খুঁজুন
শুক্রবার, ২৩শে মে, ২০২৫, ৯ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

ইসরায়েলের স্থল অভিযান কেমন হবে, সফল হতে পারবে সেনারা?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক প্রকাশিত: শুক্রবার, ১৩ অক্টোবর, ২০২৩, ১০:৩৪ অপরাহ্ণ
ইসরায়েলের স্থল অভিযান কেমন হবে, সফল হতে পারবে সেনারা?

ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের হামলার প্রতিশোধ নিতে গাজা উপত্যকায় স্থল অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

স্থল হামলার আগে— ইহুদিবাদী ইসরায়েলের সেনাবাহিনী গাজার উত্তরাঞ্চলের ১১ লাখ বাসিন্দাকে দক্ষিণ দিকে সরে যেতে বলেছে। এরমধ্যে গাজার কাছে তারা ৩ লাখ সেনা, ট্যাংকসহ অত্যাধুনিক যুদ্ধাস্ত্র জড়ো করেছে।

তবে গাজার মতো জনবহুল এলাকায় সেনা পাঠানোর বিষয়টি একটি ঝুঁকিপূর্ণ অভিযান হবে।

গাজায় ইসরায়েলের স্থল অভিযান কেমন হবে, এটির পরিধি কেমন হবে এবং কতদিন চলবে এ বিষয়টি নিশ্চিত নয়।

কখন শুরু হতে পারে স্থল হামলা?

র্বে স্থল অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া মেজর জেনারেল আমস গিলিড বলেছেন, হামলা শুরুর আগে ইসরায়েলের প্রধান কাজ ছিল— সাধারণ মানুষের সমর্থন পাওয়ার জন্য একটি জরুরি সরকার গঠন। সেটি হয়ে গেছে।

এছাড়া সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের যেসব উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ইসরায়েল সফর করেছেন তারা স্থল অভিযানের ক্ষেত্রে সবুজ সংকেত দিয়েছেন। তবে বেসামরিক মানুষ— এমনকি সেনাদের মধ্যে হতাহত কেমন হবে সে বিষয়টিও এই স্থল অভিযানের বিষয়টি ঠিক করবে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, তারা ইসরায়েলের কয়েকজন রিজার্ভ সেনার সঙ্গে কথা বলেছে। যাদের সবার মধ্যে যুদ্ধ করার আকাঙ্খা রয়েছে এবং তারা গাজায় সামরিক হামলা চালাতে মনের দিক দিয়ে উজ্জীবিত আছে।

বিবিসি নিসিম নামের এক রিজার্ভ সেনার কথা উল্লেখ করেছে। এই সেনা হামাসের হামলার সময় শ্রীলঙ্কায় ছিলেন। কিন্তু হামলার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যুদ্ধে যোগ দিতে ইসরায়েলে ফিরে এসেছেন তিনি।

বিবিসি জানিয়েছে, ইসরায়েলিদের মধ্যে এখন উদ্দীপনা এবং ঐক্য দেখা যাচ্ছে এবং তারা সবাই মনে করে গাজায় হামলা চালানো উচিত। তবে গাজায় হামলা চালানোর নির্দেশ যত দেরিতে দেওয়া হবে তাদের মধ্য থেকে সেই উদ্দীপনা কমে যেতে পারে।

ইসরায়েল যেহেতু শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) ফিলিস্তিনিদের গাজার উত্তর দিক থেকে দক্ষিণ দিতে সরে যেতে মাত্র ২৪ ঘণ্টার সময় বেধে দিয়েছে; এটির অর্থ হলো তারা যে কোনো সময় হামলা শুরু করবে।

হামলার প্রস্তুতি

হামাস হামলা চালানোর পর ইসরায়েলের প্রথম কাজ ছিল— হামাসের যেসব যোদ্ধা ইসরায়েলে প্রবেশ করেছেন তাদের হত্যা করা, আটক করা এবং ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর উপর পুনরায় নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা।

