েছিল বসুন্ধরা গ্রুপ। ওই দিন আবু সাঈদের ছোট বোন সুমী খাতুনকে চাকরি দেয় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) কর্তৃপক্ষ। কিন্তু হঠাৎ করে নভেম্বরের শুরুতে আবু সাঈদের দুই ভাই চাকরি থেকে অব্যাহতি নেওয়ায় তা নিয়ে জনমনে ব্যাপক কৌতুহল তৈরি হয়।

রমেকে রিং বাণিজ্যে চিকিৎসক, তদন্ত কমিটি গঠন

অর্ধযুগ পর রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে চালু হয় হার্টের এনজিওগ্রাম, হার্টের রক্তনালীতে স্টেন্ট (রিং) বসানো এবং হার্টের পেসমেকার স্থাপনের মতো গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসাসেবা। এই হাসপাতালে ২০১১-১২ অর্থবছরে কার্ডিওলজি বিভাগে প্রথমবার চালু করা হয় ক্যাথল্যাব। তবে বিভিন্ন সময় যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বন্ধ হয়েছে এটি। দীর্ঘ ছয় বছর পর ল্যাবটি চালু হলেও নভেম্বরে কার্ডিওলজি বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. মো. মাহবুবুর রহমান নামে এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ওঠা ‘রিং বাণিজ্যসহ ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ সাড়া ফেলে সারা দেশে। রমেক হাপাতালের পাশাপাশি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে গঠিত হয় তদন্ত কমিটি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সামনে রসিক মেয়রকে তুলোধুনো

এছাড়াও শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশগ্রহণ, সমর্থন ও আর্থিক সহযোগিতা করায় ২৫ জুলাই রংপুর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সামনে রংপুর সিটির সাবেক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফাকে তুলোধুনো করেন আওয়ামী লীগ নেতারা। যা নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েন ক্ষমতাসীন দলের নেতারা।

আবু সাঈদের কবর জিয়ারতে সরকার ও রাজনৈতিক নেতারা

১ আগস্ট জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করেন। এরপর ৭ আগস্ট আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করতে রংপুরে আসেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। ১০ আগস্ট রংপুরে এসেছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূইয়া। ১৪ আগস্ট বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ১৯ আগস্ট নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করেন।

অধ্যক্ষের গলায় জুতার মালা, বিজয় মিছিলে বিএনপি নেতার গুলিবর্ষণ

এছাড়াও শহীদ আবু সাঈদের ক্যাম্পাসে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আগমন, বেরোবিতে উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের সম্মাননা স্মারক প্রত্যাখান, আবু সাঈদ হত্যা মামলায় বেরোবির সাবেক প্রক্টর গ্রেপ্তার, পীরগাছায় ছাত্র-জনতার বিজয় মিছিলে বিএনপি নেতার গুলিবর্ষণের অভিযোগ, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে রংপুর কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মঞ্জুয়ারা পারভীনকে জুতার মালা দিয়ে পদত্যাগে বাধ্য করানোর ঘটনাটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রয়া সৃষ্টি হয়। সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহর সঙ্গে জাতীয় পার্টির দ্বন্দ্ব, রংপুরে অবাঞ্ছিত ঘোষণা এবং গণঅধিকার পরিষদের বিরুদ্ধে জাতীয় পার্টির মুখোমুখি অবস্থানের বিষয়টিও রাজনৈতিক মহলে আলোচনায় ছিল।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে বিতর্কে বদিউল আলম

সর্বশেষ ১৯ ডিসেম্বর রংপুরে এসে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে ‘নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণে কোনো বাধা দেখছি না’ বলে সমালোচনার মুখে পড়েন নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ও সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার। তার এ বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রচার হলে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যেবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সেটি প্রত্যাখান করে। যদিও ‘নির্বাচন নিয়ে বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে সংবাদ করা হয়েছে’ দাবি করে ঢাকায় ফিরে সংবাদ সম্মেলন করেন বদিউল আলম মজুমদার।

