খুঁজুন
শুক্রবার, ২৩শে মে, ২০২৫, ৯ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

ছাতকের ব্রিজ একাডেমিতে শিক্ষার নামে বানিজ্য, সরকারের রাজস্ব ফাঁকি

জেলা প্রতিবেদক, সুনামগঞ্জ প্রকাশিত: সোমবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৪, ৮:১৫ অপরাহ্ণ
ছাতকের ব্রিজ একাডেমিতে শিক্ষার নামে বানিজ্য, সরকারের রাজস্ব ফাঁকি

সুনামগঞ্জের ছাতকের গোবিন্দগঞ্জস্থ্য ইংরেজী মাধ্যমের স্কুল এন্ড কলেজ ব্রিজ একাডেমী প্রায় এক যুগ ধরে ইংরেজী শিক্ষার নামে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে প্লে থেকে একাদ্বশ শ্রেনীর প্রতি ছাত্র/ছাত্রীদের নিকট থেকে মাসিক বেতন ২ হাজার টাকা নেওয়া হলেও চলতি বছর নেওয়া হচ্ছে ২ হাজার ২ শত টাকা। সেশন ফি প্রতি ছাত্র/ছাত্রীদের নিকট ৫ হাজার টাকা নেওয়া হলেও চলতি বছর নেওয়া হচ্ছে ৬ হাজার টাকা। এছাড়াও নতুন ভর্তী হলে ফি দিতে হচ্ছে ১০ হাজার টাকা। বেতন ও সেশন ফি বৃদ্ধির বিষয়ে একাডেমির চেয়ারম্যান আইয়ুব করম আলীর সাথে বৈঠকও করেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবকবৃন্দ। তবে ঐ বৈঠক ফলপ্রসু হয়নি বলে জানা গেছে।

টিউশন ফি দিতে বিলম্ব করায় ব্রিজ একাডেমির ফিনান্স ডিরেক্টর বিঞ্চু ভল্বব দে’র হাতে একাধিক শিক্ষার্থীদের অভিভাবক লাঞ্চিত হয়েছেন এমন অভিযোগও উঠেছে। শিক্ষার্থীদের ঘন্টার পর ঘন্টা শ্রেনী কক্ষের বাহিরে দাঁড় করে রেখে মানষিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ্য করা হয়েছে। তবে ছাত্র/ছাত্রীদের লেখা পড়া ও বিভিন্ন দিক চিন্তা করে এসব বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ শিক্ষার্থীদের অভিভাবকবৃন্দ। বিঞ্চু ভল্বব দে সিলেটের একটি হোটেলে ম্যানাজার হিসাবে কর্মরত আছেন। তিনি অভিভাবকবৃন্দকে উদৃতি দিয়ে থাকেন হোটেলে রাত্রী যাপনের জন্য যেমন আগে টাকা পরিশোধ করতে হয় তেমনি ভাবে ব্রিজ একাডেমিতে পড়াতে হলে আগে বেতন পরিশোধ করতে হবে। একাডেমির ফিনান্স ডিরেক্টর বিঞ্চু ভল্বব দে যোগাদানের পর থেকে একাডেমিতে শিক্ষক/শিক্ষিকাদের গন গন বদলি হওয়ায় শিক্ষার্থীদের পাঠদান মারাত্বকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। মনোমুগ্ধকর ব্যানার, ফ্যাস্টুন লাগিয়ে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের আকৃষ্ট করে ইংরেজী শিক্ষার নামে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এ যেনো দেখার কেউ নেই।