ইসরায়েলে একটি গানের উৎসবে হামলার পর সেখানে টহল দিতে দেখা যায় ইসরায়েলি সেনাদের

স্থল হামলার প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ইতিমধ্যে গাজায় ব্যাপক বোমা হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বিমানবাহিনী। তারা যুদ্ধের প্রথম ৬ দিনেই গাজায় ৬ হাজার বোমা ফেলেছে। যেখানে পুরো ২০১১ সাল জুড়ে ন্যাটো লিবিয়ায় ৭ হাজার ৭০০ বোমা ফেলেছিল। গাজায় ইসরায়েলিদের নির্বিচার বিমান হামলায় এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৮০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

গাজায় অভিযান কেমন হবে সেটি গোপন রাখবে ইসরায়েল। তবে সেখানে এ ধরনের অভিযান চালানার জন্য কয়েক বছর ধরে প্রস্তুতি নিয়েছে ইসরায়েল। গাজার মতো শহরে কীভাবে হামলা চালানো হবে সে ব্যাপারে নিজ সেনাদের বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করে প্রস্তুত করেছে তারা।

শহুরে যুদ্ধ এবং হামাসের গোপন সুড়ঙ্গ

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা মেজর জেনারেল ইয়াকোভ আমিদরোর স্বীকার করেছেন— হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ অনেক কঠিন হবে। কারণ সশস্ত্র এ গোষ্ঠী গাজার প্রবেশদ্বারে এবং ইসরায়েলি বাহিনীর পথে বিভিন্ন ফাঁদ পাতবে এবং বিস্ফোরক স্থাপন করবে।

ইসরায়েলের বিশ্বাস হামাসের ৩০ হাজার যোদ্ধা রয়েছে।  আর তাদের কাছে রয়েছে অটোমেটিক রাইফেল, রকেট প্রপেলড গ্রেনেড এবং ট্যাংক বিধ্বংসী অস্ত্র— যেগুলোর কিছু কিছু রাশিয়ার কর্নেটস এবং ফাগোটসের।

এছাড়া হামাসের কাছে প্রচুর রকেট রয়েছে। যেগুলো তারা যুদ্ধের শুরু থেকেই ছুড়ে আসছে।

মেজর জেনারেল ইয়াকোভ আরও জানিয়েছেন, হামাস নিজেই আত্মঘাতীসহ কিছু ছোট ড্রোন উৎপাদন করছে। এছাড়া হামাসের কাছে স্বল্প সংখ্যক স্বল্পপাল্লার সোল্ডার-লঞ্চড সারফেস টু এয়ার ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। কিন্তু তাদের কাছে যেসব অস্ত্র নেই সেগুলো হলো— ট্যাংক, সাঁজোয়া যান এবং কামান; যেগুলো ইসরায়েলের রয়েছে।

হামাসের সেনাদের কাছে অটোমেটিক রাইফেলসহ বিভিন্ন অস্ত্র রয়েছে

ইসরায়েলের জন্য যেটি কঠিন হবে সেটি হলো জনবহুল শহরে যুদ্ধ করা।

তবে সুড়ঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য ইসরায়েলের বিশেষ বাহিনী রয়েছে।

তিনি জানিয়েছেন, খুব বেশি প্রয়োজন না পড়লে ইসরায়েল হামাসের গোপন সুড়ঙ্গে প্রবেশ করবে না। তবে হামাস এসব সুড়ঙ্গ সম্পর্কে বেশি জানে এ কারণে নয়। এর বদলে এসব সুড়ঙ্গ বিস্ফোরক ব্যবহার করে ধ্বংস করে দেওয়ার চেষ্টা করবে ইসরায়েলি বাহিনী।

ইসরায়েলের লক্ষ্য কী?