গাইবান্ধার আলোচিত যত ঘটনা

নানা কারণে ২০২৪ সালে গাইবান্ধাও ছিল আলোচনায়। এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত হলো, নবজাতক বিক্রির টাকায় ঋণ পরিশোধ করলেন বাবা-মা,  টাকা ভাগাভাগির দ্বন্দ্বে ৭২ ঘণ্টা পর মরদেহ দাফন, ত্রাণ নিতে গিয়ে চেয়ারম্যানের মারধরে আহত দিনমজুর, রেললাইনে নারীকে বাঁচাতে গিয়ে যুবকের মৃত্যু, টার্মিনাল থেকে হানিফের বাস চুরি।

বছরজুড়ে আলোচনায় ছিল দালাল সিন্ডিকেটের আঁতুড়ঘর গাইবান্ধার পাসপোর্ট অফিস। মিডিয়াতে দালাল সিন্ডিকেটের নিউজ প্রকাশিত হওয়ার পর অভিযানে নামে দুদক। তিনজনকে আটক করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

আলোচনায় ছিল টাকা ভাগাভাগির দ্বন্দ্বে ৭২ ঘণ্টা পর মরদেহ দাফন করার ঘটনা। জমি বিক্রির টাকার ভাগাভাগি নিয়ে ভাই ভাতিজার দ্বন্দ্বে উঠানে পড়ে থাকা বৃদ্ধ মোতাহার মুন্সির মরদেহ পুলিশি হস্তক্ষেপে ৭২ ঘণ্টা পর পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

আলোচনায় ছিল সুজন প্রসাদ নামে সনাতন ধর্মের এক যুবক। নিজ বাঙলা হোটেলে পুরো রমজান মাসে রোজাদারদের জন্য ইফতারের ব্যবস্থা করেন তিনি। আলোচনায় ছিল গাইবান্ধা জেলা কারাগারে নারী কয়ে;র সঙ্গে প্রধান কারারক্ষীর অনৈতিক সম্পর্কের ঘটনাটিও। পরে এ ঘটনায় প্রধান কারারক্ষী আশরাফুল ইসলামসহ দুই কারারক্ষীকে অন্যত্র বদলি করা হয়।

এছাড়াও ২০২৪ সালে সুন্দরগঞ্জে ৬ পা বিশিষ্ট বাছুরের জন্ম, সাদুলাপুরে গ্রাম পুলিশের নাক ফাটিয়ে দেওয়ায় বিএনপির তিন নেতার দলীয় পদ স্থগিত, ‘হ্যাভ এ রিলাক্স ও সি ইউ নট ফর মাইন্ড’ খ্যাত ভাইরাল শ্যামল হত্যা মামলায় গ্রেপ্তারের ঘটনাও ছিল আলোচনায়।

নীলফামারীতে আলোচিত যা ঘটেছে

ব্যবসায় আর্থিকভাবে ক্ষতির শিকার হয়ে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যার পর ব্যবসায়ীর আত্মহত্যার চেষ্টা, ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ না বলায় সৈয়দপুরে সরকারি কলেজ অধ্যক্ষের কক্ষে ছাত্রলীগের তালা ঝুলিয়ে দেওয়া, জমির জন্য বাবার মরদেহ দাফনে বাধা, কবরেই শুয়ে পড়লেন ছেলে- এসব ঘটনা ছিল বছরের সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা।

এছাড়াও আলোচনায় ছিল দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন মা, সুস্থ আছে কোলে থাকা শিশু, ঢাকা যাওয়ার জন্য জেদ ধরায় নববধূকে হাত বেঁধে নদীতে ফেলে দেন স্বামী এবং সম্পত্তি লিখে না দেওয়ায় বাবার মরদেহ উঠানে ফেলে রাখার ঘটনা।  এসব ঘটনা পাঠক মনে নাড়াও দিয়েছিল।

আলোচনায় পঞ্চগড় যেসব ঘটনা

১৪ বছর আগে জিয়াউর রহমানকে ‘রাজাকার’ বলায় ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের  পর সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের, এক বছরে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি তিনজনের মৃত্যু ঘটনা ছিল আলোচিত।

এছাড়াও সীমান্ত পেরিয়ে অবৈধভাবে ভারতীয় নাগরিকদের অনুপ্রবেশ, সাফজয়ী নারী খেলোয়াড় ইয়ারজানের চমক, নারী চিকিৎসকের আত্মহত্যা, বন্যহাতি আতঙ্ক, হত্যার পর চিতাবাঘ উদ্ধার, চার বছর পর ভারি শিল্প চিনিকল চালুর উদ্যোগ ও সীমান্ত থেকে পরিত্যক্ত অস্ত্র উদ্ধারসহ ছিল আলোচনায়।

