ছোনকা হাইস্কুলে শিক্ষকদের গ্রুপিংয়ের স্বীকার অভিযুক্ত শিক্ষিকা

মোঃ নজরুল ইসলাম জাকি: বগুড়ার শেরপুরের ঐতিহ্যবাহী স্কুল ছোনকা দ্বি-মূখী উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের গ্রুপিংয়ের স্বীকার হলেন সিনিয়র শিক্ষিকা ফাতেমা খাতুন। জানা গেছে, গত ১২ সেপ্টেম্বর স্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্র/ছাত্রীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে শিক্ষকা কতৃক মারধরের স্বীকার হয় কাউসার, মীম, নুরাইয়া সহ কয়েকজন ছাত্র/ছাত্রী। এ প্রেক্ষিতে তারা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা গ্রহন করে এবং অভিযুক্ত শিক্ষিকার বিরুদ্ধে প্রধান শিক্ষিকা কর্তৃক ইউএনও এবং স্থানীয় চেয়ারম্যানের নিকট অভিযোগ পত্র দাখিল করেন বলে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০ ঘটিকায় স্কুলের ছাত্র/ছাত্রীরা জাতীয় সংগীত ও কিছু ফিজিকাল এক্সার সাইজ পরিবেশনের মাধ্যমে স্কুলের দৈনন্দিন কাজ শুরু করা হয়। প্রথমেই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা খুরশিদী খুদার অনুমোতি নিয়ে নবম, দশম ও অষ্টম শ্রেণী কক্ষে প্রবেশ করে ছাত্র/ছাত্রীদের বক্তব্য নেওয়া হয়।
শিক্ষিকা ফাতেমা কেন তাদের মারধর করলেন ?
নবম শ্রেণীর ছাত্র কাউসার অভিযুক্ত শিক্ষিকার পোশাক, ক্লাসে শিক্ষকতার মান এবং চরিত্র সম্পর্কে অভিযোগ করেন। এটা শুনে অভিযুক্ত ফাতেমা ক্লাসে এসে অভিযোগ কারী কয়েকজন ছাত্র ছাত্রীকে মারধর করেন।
ক্লাসে উপস্থিত ছাত্র/ছাত্রীদের কাছে জানতে নবম শ্রেণীর সবাই অভিযোগ সত্য দাবি করেন এবং ১২ অক্টোবর ক্লাস বর্জন করেন কিন্তু দশম শ্রেনীর ছাত্র/ছাত্রীদের মধ্যে হাবিবুল্লাহ,বর্ণা, ইসরাত জাহান তিথি, লিজা এবং অষ্টম শ্রেণীর নিরব হোসেন সহ সবাই শিক্ষিকা ফাতেমা খাতুনের পোশাক ও শিক্ষকতার মান নিয়ে তার প্রশংসা করেন।
শিক্ষিকার বিরুদ্ধে কেন এত অভিযোগ ?
জানা গেছে, শিক্ষক শিক্ষিকার মধ্যে কিছুদিন যাবৎ গ্রপিং হয়েছে। বর্তমান প্রধান শিক্ষিকা দায়িত্ব গ্রহনের পর থেকে প্রতিপক্ষ শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অভিযোগের পরিমান বেশি হয়েছে।
এ ব্যাপারে শিক্ষিকা ইনুয়ারা এবং শিক্ষক দিলফুজার রহমান রিপন জানান, বর্তমানে শিক্ষকদের মধ্যে ব্যাপক গ্রুপিং হয়েছে । আমরা একসাথে করার বিভিন্ন চেষ্টা করেও সফল হইনি। বিপক্ষ গ্রুপিংয়ের শিক্ষকরা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকাকে না জানিয়ে অথবা অন্য কারো মারফতে দরখাস্থ দিয়ে ছুটি কাটান।
তবে স্থানীয়রা জানান, শিক্ষকদের মধ্যে ব্যাপক গ্রুপিংয়ের কারনে নবম শ্রেণীর একজন ছাত্র শিক্ষিকার পোশাক, আচার ব্যবহার নিয়ে অভিযোগ করা সাহস পান।
এ প্রেক্ষিতে স্কুলের সাবেক সদস্য আব্দুল হামিদ জানান, শিক্ষকদের মধ্যে গ্রুপিং এটা আমার জানা কিন্তু নবম শ্রেণীর একজন ছাত্র শিক্ষকের পোশাক নিয়ে কথা বলবে এটা মেনে নিতে পারছি না। এই যদি অবস্থা হয় তবে ছেলেরা কি লেখা পড়া করবে?
এ ব্যাপারে স্কুলের সাবেক সভাপতি এস এম আরিফুজ্জামান মৃদুল জানান, আমি যখন সভাপতি ছিলাম তখন স্কুলের মান অত্যন্ত ভালো ছিলো কিন্তু বর্তমানে স্কুলের এই অবস্থা । স্কুলের ছাত্র ছাত্রীরা শিক্ষকদের মা বাবা মনে করবে কিন্তু আমার মনে হয় তৃতীয় পক্ষের কোন যোগসাজসে ছাত্র ছাত্রীরা অভিযোগ করার সাহস পেয়েছে। এই স্কুলের ভবিষ্যৎ কি হবে এবং ঐতিহ্যবাহি ছোনকা হাইস্কুলের সম্মান ভুলুন্ঠিত হয়েছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষিকা বলেন, আমি নবম শ্রেণীর ছাত্র ছাত্রীদের অভিযোগ শুনে রাগ নিয়ন্ত্রনে রাখতে পারিনি। যাদের আমি সন্তানের মত দেখি, আমার সন্তানের চেয়েও ওরা ছোট, তাদের নিকট থেকে এমন অভিযোগ মেনে নিতে পারি নাই।
এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষকা খুরশিদী খুদা জানান, তার ব্যাপারে আমার কাছে ইতি পূর্বেও মৌখিক অভিযোগ এসেছে এবং গত তারিখে অভিযোগ পেয়েছি। অভিযুক্ত শিক্ষিকা যদি রাগ নিয়ন্ত্রন করতে পারতেন তবে ভালো হত। আমি একজন অভিভাবকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহি অফিসারের নিকট অভিযোগ পত্র প্রেরণ করেছি।
আপনার মতামত লিখুন