ইসরায়েলের লক্ষ্য হলো হামাসকে সামরিকভাবে দুর্বল ও নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া।

মেজর জেনারেল গিলিড, ‍যিনি ইসরায়েলের সেনাবাহিনীতে ৩০ বছর কাজ করেছেন, তিনি বলেছেন, এবার ইসরায়েলের লক্ষ্য বড় কিছু। এর আগে ইসরায়েল গাজায় যেসব স্থল হামলা চালিয়েছিল— সেগুলোর লক্ষ্য ছিল হামাসকে আটকে রাখা। কিন্তু এবার এমন কিছু করা হবে যেন, ইসরায়েলের অন্যান্য আঞ্চলিক শত্রু ইরান ও হিজবুল্লাহ যেন এ থেকে শিক্ষা নেয়।

অপরদিকে মেজর জেনারেল ইয়াকোভ বলেছেন, এবার ইসরায়েলের লক্ষ্য হলো হামাসের সামরিক সক্ষমতা ধ্বংস করে দেওয়া। যেন তারা পুনরায় ইসরায়েলে আর কোনো হামলা চালাতে না পারে।

তবে সাম্প্রতিক ইতিহাস বলছে— স্থল অভিযান যে লক্ষ্য নিয়ে শুরু করা হয়, সেটি খুব কমই অর্জিত হয়।

যুদ্ধ বিষয়ক পর্যবেক্ষক সংস্থা ইনস্টিটিউট অব স্ট্রেটেজিক স্টাডিসের লেফটেনেন্ট জেনারেল স্যার টম বেকেট বিবিসিকে বলেছেন, মাত্র ৪০ কিলোমিটার লম্বা গাজায় সামরিক অভিযানের ফলাফল কী হবে সেটি বেশ পরিষ্কার। তার মতে, হামাসকে হয়ত নির্মূল করা হবে। কিন্তু রাজনৈতিক দল হিসেবে হামাসের যে সমর্থন সেটি থেকেই যাবে।

সূত্র: বিবিসি

প্রকৃতির ভাষা ও প্রাণের চাহিদা বোঝা বাজেট

এম জাকির হোসেন খান
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫, ১:৫৯ অপরাহ্ণ
প্রকৃতির ভাষা ও প্রাণের চাহিদা বোঝা বাজেট

মায়ের কোলে ঘুমিয়ে থাকা শিশুর নিঃশ্বাসে হয়তো ধুলাবালি নেই, হয়তো নেই নদী হারানোর দীর্ঘশ্বাস। কিন্তু তার ভবিষ্যৎ কি আমরা নিশ্চিত করে দিচ্ছি? হয়তো নয়। কারণ আমাদের জাতীয় বাজেটে প্রকৃতির কোনো স্বর নেই, নেই নদীর জন্য বরাদ্দ, বনাঞ্চলের কান্না বা একটি তপ্ত শহরের শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার সুযোগ।

২০২৪-২৫ অর্থ বছরের বাজেট আলোচনায় জলবায়ু পরিবর্তন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কিংবা নবায়নযোগ্য জ্বালানির কথা উঠে এসেছে-তবে গণমাধ্যমে। বাস্তবে, যে দেশ প্রতিবছর ৭ হাজার কোটি টাকার বেশি ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি হয় ঘূর্ণিঝড়ের কারণে, যে দেশে প্রায় ২ লাখ ৭০ হাজার মানুষ শুধু পরিবেশ দূষণের কারণে অকালে মৃত্যুবরণ করে, সেই দেশের বাজেটে জলবায়ু ও পরিবেশ খাতে বরাদ্দ জিডিপির মাত্র ০.৭০৬ শতাংশ-এ কি উপহাস নয়?

এ অবস্থার পেছনে রয়েছে একটি ‘উন্নয়ন-বিনাশ ফাঁদ’ (Development-Destruction Trap)। উন্নয়নের নামে প্রকৃতি ধ্বংস হচ্ছে, অথচ প্রকৃতির উপর নির্ভর করেই টিকে আছে কৃষি, খাদ্য, স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা। এ সংকট সমাধানে শুধুমাত্র খাতভিত্তিক বাজেট নয়, প্রয়োজন ন্যায্যতা ও অধিকার ভিত্তিক বাজেট কাঠামো, যেখানে প্রকৃতি ও জনগণের অধিকার সম্মান পায়।