জানা যায়, ব্রিজ একাডেমিতে বর্তমানে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা প্রায় ৪ শত। ২০২৩ সালে এসএসসি পরিক্ষায় ১৯ জন্য শিক্ষার্থী অংশ গ্রহন করে। এর মধ্যে এ পেয়েছে ১৫ জন, এ- ২ জন ও অনুত্তীর্ণ ২জন। ২০২২ সালের ফলাফলও সন্তুষ জনক নয়। একাডেমিতে ভর্তি ফি, সেশন ফি, বেতন বৃদ্ধি করা হলেও ফলাফল থেকে প্রতীয়মান হয় যে লেখার পড়ার মান খুবই নিম্ন মানের। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভ দেখা দেয়। ইতোমধ্যে অনেক অভিভাবক তাদের ছেলে মেয়েদের একাডেমি থেকে অন্যত্র নিয়ে গেছেন বলে জানা গেছে।

সদ্য সমাপ্ত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সুনামগঞ্জ (০৫) ছাতক-দোয়ারাবাজার সংসদীয় আসন থেকে গণফোরাম মনোনীত প্রাথী ও ব্রিজ একাডেমির চেয়ারম্যান আইয়ুব করম আলী গত ২১ ডিসেম্বর ২০২৩ ইং তারিখে স্থানীয় গোবিন্দগঞ্জ পয়েন্ট এক নির্বাচনী জনসভায় বলেন, আমি নির্বাচিত হলে শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি, মাস্টার প্লান করে গোবিন্দগঞ্জকে পরিকল্পিত নগরী হিসাবে গড়ে তুলবো। তিনি আরো বলেন, আমি নির্বাচিত হলে স্থানীয় গোবিন্দগঞ্জ আব্দুল হক স্মৃতি কলেজের প্রিন্সিপালকে গিয়ে জিজ্ঞেস করবো আপনার কলেজ থেকে এ বছর কয়টি এ প্লাস পেয়েছে। তখন তিনি (প্রিন্সিপাল) বলবেন একটিও পায়নি। আমি বলবো আমার সংকর্ধনার প্রযোজন নাই। আগামীতে কিভাবে এ প্লাস পাওয়া যায় সেই ব্যবস্থা নিন। এমনকি ঐতিহ্যবাহী গোবিন্দগঞ্জ আব্দুল হক স্মৃতি কলেজের শিক্ষার্থীদের পরিক্ষার ফলাফল নিয়ে তিনি বিদ্রুপ মন্তব্য করেন। অথচ আইয়ুব করম আলীর নিজ প্রতিষ্টান ব্রিজ একাডেমিতে নি¤œমানের পাঠদান, ফলাফল শূন্যের কোটায় ও চলছে শিক্ষার নামে বানিজ্য। তার নিজ প্রতিষ্টানের ফলাফল আড়াল করে ঐতিহ্যবাহী গোবিন্দগঞ্জ আব্দুল হক স্মৃতি কলেজ এর ফলাফল নিয়ে মন্তব্য করায় স্থানীয় অনেকেই এর সমালোচন করেন। যদিও সদ্য সমাপ্ত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইয়ুব করম আলী ৫৬৯ ভোট পেয়েছেন। এর আগেও একাদ্বশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি অংশগ্রহন করে জামানত হারান। সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে ব্রিজ একাডেমিতে প্রাথমিক ও জুনিয়র পরিক্ষার অনুমতি থাকলেও মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেয়ার সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ কতৃক কোন অনুমতি নেই। সিলেটের একটি প্রতিষ্টানকে ম্যানেজ করে ঐ প্রতিষ্টানের নামে পরীক্ষা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও প্লে থেকে নার্সারী শ্রেনীর শিক্ষার্থীদের মহিলা অভিভাবকবৃন্দ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রচন্ড রোদ্র উপক্ষো করে একাডেমির মুল ফটকের সামনের রাস্তায় দাঁড়িয়ে বা বসে থাকতে দেখা গেছে। তাদেরকে ভিতরে বসতে দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হচ্ছেনা। যদিও ছোট ছোট কোমলমতি শিশুদের সঙ্গে নিয়ে তাদের আসা যাওয়া করতে হয়।