তবে সবচেয়ে বেশি আলোচিত ঘটনার মধ্যে ছিল ৪০ বছর পর নেপালি নাগরিকের ঘরে ফেরার বিষয়টি। চার দশক ধরে নেপালি নাগরিক বীর বাহাদুর রায় বাংলাদেশের বিভিন্ন হোটেল-রেস্টুরেন্টে কাজ করেন। নেপালি ওই নাগরিক সকল আইনি জটিলতা শেষে ২৩ মে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে তার স্বজনদের কাছে ফিরে যান।

এছাড়াও বাংলাদেশি মুসলিম তরুণের ভালোবাসার টানে ভারতীয় হিন্দু তরুণীর ধর্মান্তরিত হয়ে বিয়ে এবং সীমান্ত জটিলতা কাটিয়ে বিজিবি ও ইমিপ্রেশন পুলিশের সহায়তায় স্বামীর বাড়ি রংপুরে ফেরার ঘটনাটি ছিল আলোচনায়।

 যেসব ঘটনায় আলোচিত দিনাজপুর

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গুলিবিদ্ধ দিনমজুর স্বামীর চিকিৎসায় তিনদিনের সন্তানকে ২৫ হাজার টাকায় বিক্রি করার ঘটনাটি ছিল বেশ আলোচনায়। বিভিন্ন মিডিয়ায় এ সংবাদটি প্রকাশ হলে টনক নড়ে স্থানীয় প্রশাসনের। পরে নবজাতককে কুড়িগ্রাম উদ্ধার নবজাতককে জন্মদাতা মা-বাবার কোলে তুলে দেওয়া হয়।

প্রতি রমজানেই বাজারে শসার চাহিদা স্বাভাবিক দরের চেয়ে বেশি হলেও এ বছর দিনাজপুরের খানসামায় শসার দাম ছিল অবিশ্বাস্য। মাত্র ১ টাকা কেজিতে শসা বিক্রি করে মাথায় বাজ পড়ে চাষিদের। ঘটনাটি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে চাষিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে দেশের সেরা রিটেইল চেইন সুপারশপ ‘স্বপ্ন’।

এছাড়াও চিরিরবন্দরের স্কুলছাত্রী সোমার মাত্র ৮ মাসে হাতে লেখা পবিত্র কোরআন, ইটভাটায় অভিযানের সময় পরিবেশ অধিদপ্তরের গাড়ি ভাঙচুর, রানীরবন্দরে বিআরটিসি বাসের ধাক্কায় ৫ জনের মৃত্যু এবং নানা প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে নৈশপ্রহরীর কাজে পার্বতীপুরের পারুল বেগমের চমকের ঘটনাটি ছিল বেশ আলোচনায়।

আলোচনা থেকে বাদ যায়নি ঠাকুরগাঁও

আয়া থেকে শত কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়া মুক্তা রাণীকে নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছিল ঠাকুরগাঁওজুড়ে। স্বামীর মৃত্যুর পর সিভিল সার্জন অফিসে আয়া পদে চাকরি নেওয়া মুক্তা রাণীর সঙ্গে সখ্যতা ছিল সাবেক পানিসম্পদ মন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেনের। এ কারণে বেশিদিন চাকরি করতে হয়নি তাকে। বরং সখ্যতার সম্পর্কে ভর করে মুক্তা রাণী ঠাকুরগাঁওয়ে এমপি রমেশ চন্দ্র সেনের দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে পরিচিতি পান। নাম পরিবর্তন করে তিনি হয়ে যান মুক্তা সেন, শুরু হয় তার উত্থান। সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের নওগাঁর অটো রাইস মিল কয়েক কোটি টাকায় কিনেছেন এই মুক্তা।

‘পদত্যাগের’ কথা ভাবছেন ড. ইউনূস, না করার অনুরোধ নাহিদের

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫, ১২:৩১ পূর্বাহ্ণ
‘পদত্যাগের’ কথা ভাবছেন ড. ইউনূস, না করার অনুরোধ নাহিদের