চট্টগ্রামের উপকূলীয় এক গ্রামে ঘূর্ণিঝড় রেমালের পর একজন মাঝবয়সী নারী বলেছিলেন, ‘ঘর গেছে, জমি গেছে, এখন ছেলেমেয়েকে নিয়ে শুধু চাই—জীবনটা যেন একটু নিরাপদ হয়।’ কিন্তু বাজেট সেই নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি দিতে পারেনি।

বাংলাদেশের বাজেট প্রণয়ন ধারণাটি এখনো প্রকৃতিকে বোঝে না। প্রকৃতিকে ‘ব্যয়যোগ্য’ হিসেবে দেখা হয়, সংরক্ষণ নয়।

পানি উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ কমেছে; স্বাস্থ্য খাতে বাড়লেও তা নগণ্য; দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বরাদ্দ কমেছে মূল্যস্ফীতির হিসাব কষলে। আশ্চর্যজনক হলো, সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল যেমন রংপুর ও সুনামগঞ্জে জনপ্রতি বরাদ্দ সবচেয়ে কম, বরিশালের তুলনায় প্রায় ৯ গুণ কম। এই বৈষম্য কেবল অর্থনৈতিক নয়, এটি নৈতিক ব্যর্থতাও।

বাংলাদেশের বাজেট প্রণয়ন ধারণাটি এখনো প্রকৃতিকে বোঝে না। প্রকৃতিকে ‘ব্যয়যোগ্য’ হিসেবে দেখা হয়, সংরক্ষণ নয়। অথচ যুক্তরাষ্ট্রের এনভায়রনমেন্টাল প্রটেকশন এজেন্সির মতে, $১ বিনিয়োগ করলে পরিবেশগত প্রতিরক্ষা থেকে $৩০ পর্যন্ত আর্থিক সুবিধা আসে—ব্যবসা ভাষায় যাকে বলে বিনিয়োগের রিটার্ন।

আমাদের মাটি, জল, বাতাস আর জীববৈচিত্র্য আজ বিনষ্ট। এ বিনাশের খরচ কেবল সরকারি হিসাব নয়, প্রতিটি পরিবারের নিত্য জীবনের ভোগান্তি। সুস্থ বাচ্চা জন্ম দিতে না পারা এক মায়ের কান্নায়, গর্ভবতী নারীর ফুসফুসে জমে থাকা ধুলোয়, মাছের খাঁচা ভেসে যাওয়া একজন মৎস্যজীবীর অসহায়তায় সেই খরচ ধরা পড়ে।

তাহলে কেমন হওয়া উচিত প্রকৃতি-পরিবেশ বান্ধব বাজেট?

আমাদের প্রস্তাব একটি কাঠামোগত সংস্কারের দৃষ্টিভঙ্গি:

ক) প্রকৃতিকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি: বাংলাদেশের উচ্চ আদালতের নদীকে জীবন্ত সত্তা হিসেবে প্রদত্ত রায়কে মেনে সরকারের দ্রুত সমুদ্র, বন, পাহাড়কে ‘জীবন্ত সত্তা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে ‘প্রাকৃতিক অধিকার আইন’ প্রণয়ন করুন, যা প্রকৃতি ন্যায্যতাও। শুধু প্রকল্প বা কর্মসূচিতে প্রকৃতি নয়, প্রকৃতির নিজস্ব অস্তিত্বকে স্বীকার করুন এবং প্রাকৃতিক আইন মেনে অর্থায়ন করুন।

খ) ভূমি ও নদী ব্যবস্থাপনায় ন্যায্যতা: ঝুঁকির ভিত্তিতে অগ্রাধিকার দিন। সুনামগঞ্জ, রংপুর, কুড়িগ্রামের মতো জেলাগুলোয় পৃথক ‘ঝুঁকি সামলানো তহবিল’ গঠন করা দরকার।

গ) রাজস্ব উৎস হিসেবে সবুজ কর: কার্বন কর, দূষণ ফি ও পরিবেশ সংরক্ষণ ফি থেকে বছরে ৩ থেকে ৫ বিলিয়ন ডলার রাজস্ব আনা সম্ভব।