এ বিষয়ে ব্রিজ একাডেমির প্রিন্সিপাল মোস্তাক আহমদ অনেকটা দায়ভার এড়িয়ে গিয়ে বলেন, ২০২৩ সালে এসএসসি পরিক্ষার ফলাফল মোটামুটি ভালো তবে ২ জন অনুত্তীর্ণ হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ২০২৩ সালের জানুয়ারী থেকে একাডেমিক দিক আমি দেখছি আর ফিনান্স এর দিক দেখছেন ফিনান্স ডিরেক্টর বিঞ্চু ভল্বব দে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিঞ্চু ভল্বব দে একাডেমির ডিরেক্টর বা সেয়ার হোল্ডার না। তিনি একাডেমির কর্মকর্তা (হিসাব রক্ষক) বলা যায়। সিলেট শহরের একটি হোটেলে ম্যানাজার হিসাবেও কাজ করেন। এ বিষয়ে ব্রিজ একাডেমির ফিনান্স ডিরেক্টর বিঞ্চু ভল্বব দে তার উপর আনিত সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, একাডেমি কতৃপক্ষ যেভাবে ভর্তী, বেতন ও সেশন ফি নিতে বলেন আমারা সেভাবেই নিচ্ছি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আয়কর রির্টান জমা দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। এ বিষয়ে ব্রিজ একাডেমির চেয়ারম্যান যুক্তরাজ্য প্রবাসী আইয়ুব করম আলী প্রবাসে থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে সুনামগঞ্জ জেলা সহকারী কর কমিশনার মো: রাকিবুল ইসলাম খাঁন বলেন, ইংলিশ মিডিয়াম হলে অবশ্যই তাদেরকে রিটার্ন দিতে হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিষয়টি ছাতক কর সার্কেল (২০) থেকে জানতে পারবেন। এ বিষয়ে ছাতক কর সার্কেল (২০) এর অতিরিক্ত সহকারী কর কর্মকর্তা দিপষ্কর চৌধুরী বলেন, স্কুল, কলেজের রিটার্ন আমাদের এইখানে দেওয়া হয়না। এর জন্য আলাদা সার্কেল রয়েছে। তবে সেই আলাদা সার্কেলের ঠিকানা বা নাম্বার জানা যায়নি। এ বিষয়ে ছাতক উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার পুলিন চন্দ্র রায় বলেন, বেসকারী স্কুল গুলো সাধারনত ম্যানেজিং কমিটি পরিচালনা করেন আমারা সমন্নয় করি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নিয়ম অনুযায়ী এত ভর্তী ফি নেওয়ার কোন সুযোগ নেই। সরকারী ভাবে নির্ধারন করে দেওয়া হয়েছে জেলা শহরে ২ হাজার টাকা ও উপজেলা শহরে সর্বোচ্চ ১ হাজার টাকা। তিনি আরো বলেন, সেশন ফি বলতে কিছু নাই। তবে ঐ সকল শিক্ষা প্রতিষ্টানকে সরকারী বিধি বিধানের প্রতি লক্ষ করা উচিৎ বলে তিনি মন্তব্য করেন।

এ বিষয়ে ছাতক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান বলেন, এটি একটি প্রাইভেট শিক্ষা প্রতিষ্টান। যেকোন প্রতিষ্টান সরকারী নীতিমালা অনস্মরণ করে পরিচালিত হবে এটাই স্বাভাবিক। সাধারন পরিবারের সন্তানেরা পড়াশুনা করতে পারে সেই সাধ্যের ভিতরে ভর্তী ফি, বেতন নিয়ে আসার জন্য কতৃপক্ষের নিকট আহবান জানান তিনি।

এ বিষয়ে অবিলম্বে তদন্ত স্বাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছেন অভিজ্ঞ মহল।

প্রকৃতির ভাষা ও প্রাণের চাহিদা বোঝা বাজেট

এম জাকির হোসেন খান
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫, ১:৫৯ অপরাহ্ণ
প্রকৃতির ভাষা ও প্রাণের চাহিদা বোঝা বাজেট

