খুঁজুন
শুক্রবার, ২৩শে মে, ২০২৫, ৯ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

রাজনীতির মাঠে পরাজিত হয়েছে বিএনপি

ইয়াহিয়া নয়ন প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২৩, ৯:১৯ পূর্বাহ্ণ
রাজনীতির মাঠে পরাজিত হয়েছে বিএনপি

২৮ নভেম্বর, একটা সংশয় ছিল এই দিনটি ঘিরে। বিএনপি মহাসচিব বলেছিলেন, সমাবেশ হবে শান্তিপূর্ণ। কিন্তু আমরা দেখলাম অশান্তি, আগুনে সন্ত্রাস। একজন পুলিশ সদস্য খুন হয়েছেন, অনেকে মারাত্মক আহত হয়ে হাসপাতালে আছেন। সাংবাদিক হত্যার চেষ্টা হয়েছে, অনেক সাংবাদিক জখম হয়েছেন। ইসরায়েল যেমন হাসপাতালকেও ছাড়েনি, তেমনি বিএনপি হাসপাতালে আগুন দিয়েছে, এ্যম্বুলেন্সে আগুন দিয়েছে। প্রধান বিচারপতির বাড়ি ও বিচারপতিদের কোয়ার্টারে হামলা করেছে, অডিট ভবনে আগুন দেওয়া হয়েছে, পুলিশ বক্স, পুলিশের গাড়িতেও আগুন দেওয়া হয়েছে। আর সবদোষ সরকারকে দিয়েছে, তারপর হরতালের ডাক দিয়েছে।

এক কথায়, রাজনীতির মাঠে পরাজিত হয়েছে বিএনপি। সেটা হয়েছে এই সহিংস আচরণের জন্য। বরাবরের মতো আরও একবার আন্দোলন প্রত্যাশিত ফলাফল আনতে ব্যর্থ হয়েছে বিএনপি নেতৃত্ব। অনেক উচ্চাশা তৈরি করে শেষ পর্যন্ত সহিংসতা করে, পুলিশ হত্যা করে, সাংবাদিক পিটিয়ে, গাড়িতে আগুন দিয়ে এবং হাসপাতাল পুড়িয়ে বিএনপি মূলত নিজেকে আরও কোণঠাসা করেছে। অথচ একইদিন একই সময় সহিংসতায় পারদর্শী জামায়াতে ইসলামীও সমাবেশ করেছে। কিন্তু সেই সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে হয়েছে। তাদের আচরণ ছিল অহিংস। বরং বলতে গেলে সেদিন বিএনপি রাজনৈতিক সহিংসতার নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

২০১৪ সালে পেট্রোলবোমা হামলার মধ্য দিয়ে এ দেশে প্রথমবারের মতো সাধারণ মানুষকে পুড়িয়ে মারার যে নজির দলটি সৃষ্টি করেছিল, এবার সেদিকে নতুন করে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করছে। সাধারণত সাংবাদিকরা সরকারি দল, সরকারি কর্তৃপক্ষসহ প্রভাবশালীদের আক্রমণের শিকার হন, এবার হয়েছেন বিরোধীপক্ষ দ্বারা। যাদের সংবাদ সংগ্রহে গিয়েছিল, তারাই পিটিয়ে আহত করেছে, চেস্টা করেছে হত্যা করতে। একটা বড় কাজ হলো পুলিশ পিটিয়ে হত্যা করা। এ কাজটি সেই সময়েও হয়েছে।