দেশের সর্বত্র উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে গুঞ্জন শুরু হয়েছে পদত্যাগের চিন্তা করছেন অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এমন গুঞ্জনের মধ্যে তার সঙ্গে দেখা করে আসলেই পদত্যাগ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ভাবছেন বলে নিশ্চিত করলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। অবশ্য তিনি যেন এমন সিদ্ধান্ত না নেন সেই অনুরোধ জানিয়েছেন সাবেক তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গিয়ে তার সাথে সাক্ষাৎ করেন নাহিদ ইসলাম। পরে বিবিসি বাংলাকে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘দেশের চলমান পরিস্থিতি, স্যারেরতো পদত্যাগের একটা খবর আমরা আজকে সকাল থেকে শুনছি। তো ওই বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে স্যারের সাথে দেখা করতে গেছিলাম। প্রধান উপদেষ্টা দেশের চলমান পরিস্থিতিতে কাজ করতে পারবেন না এমন শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।’

এসময় তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদও ছিলেন বলে জানা গেছে।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘স্যার বলছেন আমি যদি কাজ করতে না পারি… যে জায়গা থেকে তোমরা আমাকে আনছিলা একটা গণঅভ্যুত্থানের পর, দেশের পরিবর্তন, সংস্কার…। কিন্তু যেই পরিস্থিতি যেভাবে আন্দোলন বা যেভাবে আমাকে জিম্মি করা হচ্ছে। আমিতো এভাবে কাজ করতে পারবো না। তো রাজনৈতিক দলগুলা তোমরা সবাই একটা জায়গায়, কমন জায়গায় না পৌঁছাতে পারো।’

প্রধান উপদেষ্টাকে পদত্যাগের মতো সিদ্ধান্ত না নিতে আহ্বান জানিয়েছেন নাহিদ। এ প্রসঙ্গে নাহিদ বলেন, ‘আমাদের গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা এবং জাতীয় নিরাপত্তা ও দেশের ভবিষ্যৎ সবকিছু মিলিয়ে উনি যাতে শক্ত থাকেন এবং সব দলকে নিয়ে যাতে ঐক্যের জায়গায় থাকেন, সবাই তার সাথে আশা করি কো-অপারেট করবেন।’

প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগের বিষয়টি বিবেচনা করছেন জানিয়ে নাহিদ বলেন, ‘হ্যাঁ, যদি কাজ করতে না পারেন, থাকবেন, থেকে কী লাভ। উনি বলছেন উনি এ বিষয়ে ভাবছেন। ওনার কাছে মনে হয়েছে পরিস্থিতি এরকম যে তিনি কাজ করতে পারবেন না।’

পদত্যাগের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার এখনকার মনোভাবের বিষয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘এখন ওনি যদি রাজনৈতিক দল তার পদত্যাগ চায়… সেই আস্থার জায়গা, আশ্বাসের জায়গা না পাইলে উনি থাকবেন কেন?’

জুলাই ঐক্য বিনষ্টের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ঢাবিতে বিক্ষোভ

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫, ১২:২৮ পূর্বাহ্ণ
জুলাই ঐক্য বিনষ্টের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ঢাবিতে বিক্ষোভ

জুলাইয়ের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক শক্তির মধ্যে ফাটল তৈরি ও ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ র‍্যালি ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে গণ-অভ্যুত্থানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৮০টি সংগঠনের ঐকবদ্ধ প্লাটফর্ম ‘জুলাই ঐক্য’।

আজ বৃহস্পতিবার (২২ মে) রাত ১১ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে  প্রতিবাদ র‌্যালি শুরু হয়ে শাহবাগ মোড় ঘুরে আবারও রাজু ভাস্কর্যের এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

সমাবেশে অংশ নেওয়া সংগঠনগুলোর নেতারা বলেন, “যে ঐক্য নিয়ে আমরা জুলাই গণঅভ্যুত্থান করেছিলাম সে ঐক্য ভাঙতে দেশি বিদেশি ষড়যন্ত্র হচ্ছে। যারা ষড়যন্ত্র করে জুলাই ঐক্যকে বিনষ্ট করতে চাইবে জুলাই জনতা তাদেরকে আবারও দিল্লিতে পাঠিয়ে দেবে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে আমরা লড়ে যাবো। ভারতীয়, মার্কিন আগ্রাসনে ও দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে জুলাই জনতা বুক পেতে আবার রাজপথে নেমে আসবে। আমরা আবারও বুকের তাজা রক্ত দেবো তবুও বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নষ্ট হতে দেবো না।”