মায়ের কোলে ঘুমিয়ে থাকা শিশুর নিঃশ্বাসে হয়তো ধুলাবালি নেই, হয়তো নেই নদী হারানোর দীর্ঘশ্বাস। কিন্তু তার ভবিষ্যৎ কি আমরা নিশ্চিত করে দিচ্ছি? হয়তো নয়। কারণ আমাদের জাতীয় বাজেটে প্রকৃতির কোনো স্বর নেই, নেই নদীর জন্য বরাদ্দ, বনাঞ্চলের কান্না বা একটি তপ্ত শহরের শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার সুযোগ।

২০২৪-২৫ অর্থ বছরের বাজেট আলোচনায় জলবায়ু পরিবর্তন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কিংবা নবায়নযোগ্য জ্বালানির কথা উঠে এসেছে-তবে গণমাধ্যমে। বাস্তবে, যে দেশ প্রতিবছর ৭ হাজার কোটি টাকার বেশি ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি হয় ঘূর্ণিঝড়ের কারণে, যে দেশে প্রায় ২ লাখ ৭০ হাজার মানুষ শুধু পরিবেশ দূষণের কারণে অকালে মৃত্যুবরণ করে, সেই দেশের বাজেটে জলবায়ু ও পরিবেশ খাতে বরাদ্দ জিডিপির মাত্র ০.৭০৬ শতাংশ-এ কি উপহাস নয়?

এ অবস্থার পেছনে রয়েছে একটি ‘উন্নয়ন-বিনাশ ফাঁদ’ (Development-Destruction Trap)। উন্নয়নের নামে প্রকৃতি ধ্বংস হচ্ছে, অথচ প্রকৃতির উপর নির্ভর করেই টিকে আছে কৃষি, খাদ্য, স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা। এ সংকট সমাধানে শুধুমাত্র খাতভিত্তিক বাজেট নয়, প্রয়োজন ন্যায্যতা ও অধিকার ভিত্তিক বাজেট কাঠামো, যেখানে প্রকৃতি ও জনগণের অধিকার সম্মান পায়।

চট্টগ্রামের উপকূলীয় এক গ্রামে ঘূর্ণিঝড় রেমালের পর একজন মাঝবয়সী নারী বলেছিলেন, ‘ঘর গেছে, জমি গেছে, এখন ছেলেমেয়েকে নিয়ে শুধু চাই—জীবনটা যেন একটু নিরাপদ হয়।’ কিন্তু বাজেট সেই নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি দিতে পারেনি।

বাংলাদেশের বাজেট প্রণয়ন ধারণাটি এখনো প্রকৃতিকে বোঝে না। প্রকৃতিকে ‘ব্যয়যোগ্য’ হিসেবে দেখা হয়, সংরক্ষণ নয়।

পানি উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ কমেছে; স্বাস্থ্য খাতে বাড়লেও তা নগণ্য; দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বরাদ্দ কমেছে মূল্যস্ফীতির হিসাব কষলে। আশ্চর্যজনক হলো, সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল যেমন রংপুর ও সুনামগঞ্জে জনপ্রতি বরাদ্দ সবচেয়ে কম, বরিশালের তুলনায় প্রায় ৯ গুণ কম। এই বৈষম্য কেবল অর্থনৈতিক নয়, এটি নৈতিক ব্যর্থতাও।

বাংলাদেশের বাজেট প্রণয়ন ধারণাটি এখনো প্রকৃতিকে বোঝে না। প্রকৃতিকে ‘ব্যয়যোগ্য’ হিসেবে দেখা হয়, সংরক্ষণ নয়। অথচ যুক্তরাষ্ট্রের এনভায়রনমেন্টাল প্রটেকশন এজেন্সির মতে, $১ বিনিয়োগ করলে পরিবেশগত প্রতিরক্ষা থেকে $৩০ পর্যন্ত আর্থিক সুবিধা আসে—ব্যবসা ভাষায় যাকে বলে বিনিয়োগের রিটার্ন।