পুলিশের গাড়ি, পুলিশ বক্স সবই পুড়েছে হিংসার আগুনে। আন্দোলন-সংগ্রামে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর, সরকারি স্থাপনায় হামলা এ দেশে হয়েছে অতীতেও। কিন্তু কখনো হাসপাতালে হামলা দেখেনি এ দেশের মানুষ। চরম সহিংস পরিস্থিতিতেও অ্যাম্বুলেন্সকে ছাড় দেওয়ার সংস্কৃতি বহু পুরোনো। বিএনপি এবার অ্যাম্বুলেন্সও পুড়িয়েছে। এরশাদ জামানায় বা তারও আগে হরতালে সাংবাদিকদের গাড়ি আক্রমণের শিকার হয়েছে। কিন্তু একদম টার্গেট করে বিএনপিকর্মীরা যেভাবে সংবাদিকদের মেরেছে, সেটা অতীতে দেখা যায়নি। সাধারণত এসব ঝামেলা হয় সরকারি দলের সঙ্গে।

বিরোধী দলের কর্মসূচির তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে বিরোধী দলের হাতেই সাংবাদিক নিগ্রহের ঘটনা একেবারেই নজিরবিহীন। বিএনপিকর্মীরা প্রধান বিচারপতির বাসভবনেও হামলা করেছে, হামলা করেছে বিচারপতিদের কোয়ার্টারেও। সারা জীবন শত শত মিছিল গেছে এ মন্ত্রীপাড়া দিয়ে, কখনো একটা ঢিলও কেউ ছোড়েনি। বিএনপি এবার সেটাও করেছে। বাসভবনের গেট ভেঙে বাড়ির কম্পাউন্ডেও দলের কর্মীরা ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। এসবই হয়েছে পরিকল্পিত ভাবে। প্রশ্ন হচ্ছে, এসব করে কার লাভ হয়েছে?

জানুয়ারীতে নির্বাচন। বিএনপি এখন চূড়ান্ত আন্দোলন করছে। কিন্তু এটি যতটা না আন্দোলন, তার চেয়ে বেশি এক হিংসাশ্রয়ী লড়াই। সঙ্গে আছে আরও ৩০টি দল। আমরা বুঝতে পারছি যে, সামনের দিনগুলোতে আরও সংঘাত ও হিংসা অনিবার্য। দলমত নির্বিশেষে সবার উচিত গণতন্ত্রের আওয়াজ তোলা। কিন্তু সহিংসতার এমন নজির স্থাপন করে কি রাজনৈতিকভাবে লাভবান হওয়া যায়? তাদের বিদেশী মোড়লরা কি এসব কাজে খুশি হচ্ছে?

২৮ অক্টোবর ঘিরে যা কিছু হয়েছে, এর ফলাফল বিএনপির বিরুদ্ধে গেছে। বিএনপিকে আরও চেপে ধরার সুযোগ পেয়েছে সরকার ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এর মধ্যেই কিছু নমুনা দেখা যাচ্ছে। রোববার বিএনপির ডাকা হরতালের দিন সকালেই গ্রেপ্তার হয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল এবং আন্তর্জাতিকবিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেনের বাসায় তল্লাশি ও অভিযান চালিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ঘোষণা অনুযায়ী রাজপথ নিয়ন্ত্রণে রেখেছে আওয়ামী লীগ। ২৮ তারিখের মতো ২৯ তারিখেও তার ব্যত্যয় ঘটেনি। বিএনপি জেলা পর্যায়ে এবং ঢাকায় বড় বড় সমাবেশ করেছে। কিন্তু আন্দোলনে জনসম্পৃক্ততা বলতে যা বোঝায় সেটা দেখাতে পারেনি।