এ সময়  বক্তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “সচিবালয়ে ফ্যাসিবাদের অনেক দোসর বসে আছে। ৩১ মে এর মধ্যে সচিবালয় থেকে ফ্যাসিবাদের সকল দোসর  অপসারণ না করলে সচিবালয় ঘেরাও হবে।”

জুলাই ঐক্যের আপ বাংলাদেশের প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ আল মিনহাজ বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে যে সকল ভারতীদের পুনর্বাসন করা হয়েছে তাদের চিহ্নিত করে অতি দ্রুত অপসারণ করতে হবে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “জুলাইয়ের শহীদদের রক্তের ওপর আপনার সরকার গঠিত। আমরা আপনার ওপর আস্থা রাখতে চাই। জুলাইয়ের ঐক্যকে যারা নষ্ট করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। অতি দ্রুত জুলাই ঘোষণাপত্র ঘোষণা দেন এবং আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত করুন।”

জুলাই ঐক্যের অন্যতম সংগঠক মোসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মদ বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের সুচিকিৎসার না দিয়ে উপদেষ্টারা ক্ষমতা উদযাপন শুরু করেছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে ভারতীয় আধিপত্যবদের দোসরা আবারও দেশকে ভারতের কাছে তুলে দিতে চায়। উপদেষ্টা পরিষদে ভারতীয় কোনো দালাল থাকতে পারবে না। জুলাই যোদ্ধারা বেঁচে থাকতে তা সফল হবে না। এবার রাজপথে নামতে হলে আপনাদের উৎখাত করে দেশ ছাড়া করা হবে। যারা জুলাই ঐক্যের ফাটল ধরানোর চেষ্টা করছে তাদের চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থা করুন।”

এছাড়াও জুলাই স্পিরিট ধরে রেখে নতুন বাংলাদেশ গড়তে সকল ভেদাভেদ ভুলে সকল রাজনৈতিক ও সমাজিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

এ সময় মোসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মদ জুলাই ঐক্যের পক্ষ থেকে তিন দফা দাবি জানান। জুলাই ঐক্যের ৩ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে—

ক) জুলাইয়ের সকল শক্তিকে বিনষ্ট করতে যে সকল ভারতীয় এজেন্ট কাজ করছে তাদের অবিলম্বে খুজে বের করে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে হবে।

খ) উপদেষ্টা পরিষদে যারা ভারতের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে ব্যাতিব্যাস্ত অবিলম্বে তাদের অপসারন করে উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন করতে হবে।

গ) অবিলম্বে জুলাই ঘোষণাপত্র যথা সময়ে দিতে হবে।

উপদেষ্টা মাহফুজের পর হাসনাতেরও ঐক্যের ডাক

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫, ১২:০৪ পূর্বাহ্ণ
উপদেষ্টা মাহফুজের পর হাসনাতেরও ঐক্যের ডাক

আগের সব ‘বিভাজনমূলক বক্তব্য ও শব্দচয়নের’ জন্য দুঃখ প্রকাশ করে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম দেশপ্রেমিক শক্তির ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন। তার সঙ্গে সুর মিলিয়ে একই আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহও।

হাসনাত বলেছেন, “এ দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য এবং পতিত ফ্যাসিবাদের নগ্ন, দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র থেকে মুক্তির জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।”

বৃহস্পতিবার (২২ মে) উপদেষ্টা মাহফুজ আব্দুল্লাহ ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার কিছুক্ষণ পরেই নিজের ভেরিফায়েড আইডিতে এমন আহ্বান জানান হাসনাত আব্দুল্লাহ।

সেখানে তিনি লিখেচেন, “জুলাইয়ের ফ্যাসিবাদবিরোধী সব শক্তির প্রতি আহ্বান—যে বিভাজনটা অপ্রত্যাশিতভাবে আমাদের মধ্যে এসেছিল, সেই বিভাজনকে দেশ ও জাতির স্বার্থে মিটিয়ে ফেলতে হবে।”