আমাদের মাটি, জল, বাতাস আর জীববৈচিত্র্য আজ বিনষ্ট। এ বিনাশের খরচ কেবল সরকারি হিসাব নয়, প্রতিটি পরিবারের নিত্য জীবনের ভোগান্তি। সুস্থ বাচ্চা জন্ম দিতে না পারা এক মায়ের কান্নায়, গর্ভবতী নারীর ফুসফুসে জমে থাকা ধুলোয়, মাছের খাঁচা ভেসে যাওয়া একজন মৎস্যজীবীর অসহায়তায় সেই খরচ ধরা পড়ে।

তাহলে কেমন হওয়া উচিত প্রকৃতি-পরিবেশ বান্ধব বাজেট?

আমাদের প্রস্তাব একটি কাঠামোগত সংস্কারের দৃষ্টিভঙ্গি:

ক) প্রকৃতিকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি: বাংলাদেশের উচ্চ আদালতের নদীকে জীবন্ত সত্তা হিসেবে প্রদত্ত রায়কে মেনে সরকারের দ্রুত সমুদ্র, বন, পাহাড়কে ‘জীবন্ত সত্তা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে ‘প্রাকৃতিক অধিকার আইন’ প্রণয়ন করুন, যা প্রকৃতি ন্যায্যতাও। শুধু প্রকল্প বা কর্মসূচিতে প্রকৃতি নয়, প্রকৃতির নিজস্ব অস্তিত্বকে স্বীকার করুন এবং প্রাকৃতিক আইন মেনে অর্থায়ন করুন।

খ) ভূমি ও নদী ব্যবস্থাপনায় ন্যায্যতা: ঝুঁকির ভিত্তিতে অগ্রাধিকার দিন। সুনামগঞ্জ, রংপুর, কুড়িগ্রামের মতো জেলাগুলোয় পৃথক ‘ঝুঁকি সামলানো তহবিল’ গঠন করা দরকার।

গ) রাজস্ব উৎস হিসেবে সবুজ কর: কার্বন কর, দূষণ ফি ও পরিবেশ সংরক্ষণ ফি থেকে বছরে ৩ থেকে ৫ বিলিয়ন ডলার রাজস্ব আনা সম্ভব।

  • ইটভাটা, সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক, দূষণকারী পণ্য ও পরিবহন ও জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর পরিবেশ সুরক্ষা কর এবং কার্বন করারোপ করুন। মাত্র ১০ শতাংশ হারে এ ধরনের করারোপে প্রায় এক থেকে দেড় বিলিয়ন ডলার জোগান দেওয়া সম্ভব

(সূত্র: চেইঞ্জ ইনিশিয়েটিভ স্টাডি, ২০২৪)।

  • বরাদ্দের পরিমাণ: পরিবেশ, জলবায়ু ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে প্রকৃত বা পরিবেশ ও প্রকৃতির ক্ষয়-ক্ষতি বাদে প্রাক্কলিত নেট জিডিপির অন্তত ২০ শতাংশ বরাদ্দ দিতে হবে প্রকৃতির সুরক্ষা এবং কমিউনিটি নেতৃত্বাধীন রেজিলিয়েন্স নিশ্চিতে-

–               কৃষি খাতে: জিডিপির ৫ শতাংশ

–               পানি খাতে: ৫ শতাংশ

–               জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা ও পুষ্টি খাতে: ৫ শতাংশ

–               প্রাকৃতিক সুরক্ষা এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায়: ৫ শতাংশ

সুস্থ বাচ্চা জন্ম দিতে না পারা এক মায়ের কান্নায়, গর্ভবতী নারীর ফুসফুসে জমে থাকা ধুলোয়, মাছের খাঁচা ভেসে যাওয়া একজন মৎস্যজীবীর অসহায়তায় সেই খরচ ধরা পড়ে।

এই মুহূর্তে প্রশ্ন একটাই: আমরা কাকে বাঁচাতে চাই?