এর একটা বড় কারণ প্রান্তিক পর্যায়ে সরকারের করা অবকাঠামোগত সুবিধা পেয়ে মানুষের ভেতর একটা উন্নয়ন স্পৃহা সৃষ্টি হয়েছে। দ্বিতীয়ত ২০১৩ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত আন্দোলনের যে সহিংস রূপ মানুষ দেখেছিল, সেটা তাদের কাছে বারবার ফিরে আসে। ফলে একাত্ম না হয়ে সরে যায় তারা। এ কথা সত্যি যে, নির্বাচনী ব্যবস্থা নষ্ট হয়ে যাওয়া, জিনিসপত্রের চড়া দামের কারণে জনমনে সরকারের প্রতি ক্ষোভ আছে। কিন্তু মানুষ এটাও জানে যে, সেটার বিকল্প বিএনপি নয়। তাই সাধারণ জনগণ এ ধরনের আন্দোলনে সমর্থন প্রদানের পরিবর্তে সতর্ক অবস্থানে থাকছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের একদফার দাবি নিয়ে বিএনপি আওয়ামী লীগকে চাপে ফেলতে চাচ্ছে। এই ২৮ অক্টোবর ছিল সে পথের সবচেয়ে আলোচিত কর্মসূচি। বিএনপিকে চাঙ্গা রেখেছিল মার্কিন ভিসা নীতি, ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের অতি সক্রিয়তা। পুলিশ হত্যাসহ সামগ্রিক সহিংসতা উল্টো বিএনপিকেই ভিসা নীতির আওতায় বড় করে নিয়ে এসেছে।

মার্কিন সমর্থন দলটিকে কতটা বিভ্রান্ত করেছে, সেটা প্রমাণ পাওয়া গেল এক ভুয়া মার্কিন নাগরিককে নিয়ে দলের নেতাদের সংবাদ সম্মেলন। দিনব্যাপী সংঘর্ষের পর যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস থেকে একটি প্রতিনিধিদল বিএনপি কার্যালয়ে যাচ্ছে বলে খবর ছড়িয়ে পড়ে। পরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উপদেষ্টা পরিচয়ে নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন মিয়ান আরাফি নামে এক ব্যক্তি। তার পাশে দেখা যায় বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন এবং সাবেক জেনারেল সোহরাওয়ার্দীকে।

অনেক বছর আগে এক হরতালের সময় বিএনপি নেতা সাদেক হোসেন খোকা, পুলিশের হামলায় গুরুতর আহত হয়েছিলেন বলে দাবি করেছিলেন। তার সারা শরীরে রক্তমাখা ছিল এবং রক্ত ঝরছিল। এত রক্ত দেখে অনেকেই সন্দেহ করেছিলেন, পরে জানা যায় তিনি সারা গায়ে গরুর রক্ত মেখেছিলেন। সেই সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাক হোসেন এবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বাইডেনের উপদেষ্টা বলে মিয়ান আরাফি নামে একজনকে হাজির করেন দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে। সংবাদ সম্মেলনও করেন। কিন্তু মার্কিন দূতাবাস থেকে জানানো হয়, এ লোক বাইডেনের উপদেষ্টা তো নয়ই, মার্কিন প্রশাসনেরও কেউ নন, তাকে কেউ চেনে না। পুরো বিষয়টি নিয়েই হাস্যরসের সৃষ্টি হয়েছে।

দল হিসেবে বিএনপি হাসির খোরাক জুগিয়েছে। আরেকটি বিষয় প্রমাণিত হয়েছে যে, দলটির কর্মীদের মধ্যে প্রতিরোধের সাহস ও সক্ষমতা কম। পুলিশ মারমুখী হওয়ার পর অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে তারা গুটিয়ে গেছে। এমন একটি ব্যর্থ আন্দোলনের পর বিএনপিকে নতুন করে ভাবতে হবে। সরকারকে চাপে ফেলার প্রচেষ্টা ভেস্তে গেছে। দাবির মুখে বর্তমান সরকার পদত্যাগ করবে, এ ভাবনাটা ছাড়তে হবে। সব ছেড়ে বসতে হবে সংলাপে, আসতে হবে আপোষে। এর কোনো বিকল্প নেই।

 

লেখক : সাংবাদিক।

প্রকৃতির ভাষা ও প্রাণের চাহিদা বোঝা বাজেট

এম জাকির হোসেন খান
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫, ১:৫৯ অপরাহ্ণ
প্রকৃতির ভাষা ও প্রাণের চাহিদা বোঝা বাজেট