  • ইটভাটা, সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক, দূষণকারী পণ্য ও পরিবহন ও জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর পরিবেশ সুরক্ষা কর এবং কার্বন করারোপ করুন। মাত্র ১০ শতাংশ হারে এ ধরনের করারোপে প্রায় এক থেকে দেড় বিলিয়ন ডলার জোগান দেওয়া সম্ভব

(সূত্র: চেইঞ্জ ইনিশিয়েটিভ স্টাডি, ২০২৪)।

  • বরাদ্দের পরিমাণ: পরিবেশ, জলবায়ু ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে প্রকৃত বা পরিবেশ ও প্রকৃতির ক্ষয়-ক্ষতি বাদে প্রাক্কলিত নেট জিডিপির অন্তত ২০ শতাংশ বরাদ্দ দিতে হবে প্রকৃতির সুরক্ষা এবং কমিউনিটি নেতৃত্বাধীন রেজিলিয়েন্স নিশ্চিতে-

–               কৃষি খাতে: জিডিপির ৫ শতাংশ

–               পানি খাতে: ৫ শতাংশ

–               জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা ও পুষ্টি খাতে: ৫ শতাংশ

–               প্রাকৃতিক সুরক্ষা এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায়: ৫ শতাংশ

সুস্থ বাচ্চা জন্ম দিতে না পারা এক মায়ের কান্নায়, গর্ভবতী নারীর ফুসফুসে জমে থাকা ধুলোয়, মাছের খাঁচা ভেসে যাওয়া একজন মৎস্যজীবীর অসহায়তায় সেই খরচ ধরা পড়ে।

এই মুহূর্তে প্রশ্ন একটাই: আমরা কাকে বাঁচাতে চাই?

শুধু দালান, সড়ক আর মেগা প্রকল্পে কষ্টার্জিত বিনিয়োগ করলেও পানি, নিচে মাটি থাকবে তো? নদী কি থাকবে? মাছ এবং বীজ কি মাইক্রোপ্লাষ্টিক মুক্ত থাকবে?

প্রকৃতিকে বাদ দিয়ে তথাকথিত ধ্বংসাত্মক উন্নয়নকে বেছে নিলে পরিণতি কী হয় তা জানার জন্য সভ্যতাগুলো হারিয়ে যাওয়ার ইতিহাস পড়া উচিত ‘আমি সব জানি’ নীতিনির্ধারক এবং বিশেষজ্ঞদের।

প্রকৃতি প্রদত্ত সুজলা সুফলা বাংলাদেশের সাড়ে বারোশো নদী থেকে মাত্র ২৫০ এর মতো নদী বেচে থাকা, নির্মল বাতাসের ঢাকাকে বৈশ্বিক বায়ু দূষণের কেন্দ্রে পরিণত করা, নদীগুলো বিষের উৎসে পরিণত করাকে যারা উন্নয়ন হিসেবে দেখছেন সে সময় বেশি দূরে নয় যে, তাদের সামনে ভূতুরে অবকাঠামো দাঁড়িয়ে থাকবে-ঝড়ের মুখে, পানির সংকটে, বাতাসের বিষে প্রতিনিয়ত জীবন সংহার হবে।

একটি ন্যায্য, সহনশীল এবং প্রাকৃতিক অধিকার সুরক্ষাবান্ধব বাজেট বাজেট শুধু মানুষের নয়, প্রকৃতি ন্যায্যতা এবং স্থায়িত্বশীলতাও নিশ্চিত করবে।

এম জাকির হোসেন খান ।। প্রধান নির্বাহী, চেইঞ্জ ইনিশিয়েটিভ এবং প্রকৃতির সার্বভৌমত্ব, প্রাকৃতিক অধিকারভিত্তিক শাসন কাঠামার প্রণেতা

ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যেই নির্বাচন, এদিক-সেদিক যাওয়ার সুযোগ নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫, ১:৫৬ অপরাহ্ণ
ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যেই নির্বাচন, এদিক-সেদিক যাওয়ার সুযোগ নেই

পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যেই অনুষ্ঠিত হবে। এই সময়সীমার বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই।

শুক্রবার (২৩ মে) দুপুরে রাজধানীতে একটি প্রোগ্রাম শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা জানান।

রিজওয়ানা হাসান বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ইতোমধ্যে পরিষ্কারভাবে জানিয়েছেন যে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে।

তিনি বলেন, আমি প্রথম থেকেই বলে এসেছি যে উনি (প্রধান উপদেষ্টা) একটা সময় দিয়েছেন—ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। তার একদিনও এদিক-সেদিক হওয়ার কোনো সুযোগ আমাদের পক্ষ থেকে নেই। কাজেই এগুলো নিয়ে অন্য ধরনের কোনো কথা বলারও কোনো সুযোগ হওয়া উচিত নয়।

ড. ইউনূসের পদত্যাগ নিয়ে প্রতিক্রিয়ায় রিজওয়ানা হাসান বলেন, এখন কিছু কিছু গুরু দায়িত্ব আছে, সেগুলো পালনের সঙ্গেও তো মাসের একটা সম্পর্ক থাকতে পারে। যদি কোনো কিছু বলার থাকে, আমি নির্বাচনের প্রশ্নেও বলেছি, দায়িত্ব পালনের প্রশ্নেও বলেছি—ওটা আপনারা ওনার (প্রধান উপদেষ্টার) কাছ থেকেই শুনবেন।

চাপের প্রসঙ্গে রিজওয়ানা হাসান বলেন, ধরুন, প্রত্যাশার একটা চাপ হচ্ছে যে আমরা পারফর্ম করতে পারছি কি না। আমাদের বিবেচনায় ওটাই একমাত্র চাপ। এর বাইরে আর কোনো চাপ নেই।

তিনি আরও বলেন, আপনি এখন এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় মিটিংয়ে যাবেন—সচিবালয় থেকে যমুনা—যেতে পারবেন না, রাস্তা বন্ধ। কেন রাস্তা বন্ধ? এরকম অনেক সমস্যা আছে, যেগুলো আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান করা যায়। চাপ হচ্ছে আমাদের নিজেদের পারফরম্যান্সের। আমরা পারফর্ম করতে পারছি কি পারছি না।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, আমরা যদি আমাদের দায়িত্ব পালন করতে পারি, তাহলে আমাদের দায়িত্ব থাকাটা প্রাসঙ্গিক। আমরা যদি দায়িত্ব পালন করতে না পারি, আমাদের যার যার নিজস্ব কাজ আছে, তাহলে দায়িত্ব পালন করার আর প্রাসঙ্গিক থাকলো কি না?

আপনার কি দায়িত্ব পালন করতে পারছেন? এমন প্রশ্নের জবাব তিনি বলেন, অনেক প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে অনেক দূর এগিয়েছি। সংস্কার কমিশনগুলো তাদের প্রতিবেদন দিয়েছে, সেই প্রতিবেদনের ওপর রাজনৈতিক ঐক্য গড়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সব রাজনৈতিক দল সেখানে পার্টিসিপেট করছে। এটা কি পারা না? এটাতো পারা। আমরা একটা নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে বলে দিয়েছি যে, ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে সেটাও একটা পারা। বিচার ট্রাইব্যুনাল একটা ছিল এখন দুইটা হয়েছে, আগামীকাল থেকে ট্রায়ালার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে, কিন্তু জিনিসগুলা স্মুথ যেতে হবে। এগুলোতে কোনো রকমের প্রতিবন্ধকতা না আসে, সেটা প্রথম থেকে একটা আহ্বান ছিল। এই কাজগুলো আমরা সঠিক প্রক্রিয়াতে শেষ করতে চাই।