শুধু দালান, সড়ক আর মেগা প্রকল্পে কষ্টার্জিত বিনিয়োগ করলেও পানি, নিচে মাটি থাকবে তো? নদী কি থাকবে? মাছ এবং বীজ কি মাইক্রোপ্লাষ্টিক মুক্ত থাকবে?

প্রকৃতিকে বাদ দিয়ে তথাকথিত ধ্বংসাত্মক উন্নয়নকে বেছে নিলে পরিণতি কী হয় তা জানার জন্য সভ্যতাগুলো হারিয়ে যাওয়ার ইতিহাস পড়া উচিত ‘আমি সব জানি’ নীতিনির্ধারক এবং বিশেষজ্ঞদের।

প্রকৃতি প্রদত্ত সুজলা সুফলা বাংলাদেশের সাড়ে বারোশো নদী থেকে মাত্র ২৫০ এর মতো নদী বেচে থাকা, নির্মল বাতাসের ঢাকাকে বৈশ্বিক বায়ু দূষণের কেন্দ্রে পরিণত করা, নদীগুলো বিষের উৎসে পরিণত করাকে যারা উন্নয়ন হিসেবে দেখছেন সে সময় বেশি দূরে নয় যে, তাদের সামনে ভূতুরে অবকাঠামো দাঁড়িয়ে থাকবে-ঝড়ের মুখে, পানির সংকটে, বাতাসের বিষে প্রতিনিয়ত জীবন সংহার হবে।

একটি ন্যায্য, সহনশীল এবং প্রাকৃতিক অধিকার সুরক্ষাবান্ধব বাজেট বাজেট শুধু মানুষের নয়, প্রকৃতি ন্যায্যতা এবং স্থায়িত্বশীলতাও নিশ্চিত করবে।

এম জাকির হোসেন খান ।। প্রধান নির্বাহী, চেইঞ্জ ইনিশিয়েটিভ এবং প্রকৃতির সার্বভৌমত্ব, প্রাকৃতিক অধিকারভিত্তিক শাসন কাঠামার প্রণেতা

ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যেই নির্বাচন, এদিক-সেদিক যাওয়ার সুযোগ নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫, ১:৫৬ অপরাহ্ণ
ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যেই নির্বাচন, এদিক-সেদিক যাওয়ার সুযোগ নেই

পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যেই অনুষ্ঠিত হবে। এই সময়সীমার বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই।

শুক্রবার (২৩ মে) দুপুরে রাজধানীতে একটি প্রোগ্রাম শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা জানান।

রিজওয়ানা হাসান বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ইতোমধ্যে পরিষ্কারভাবে জানিয়েছেন যে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে।

তিনি বলেন, আমি প্রথম থেকেই বলে এসেছি যে উনি (প্রধান উপদেষ্টা) একটা সময় দিয়েছেন—ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। তার একদিনও এদিক-সেদিক হওয়ার কোনো সুযোগ আমাদের পক্ষ থেকে নেই। কাজেই এগুলো নিয়ে অন্য ধরনের কোনো কথা বলারও কোনো সুযোগ হওয়া উচিত নয়।

ড. ইউনূসের পদত্যাগ নিয়ে প্রতিক্রিয়ায় রিজওয়ানা হাসান বলেন, এখন কিছু কিছু গুরু দায়িত্ব আছে, সেগুলো পালনের সঙ্গেও তো মাসের একটা সম্পর্ক থাকতে পারে। যদি কোনো কিছু বলার থাকে, আমি নির্বাচনের প্রশ্নেও বলেছি, দায়িত্ব পালনের প্রশ্নেও বলেছি—ওটা আপনারা ওনার (প্রধান উপদেষ্টার) কাছ থেকেই শুনবেন।