মায়ের কোলে ঘুমিয়ে থাকা শিশুর নিঃশ্বাসে হয়তো ধুলাবালি নেই, হয়তো নেই নদী হারানোর দীর্ঘশ্বাস। কিন্তু তার ভবিষ্যৎ কি আমরা নিশ্চিত করে দিচ্ছি? হয়তো নয়। কারণ আমাদের জাতীয় বাজেটে প্রকৃতির কোনো স্বর নেই, নেই নদীর জন্য বরাদ্দ, বনাঞ্চলের কান্না বা একটি তপ্ত শহরের শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার সুযোগ।

২০২৪-২৫ অর্থ বছরের বাজেট আলোচনায় জলবায়ু পরিবর্তন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কিংবা নবায়নযোগ্য জ্বালানির কথা উঠে এসেছে-তবে গণমাধ্যমে। বাস্তবে, যে দেশ প্রতিবছর ৭ হাজার কোটি টাকার বেশি ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি হয় ঘূর্ণিঝড়ের কারণে, যে দেশে প্রায় ২ লাখ ৭০ হাজার মানুষ শুধু পরিবেশ দূষণের কারণে অকালে মৃত্যুবরণ করে, সেই দেশের বাজেটে জলবায়ু ও পরিবেশ খাতে বরাদ্দ জিডিপির মাত্র ০.৭০৬ শতাংশ-এ কি উপহাস নয়?

এ অবস্থার পেছনে রয়েছে একটি ‘উন্নয়ন-বিনাশ ফাঁদ’ (Development-Destruction Trap)। উন্নয়নের নামে প্রকৃতি ধ্বংস হচ্ছে, অথচ প্রকৃতির উপর নির্ভর করেই টিকে আছে কৃষি, খাদ্য, স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা। এ সংকট সমাধানে শুধুমাত্র খাতভিত্তিক বাজেট নয়, প্রয়োজন ন্যায্যতা ও অধিকার ভিত্তিক বাজেট কাঠামো, যেখানে প্রকৃতি ও জনগণের অধিকার সম্মান পায়।

চট্টগ্রামের উপকূলীয় এক গ্রামে ঘূর্ণিঝড় রেমালের পর একজন মাঝবয়সী নারী বলেছিলেন, ‘ঘর গেছে, জমি গেছে, এখন ছেলেমেয়েকে নিয়ে শুধু চাই—জীবনটা যেন একটু নিরাপদ হয়।’ কিন্তু বাজেট সেই নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি দিতে পারেনি।

বাংলাদেশের বাজেট প্রণয়ন ধারণাটি এখনো প্রকৃতিকে বোঝে না। প্রকৃতিকে ‘ব্যয়যোগ্য’ হিসেবে দেখা হয়, সংরক্ষণ নয়।

পানি উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ কমেছে; স্বাস্থ্য খাতে বাড়লেও তা নগণ্য; দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বরাদ্দ কমেছে মূল্যস্ফীতির হিসাব কষলে। আশ্চর্যজনক হলো, সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল যেমন রংপুর ও সুনামগঞ্জে জনপ্রতি বরাদ্দ সবচেয়ে কম, বরিশালের তুলনায় প্রায় ৯ গুণ কম। এই বৈষম্য কেবল অর্থনৈতিক নয়, এটি নৈতিক ব্যর্থতাও।

বাংলাদেশের বাজেট প্রণয়ন ধারণাটি এখনো প্রকৃতিকে বোঝে না। প্রকৃতিকে ‘ব্যয়যোগ্য’ হিসেবে দেখা হয়, সংরক্ষণ নয়। অথচ যুক্তরাষ্ট্রের এনভায়রনমেন্টাল প্রটেকশন এজেন্সির মতে, $১ বিনিয়োগ করলে পরিবেশগত প্রতিরক্ষা থেকে $৩০ পর্যন্ত আর্থিক সুবিধা আসে—ব্যবসা ভাষায় যাকে বলে বিনিয়োগের রিটার্ন।