তিনি সবাইকে সতর্ক করে বলেন, “মনে রাখবেন আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পতনে দেশে-বিদেশে অনেকে নাখোশ হয়ে আছে। এই নাখোশ বান্দারা আমাদের বিভাজনের সুযোগ নিতে নিতে আজকের এই অস্থিতিশীল দিন এনেছে। আমরা সবাই এক হয়েছিলাম বলেই দীর্ঘ দেড় যুগের শক্তিশালী ফ্যাসিবাদকে তছনছ করতে পেরেছিলাম। আমরা খণ্ড-বিখণ্ড হলে পতিত ফ্যাসিবাদ ও তার দেশি-বিদেশি দোসরেরা আমাদের তছনছ করার হীন পাঁয়তারা করবে।”

হাসনাত বলেন, “দেশ ও জাতির প্রতি দায় এবং দরদ আছে বলেই আমরা এক হয়ে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়েছিলাম। দেশ ও জাতির জন্যই এবার আমাদের এক হয়ে আমাদের স্বদেশকে বিনির্মাণ করতে হবে। কোনও ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর স্বার্থের জন্য এই ঐক্য নয়, বরং আমাদের দেশের জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকার কোনও বিকল্প নেই।”

"> ">
‘পদত্যাগের’ কথা ভাবছেন ড. ইউনূস, না করার অনুরোধ নাহিদের জুলাই ঐক্য বিনষ্টের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ঢাবিতে বিক্ষোভ উপদেষ্টা মাহফুজের পর হাসনাতেরও ঐক্যের ডাক প্রধান উপদেষ্টাকে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার আহ্বান জামায়াত আমিরের ব্রাইডাল লুকে মুগ্ধতা ছড়ালেন অপু বিশ্বাস না আছে মরার ভয় না আছে হারাবার কিছু : আসিফ মাহমুদ গ্রেপ্তারের ক্ষমতা পেলেন ট্টাইব্যুনালের তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন নাহিদ ইসলাম সেনানিবাসে আশ্রয় নেওয়াদের পরিচয় প্রকাশ করল আইএসপিআর বীরগঞ্জে বীজ ডিলার ও কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত চলমান আন্দোলনের বিষয়ে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের প্রেস বিজ্ঞপ্তি নাগরিক ছাত্র ঐক্য সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা বীরগঞ্জে ট্রাক-মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৪ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু শেরপুর সীমাবাড়ি ইউনিয়নের কদিম হাঁসড়া গ্রামে বিমলের বাড়িতে মাদকের আখরা, যেন দেখার কেউ নেই রাষ্ট্র সংস্কারের অংশ হিসেবে গ্রাহক সেবার মানোন্নয়নে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডে বড় ধরনের বদলি! ভবানীপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের উদ্যোগে আরাফাত রহমান কোকো ফুটবল টুর্ণামেন্ট উদ্বোধন হবিগঞ্জের বানিয়াচং থানা পুলিশ অঞ্জাত কিশোরীর লাশ উদ্ধারের পরিচয় সনাক্তে ফেইসবুকে পোস্ট বীরগঞ্জে এনসিপি নেতা হাসনাতের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল নানা কর্মসূচীর মধ্যদিয়ে বীরগঞ্জে আন্তর্জাতিক মহান মে দিবস পালিত বীরগঞ্জে মহান শ্রমিক দিবস পালিত ছোনকায় মহান মে দিবস উপলক্ষে বর্নাঢ্য র‌্যালী শেষে শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পন কাহারোলে স্কাউটস দিবস উপলক্ষে র‍্যালি,পরিষ্কার- পরিচ্ছন্নতা অভিযান ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমারের যন্ত্রাংশ চুরি করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তির মৃত্যু দুদকের আকস্মিক অভিযান: বীরগঞ্জ হাসপাতালে দুর্নীতির চিত্র উন্মোচিত শেরপুরে চোরসহ টলিগাড়ি পাবনার ভাঙ্গুরায় আটক শেরপুরে ইউনিয়ন জামাতের সেক্রেটারীর ভাই ৭৫০ পিস ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার শেরপুরে কলেজের অধ্যক্ষের দূর্ণীতির বিরুদ্ধে মানববন্ধন।। শেরপুরে সভাপতি কর্তৃক অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দূর্ণীতি তদন্ত করার কারনে সভাপতি পরিবর্তন নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে শেরপুর উপজেলা বিএনপি’র আনন্দ শোভাযাত্রা শেরপুরে মাদ্রাসা শিক্ষিকার আত্মহত্যা।