উদ্বোধন ২৮ অক্টোবর
বঙ্গবন্ধু টানেলের নিরাপত্তায় সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে: মুখ্য সচিব

কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে নির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের নিরাপত্তায় সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া। তিনি জানান, ২৮ অক্টোবর টানেল উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় টানেল পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের একথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল বর্তমান সরকারের একটি সিগনেচার প্রজেক্ট। প্রকৌশলীরা দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। ২৮ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটি উদ্বোধন করবেন।
তিনি আরও বলেন, এ টানেল শুধু দুই প্রান্তের সংযোগ করবে না, টানেলটি ওয়ান সিটি টু টাউন কনসেপ্টে নির্মিত হয়েছে। টানেলের উদ্দেশ্য হচ্ছে এশিয়ান হাইওয়ের সঙ্গে যুক্ত হওয়া। টানেলের কারণে পুরো এলাকায় অবকাঠামোগতসহ নানা উন্নয়ন হচ্ছে।
টানেলের নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন, টানেলের নিরাপত্তার জন্য দুই প্রান্তে থানা পুলিশের পাশাপাশি টুরিস্ট পুলিশ থাকবে। কোস্টগার্ডও নিরাপত্তা দেবে। নিরাপত্তার বিষয়টি আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছি। নিরাপত্তার স্বার্থে যখন যা প্রয়োজন হয়েছে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
মুখ্য সচিব বলেন, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে ১৮ মিটার থেকে ৩১ মিটার নিচ দিয়ে টানেল গেছে। এতে কক্সবাজারের সঙ্গে যোগাযোগও সহজ হবে। এসময় নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো.মোস্তফা কামাল,বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) চেয়ারম্যান ইউসুফ হারুন, চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ তোফায়েল ইসলাম, চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি নূরে আলম মিনা, সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়, জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, জেলা পুলিশ সুপার এ কে এম শফিউল্লাহ, টানেলের প্রকল্প পরিচালক হারুন অর রশিদ উপস্থিত ছিলেন।
টানেলের প্রকল্প পরিচালক সাংবাদিকদের বলেন, টানেল ব্যবহারের জন্য শতভাগ প্রস্তুত। এরই মধ্যে আমরা ফিল্ড টেস্ট করেছি। ২৩ সেপ্টেম্বর পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসের সমন্বয়ের ইমার্জেন্সি মুডে ট্রায়াল করবো।
ভূমিকম্প ও জলোচ্ছ্বাসে টানেলে কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে কি না জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক বলেন, দুটো ফ্লাডগেট আছে, গত সাইক্লোনে ট্রায়াল করে দেখা হয়েছে। পর্যালোচনা করে দেখা হয়েছে জলোচ্ছ্বাসে কোনো সমস্যা হবে না। এছাড়া টানেলটি নদীর পৃষ্ট থেকে ১৮-৩১ মিটার গভীরে স্থাপন করা। এখানে ভূমিকম্পের প্রভাব পড়বে না। ভূমিকম্পে টানেল নিরাপদ থাকবে।
টানেল নির্মাণে মোট ব্যয় প্রায় ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ও চীন সরকার ‘জিটুজি’ অর্থায়নে টানেলটি নির্মাণ করেছে। এরমধ্যে বাংলাদেশ সরকার দিচ্ছে চার হাজার ৪৬১ কোটি টাকা। বাকি পাঁচ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা দিচ্ছে চীন সরকার।
২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণকাজে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনা প্রেসিডেন্ট শিং জিনপিং।
এরপর ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম টানেল টিউবের বোরিং কাজের উদ্বোধন করেন। ৩ দশমিক ৪৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এ টানেল নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে চীনা প্রতিষ্ঠান চায়না কমিউনিকেশন অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন কোম্পানি।
ইউকে/এনসিআর
আপনার মতামত লিখুন