আমাদের মাটি, জল, বাতাস আর জীববৈচিত্র্য আজ বিনষ্ট। এ বিনাশের খরচ কেবল সরকারি হিসাব নয়, প্রতিটি পরিবারের নিত্য জীবনের ভোগান্তি। সুস্থ বাচ্চা জন্ম দিতে না পারা এক মায়ের কান্নায়, গর্ভবতী নারীর ফুসফুসে জমে থাকা ধুলোয়, মাছের খাঁচা ভেসে যাওয়া একজন মৎস্যজীবীর অসহায়তায় সেই খরচ ধরা পড়ে।

তাহলে কেমন হওয়া উচিত প্রকৃতি-পরিবেশ বান্ধব বাজেট?

আমাদের প্রস্তাব একটি কাঠামোগত সংস্কারের দৃষ্টিভঙ্গি:

ক) প্রকৃতিকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি: বাংলাদেশের উচ্চ আদালতের নদীকে জীবন্ত সত্তা হিসেবে প্রদত্ত রায়কে মেনে সরকারের দ্রুত সমুদ্র, বন, পাহাড়কে ‘জীবন্ত সত্তা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে ‘প্রাকৃতিক অধিকার আইন’ প্রণয়ন করুন, যা প্রকৃতি ন্যায্যতাও। শুধু প্রকল্প বা কর্মসূচিতে প্রকৃতি নয়, প্রকৃতির নিজস্ব অস্তিত্বকে স্বীকার করুন এবং প্রাকৃতিক আইন মেনে অর্থায়ন করুন।

খ) ভূমি ও নদী ব্যবস্থাপনায় ন্যায্যতা: ঝুঁকির ভিত্তিতে অগ্রাধিকার দিন। সুনামগঞ্জ, রংপুর, কুড়িগ্রামের মতো জেলাগুলোয় পৃথক ‘ঝুঁকি সামলানো তহবিল’ গঠন করা দরকার।

গ) রাজস্ব উৎস হিসেবে সবুজ কর: কার্বন কর, দূষণ ফি ও পরিবেশ সংরক্ষণ ফি থেকে বছরে ৩ থেকে ৫ বিলিয়ন ডলার রাজস্ব আনা সম্ভব।

  • ইটভাটা, সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক, দূষণকারী পণ্য ও পরিবহন ও জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর পরিবেশ সুরক্ষা কর এবং কার্বন করারোপ করুন। মাত্র ১০ শতাংশ হারে এ ধরনের করারোপে প্রায় এক থেকে দেড় বিলিয়ন ডলার জোগান দেওয়া সম্ভব

(সূত্র: চেইঞ্জ ইনিশিয়েটিভ স্টাডি, ২০২৪)।

  • বরাদ্দের পরিমাণ: পরিবেশ, জলবায়ু ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে প্রকৃত বা পরিবেশ ও প্রকৃতির ক্ষয়-ক্ষতি বাদে প্রাক্কলিত নেট জিডিপির অন্তত ২০ শতাংশ বরাদ্দ দিতে হবে প্রকৃতির সুরক্ষা এবং কমিউনিটি নেতৃত্বাধীন রেজিলিয়েন্স নিশ্চিতে-

–               কৃষি খাতে: জিডিপির ৫ শতাংশ

–               পানি খাতে: ৫ শতাংশ

–               জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা ও পুষ্টি খাতে: ৫ শতাংশ

–               প্রাকৃতিক সুরক্ষা এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায়: ৫ শতাংশ

সুস্থ বাচ্চা জন্ম দিতে না পারা এক মায়ের কান্নায়, গর্ভবতী নারীর ফুসফুসে জমে থাকা ধুলোয়, মাছের খাঁচা ভেসে যাওয়া একজন মৎস্যজীবীর অসহায়তায় সেই খরচ ধরা পড়ে।

এই মুহূর্তে প্রশ্ন একটাই: আমরা কাকে বাঁচাতে চাই?