চাপের প্রসঙ্গে রিজওয়ানা হাসান বলেন, ধরুন, প্রত্যাশার একটা চাপ হচ্ছে যে আমরা পারফর্ম করতে পারছি কি না। আমাদের বিবেচনায় ওটাই একমাত্র চাপ। এর বাইরে আর কোনো চাপ নেই।

তিনি আরও বলেন, আপনি এখন এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় মিটিংয়ে যাবেন—সচিবালয় থেকে যমুনা—যেতে পারবেন না, রাস্তা বন্ধ। কেন রাস্তা বন্ধ? এরকম অনেক সমস্যা আছে, যেগুলো আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান করা যায়। চাপ হচ্ছে আমাদের নিজেদের পারফরম্যান্সের। আমরা পারফর্ম করতে পারছি কি পারছি না।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, আমরা যদি আমাদের দায়িত্ব পালন করতে পারি, তাহলে আমাদের দায়িত্ব থাকাটা প্রাসঙ্গিক। আমরা যদি দায়িত্ব পালন করতে না পারি, আমাদের যার যার নিজস্ব কাজ আছে, তাহলে দায়িত্ব পালন করার আর প্রাসঙ্গিক থাকলো কি না?

আপনার কি দায়িত্ব পালন করতে পারছেন? এমন প্রশ্নের জবাব তিনি বলেন, অনেক প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে অনেক দূর এগিয়েছি। সংস্কার কমিশনগুলো তাদের প্রতিবেদন দিয়েছে, সেই প্রতিবেদনের ওপর রাজনৈতিক ঐক্য গড়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সব রাজনৈতিক দল সেখানে পার্টিসিপেট করছে। এটা কি পারা না? এটাতো পারা। আমরা একটা নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে বলে দিয়েছি যে, ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে সেটাও একটা পারা। বিচার ট্রাইব্যুনাল একটা ছিল এখন দুইটা হয়েছে, আগামীকাল থেকে ট্রায়ালার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে, কিন্তু জিনিসগুলা স্মুথ যেতে হবে। এগুলোতে কোনো রকমের প্রতিবন্ধকতা না আসে, সেটা প্রথম থেকে একটা আহ্বান ছিল। এই কাজগুলো আমরা সঠিক প্রক্রিয়াতে শেষ করতে চাই।

‘গতকালকে আমাদের মিটিংয়ের পর অনেকক্ষণ আলোচনা করেছি। মোটা দাগে আমাদের দায়িত্ব তিনটা। তিনটায় কঠিন কঠিন দায়িত্ব। একটা দায়িত্ব হচ্ছে সংস্কার, আরেকটা দায়িত্ব হচ্ছে বিচার, আরেকটা দায়িত্ব হচ্ছে নির্বাচন। শুধুমাত্র নির্বাচন করার জন্য আমরা দায়িত্ব নেইনি।’

তিনি বলেন, আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে যার যত দাবি আছে সবগুলো নিয়ে রাস্তায় বসে যাচ্ছে। রাস্তা আটকে দিচ্ছে, একদম ঢাকা শহর অচল করে দিচ্ছে। সে অচলাবস্থা নিরসনে আমরা কিছু করতে পারছি কি না? আমরা আগেও বলেছি আমরা ক্ষমতার নেইনি দায়িত্বে আছি। এই দায়িত্ব পালন করা তখনই আমাদের জন্য সম্ভব হবে, যখন আমরা সবার সহযোগিতা পাব। প্রত্যাশার বিষয়টা এক, আর দায়িত্ব পালন করার বিষয়টা আরেক। আমরা চিন্তা করেছি আসলে দায়িত্ব পালন করতে পারছে কি না।

গুজবে কান দেবেন না, বিভ্রান্ত হবেন না : সেনাবাহিনী

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫, ১:৫৪ অপরাহ্ণ
গুজবে কান দেবেন না, বিভ্রান্ত হবেন না : সেনাবাহিনী