শুধু দালান, সড়ক আর মেগা প্রকল্পে কষ্টার্জিত বিনিয়োগ করলেও পানি, নিচে মাটি থাকবে তো? নদী কি থাকবে? মাছ এবং বীজ কি মাইক্রোপ্লাষ্টিক মুক্ত থাকবে?

প্রকৃতিকে বাদ দিয়ে তথাকথিত ধ্বংসাত্মক উন্নয়নকে বেছে নিলে পরিণতি কী হয় তা জানার জন্য সভ্যতাগুলো হারিয়ে যাওয়ার ইতিহাস পড়া উচিত ‘আমি সব জানি’ নীতিনির্ধারক এবং বিশেষজ্ঞদের।

প্রকৃতি প্রদত্ত সুজলা সুফলা বাংলাদেশের সাড়ে বারোশো নদী থেকে মাত্র ২৫০ এর মতো নদী বেচে থাকা, নির্মল বাতাসের ঢাকাকে বৈশ্বিক বায়ু দূষণের কেন্দ্রে পরিণত করা, নদীগুলো বিষের উৎসে পরিণত করাকে যারা উন্নয়ন হিসেবে দেখছেন সে সময় বেশি দূরে নয় যে, তাদের সামনে ভূতুরে অবকাঠামো দাঁড়িয়ে থাকবে-ঝড়ের মুখে, পানির সংকটে, বাতাসের বিষে প্রতিনিয়ত জীবন সংহার হবে।

একটি ন্যায্য, সহনশীল এবং প্রাকৃতিক অধিকার সুরক্ষাবান্ধব বাজেট বাজেট শুধু মানুষের নয়, প্রকৃতি ন্যায্যতা এবং স্থায়িত্বশীলতাও নিশ্চিত করবে।

এম জাকির হোসেন খান ।। প্রধান নির্বাহী, চেইঞ্জ ইনিশিয়েটিভ এবং প্রকৃতির সার্বভৌমত্ব, প্রাকৃতিক অধিকারভিত্তিক শাসন কাঠামার প্রণেতা

ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যেই নির্বাচন, এদিক-সেদিক যাওয়ার সুযোগ নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫, ১:৫৬ অপরাহ্ণ
ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যেই নির্বাচন, এদিক-সেদিক যাওয়ার সুযোগ নেই

পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যেই অনুষ্ঠিত হবে। এই সময়সীমার বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই।

শুক্রবার (২৩ মে) দুপুরে রাজধানীতে একটি প্রোগ্রাম শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা জানান।

রিজওয়ানা হাসান বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ইতোমধ্যে পরিষ্কারভাবে জানিয়েছেন যে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে।

তিনি বলেন, আমি প্রথম থেকেই বলে এসেছি যে উনি (প্রধান উপদেষ্টা) একটা সময় দিয়েছেন—ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। তার একদিনও এদিক-সেদিক হওয়ার কোনো সুযোগ আমাদের পক্ষ থেকে নেই। কাজেই এগুলো নিয়ে অন্য ধরনের কোনো কথা বলারও কোনো সুযোগ হওয়া উচিত নয়।

ড. ইউনূসের পদত্যাগ নিয়ে প্রতিক্রিয়ায় রিজওয়ানা হাসান বলেন, এখন কিছু কিছু গুরু দায়িত্ব আছে, সেগুলো পালনের সঙ্গেও তো মাসের একটা সম্পর্ক থাকতে পারে। যদি কোনো কিছু বলার থাকে, আমি নির্বাচনের প্রশ্নেও বলেছি, দায়িত্ব পালনের প্রশ্নেও বলেছি—ওটা আপনারা ওনার (প্রধান উপদেষ্টার) কাছ থেকেই শুনবেন।

চাপের প্রসঙ্গে রিজওয়ানা হাসান বলেন, ধরুন, প্রত্যাশার একটা চাপ হচ্ছে যে আমরা পারফর্ম করতে পারছি কি না। আমাদের বিবেচনায় ওটাই একমাত্র চাপ। এর বাইরে আর কোনো চাপ নেই।

তিনি আরও বলেন, আপনি এখন এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় মিটিংয়ে যাবেন—সচিবালয় থেকে যমুনা—যেতে পারবেন না, রাস্তা বন্ধ। কেন রাস্তা বন্ধ? এরকম অনেক সমস্যা আছে, যেগুলো আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান করা যায়। চাপ হচ্ছে আমাদের নিজেদের পারফরম্যান্সের। আমরা পারফর্ম করতে পারছি কি পারছি না।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, আমরা যদি আমাদের দায়িত্ব পালন করতে পারি, তাহলে আমাদের দায়িত্ব থাকাটা প্রাসঙ্গিক। আমরা যদি দায়িত্ব পালন করতে না পারি, আমাদের যার যার নিজস্ব কাজ আছে, তাহলে দায়িত্ব পালন করার আর প্রাসঙ্গিক থাকলো কি না?

আপনার কি দায়িত্ব পালন করতে পারছেন? এমন প্রশ্নের জবাব তিনি বলেন, অনেক প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে অনেক দূর এগিয়েছি। সংস্কার কমিশনগুলো তাদের প্রতিবেদন দিয়েছে, সেই প্রতিবেদনের ওপর রাজনৈতিক ঐক্য গড়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সব রাজনৈতিক দল সেখানে পার্টিসিপেট করছে। এটা কি পারা না? এটাতো পারা। আমরা একটা নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে বলে দিয়েছি যে, ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে সেটাও একটা পারা। বিচার ট্রাইব্যুনাল একটা ছিল এখন দুইটা হয়েছে, আগামীকাল থেকে ট্রায়ালার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে, কিন্তু জিনিসগুলা স্মুথ যেতে হবে। এগুলোতে কোনো রকমের প্রতিবন্ধকতা না আসে, সেটা প্রথম থেকে একটা আহ্বান ছিল। এই কাজগুলো আমরা সঠিক প্রক্রিয়াতে শেষ করতে চাই।

‘গতকালকে আমাদের মিটিংয়ের পর অনেকক্ষণ আলোচনা করেছি। মোটা দাগে আমাদের দায়িত্ব তিনটা। তিনটায় কঠিন কঠিন দায়িত্ব। একটা দায়িত্ব হচ্ছে সংস্কার, আরেকটা দায়িত্ব হচ্ছে বিচার, আরেকটা দায়িত্ব হচ্ছে নির্বাচন। শুধুমাত্র নির্বাচন করার জন্য আমরা দায়িত্ব নেইনি।’

তিনি বলেন, আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে যার যত দাবি আছে সবগুলো নিয়ে রাস্তায় বসে যাচ্ছে। রাস্তা আটকে দিচ্ছে, একদম ঢাকা শহর অচল করে দিচ্ছে। সে অচলাবস্থা নিরসনে আমরা কিছু করতে পারছি কি না? আমরা আগেও বলেছি আমরা ক্ষমতার নেইনি দায়িত্বে আছি। এই দায়িত্ব পালন করা তখনই আমাদের জন্য সম্ভব হবে, যখন আমরা সবার সহযোগিতা পাব। প্রত্যাশার বিষয়টা এক, আর দায়িত্ব পালন করার বিষয়টা আরেক। আমরা চিন্তা করেছি আসলে দায়িত্ব পালন করতে পারছে কি না।

গুজবে কান দেবেন না, বিভ্রান্ত হবেন না : সেনাবাহিনী

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫, ১:৫৪ অপরাহ্ণ
গুজবে কান দেবেন না, বিভ্রান্ত হবেন না : সেনাবাহিনী