জনগণকে গুজবে কান না দেওয়ার অনুরোধ করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।

শুক্রবার দুপুরে ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে সচেতনতামূলক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে লেখা এক পোস্টে এ আহ্বান জানায় বাহিনী।

সেনাবাহিনী বলছে, সম্প্রতি একটি স্বার্থান্বেষী মহল বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর লোগো ব্যবহার করে একটি ভুয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে, যার মাধ্যমে সাধারণ জনগণের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টির পাশাপাশি সশস্ত্র বাহিনী ও জনগণের মধ্যে বিভেদ তৈরির অপচেষ্টা চলছে।

পোস্টে আরও লেখা হয়, গুজবে কান দেবেন না, বিভ্রান্ত হবেন না। সত্যতা যাচাই করুন, সচেতন থাকুন।

এ পোস্টের সঙ্গে ভুয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তিটির ছবিও জুড়ে দেওয়া হয়।

"> ">
প্রকৃতির ভাষা ও প্রাণের চাহিদা বোঝা বাজেট ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যেই নির্বাচন, এদিক-সেদিক যাওয়ার সুযোগ নেই গুজবে কান দেবেন না, বিভ্রান্ত হবেন না : সেনাবাহিনী বীরগঞ্জে ভুয়া ফেসবুক আইডি থেকে মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন ভারত এই পরাজয় কখনোই ভুলতে পারবে না : শেহবাজ লন্ডনে সালমান এফ রহমানের ছেলে শায়ানের সম্পত্তি জব্দ এখনই রাজনীতিতে আসছেন না ডা. জোবাইদা রহমান ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখেই বাঁচতে চায় মুরসালিম এবার প্রকৃতির তাণ্ডব কাশ্মিরে, তাপমাত্রার রেকর্ড ভাঙল ৫৭ বছরের গরুর মাংসে আগুন-মাছেও অস্বস্তি, মুরগিতে ঝুঁকছেন ক্রেতারা কানের উদ্দেশে রওনা দিলেন আলিয়া বাজারে সবজির দামে কিছুটা স্বস্তি ‘পদত্যাগের’ কথা ভাবছেন ড. ইউনূস, না করার অনুরোধ নাহিদের জুলাই ঐক্য বিনষ্টের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ঢাবিতে বিক্ষোভ উপদেষ্টা মাহফুজের পর হাসনাতেরও ঐক্যের ডাক প্রধান উপদেষ্টাকে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার আহ্বান জামায়াত আমিরের ব্রাইডাল লুকে মুগ্ধতা ছড়ালেন অপু বিশ্বাস না আছে মরার ভয় না আছে হারাবার কিছু : আসিফ মাহমুদ গ্রেপ্তারের ক্ষমতা পেলেন ট্টাইব্যুনালের তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন নাহিদ ইসলাম সেনানিবাসে আশ্রয় নেওয়াদের পরিচয় প্রকাশ করল আইএসপিআর বীরগঞ্জে বীজ ডিলার ও কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত চলমান আন্দোলনের বিষয়ে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের প্রেস বিজ্ঞপ্তি নাগরিক ছাত্র ঐক্য সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা বীরগঞ্জে ট্রাক-মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৪ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু শেরপুরের বিমলের বাড়িতে মাদকের আখরা, যেন দেখার কেউ নেই! ভবানীপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের উদ্যোগে ফুটবল টুর্ণামেন্ট হবিগঞ্জের থানা পুলিশ অঞ্জাত কিশোরীর লাশ উদ্ধারের পরিচয় সনাক্তে ফেইসবুকে পোস্ট বীরগঞ্জে এনসিপি নেতা হাসনাতের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল নানা কর্মসূচীর মধ্যদিয়ে বীরগঞ্জে আন্তর্জাতিক মহান মে দিবস পালিত