জনগণকে গুজবে কান না দেওয়ার অনুরোধ করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।

শুক্রবার দুপুরে ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে সচেতনতামূলক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে লেখা এক পোস্টে এ আহ্বান জানায় বাহিনী।

সেনাবাহিনী বলছে, সম্প্রতি একটি স্বার্থান্বেষী মহল বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর লোগো ব্যবহার করে একটি ভুয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে, যার মাধ্যমে সাধারণ জনগণের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টির পাশাপাশি সশস্ত্র বাহিনী ও জনগণের মধ্যে বিভেদ তৈরির অপচেষ্টা চলছে।

পোস্টে আরও লেখা হয়, গুজবে কান দেবেন না, বিভ্রান্ত হবেন না। সত্যতা যাচাই করুন, সচেতন থাকুন।

এ পোস্টের সঙ্গে ভুয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তিটির ছবিও জুড়ে দেওয়া হয়।

"> ">
প্রকৃতির ভাষা ও প্রাণের চাহিদা বোঝা বাজেট ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যেই নির্বাচন, এদিক-সেদিক যাওয়ার সুযোগ নেই গুজবে কান দেবেন না, বিভ্রান্ত হবেন না : সেনাবাহিনী বীরগঞ্জে ভুয়া ফেসবুক আইডি থেকে মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন ভারত এই পরাজয় কখনোই ভুলতে পারবে না : শেহবাজ লন্ডনে সালমান এফ রহমানের ছেলে শায়ানের সম্পত্তি জব্দ এখনই রাজনীতিতে আসছেন না ডা. জোবাইদা রহমান ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখেই বাঁচতে চায় মুরসালিম এবার প্রকৃতির তাণ্ডব কাশ্মিরে, তাপমাত্রার রেকর্ড ভাঙল ৫৭ বছরের গরুর মাংসে আগুন-মাছেও অস্বস্তি, মুরগিতে ঝুঁকছেন ক্রেতারা কানের উদ্দেশে রওনা দিলেন আলিয়া বাজারে সবজির দামে কিছুটা স্বস্তি ‘পদত্যাগের’ কথা ভাবছেন ড. ইউনূস, না করার অনুরোধ নাহিদের জুলাই ঐক্য বিনষ্টের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ঢাবিতে বিক্ষোভ উপদেষ্টা মাহফুজের পর হাসনাতেরও ঐক্যের ডাক প্রধান উপদেষ্টাকে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার আহ্বান জামায়াত আমিরের ব্রাইডাল লুকে মুগ্ধতা ছড়ালেন অপু বিশ্বাস না আছে মরার ভয় না আছে হারাবার কিছু : আসিফ মাহমুদ গ্রেপ্তারের ক্ষমতা পেলেন ট্টাইব্যুনালের তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন নাহিদ ইসলাম সেনানিবাসে আশ্রয় নেওয়াদের পরিচয় প্রকাশ করল আইএসপিআর বীরগঞ্জে বীজ ডিলার ও কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত চলমান আন্দোলনের বিষয়ে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের প্রেস বিজ্ঞপ্তি নাগরিক ছাত্র ঐক্য সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা বীরগঞ্জে ট্রাক-মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৪ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু শেরপুরের বিমলের বাড়িতে মাদকের আখরা, যেন দেখার কেউ নেই! ভবানীপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের উদ্যোগে ফুটবল টুর্ণামেন্ট হবিগঞ্জের থানা পুলিশ অঞ্জাত কিশোরীর লাশ উদ্ধারের পরিচয় সনাক্তে ফেইসবুকে পোস্ট বীরগঞ্জে এনসিপি নেতা হাসনাতের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল নানা কর্মসূচীর মধ্যদিয়ে বীরগঞ্জে আন্তর্জাতিক মহান মে দিবস পালিত