‘গতকালকে আমাদের মিটিংয়ের পর অনেকক্ষণ আলোচনা করেছি। মোটা দাগে আমাদের দায়িত্ব তিনটা। তিনটায় কঠিন কঠিন দায়িত্ব। একটা দায়িত্ব হচ্ছে সংস্কার, আরেকটা দায়িত্ব হচ্ছে বিচার, আরেকটা দায়িত্ব হচ্ছে নির্বাচন। শুধুমাত্র নির্বাচন করার জন্য আমরা দায়িত্ব নেইনি।’

তিনি বলেন, আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে যার যত দাবি আছে সবগুলো নিয়ে রাস্তায় বসে যাচ্ছে। রাস্তা আটকে দিচ্ছে, একদম ঢাকা শহর অচল করে দিচ্ছে। সে অচলাবস্থা নিরসনে আমরা কিছু করতে পারছি কি না? আমরা আগেও বলেছি আমরা ক্ষমতার নেইনি দায়িত্বে আছি। এই দায়িত্ব পালন করা তখনই আমাদের জন্য সম্ভব হবে, যখন আমরা সবার সহযোগিতা পাব। প্রত্যাশার বিষয়টা এক, আর দায়িত্ব পালন করার বিষয়টা আরেক। আমরা চিন্তা করেছি আসলে দায়িত্ব পালন করতে পারছে কি না।

গুজবে কান দেবেন না, বিভ্রান্ত হবেন না : সেনাবাহিনী

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫, ১:৫৪ অপরাহ্ণ
গুজবে কান দেবেন না, বিভ্রান্ত হবেন না : সেনাবাহিনী

জনগণকে গুজবে কান না দেওয়ার অনুরোধ করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।

শুক্রবার দুপুরে ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে সচেতনতামূলক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে লেখা এক পোস্টে এ আহ্বান জানায় বাহিনী।

সেনাবাহিনী বলছে, সম্প্রতি একটি স্বার্থান্বেষী মহল বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর লোগো ব্যবহার করে একটি ভুয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে, যার মাধ্যমে সাধারণ জনগণের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টির পাশাপাশি সশস্ত্র বাহিনী ও জনগণের মধ্যে বিভেদ তৈরির অপচেষ্টা চলছে।

পোস্টে আরও লেখা হয়, গুজবে কান দেবেন না, বিভ্রান্ত হবেন না। সত্যতা যাচাই করুন, সচেতন থাকুন।

এ পোস্টের সঙ্গে ভুয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তিটির ছবিও জুড়ে দেওয়া হয়।

"> ">
প্রকৃতির ভাষা ও প্রাণের চাহিদা বোঝা বাজেট ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যেই নির্বাচন, এদিক-সেদিক যাওয়ার সুযোগ নেই গুজবে কান দেবেন না, বিভ্রান্ত হবেন না : সেনাবাহিনী বীরগঞ্জে ভুয়া ফেসবুক আইডি থেকে মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন ভারত এই পরাজয় কখনোই ভুলতে পারবে না : শেহবাজ লন্ডনে সালমান এফ রহমানের ছেলে শায়ানের সম্পত্তি জব্দ এখনই রাজনীতিতে আসছেন না ডা. জোবাইদা রহমান ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখেই বাঁচতে চায় মুরসালিম এবার প্রকৃতির তাণ্ডব কাশ্মিরে, তাপমাত্রার রেকর্ড ভাঙল ৫৭ বছরের গরুর মাংসে আগুন-মাছেও অস্বস্তি, মুরগিতে ঝুঁকছেন ক্রেতারা কানের উদ্দেশে রওনা দিলেন আলিয়া বাজারে সবজির দামে কিছুটা স্বস্তি ‘পদত্যাগের’ কথা ভাবছেন ড. ইউনূস, না করার অনুরোধ নাহিদের জুলাই ঐক্য বিনষ্টের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ঢাবিতে বিক্ষোভ উপদেষ্টা মাহফুজের পর হাসনাতেরও ঐক্যের ডাক প্রধান উপদেষ্টাকে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার আহ্বান জামায়াত আমিরের ব্রাইডাল লুকে মুগ্ধতা ছড়ালেন অপু বিশ্বাস না আছে মরার ভয় না আছে হারাবার কিছু : আসিফ মাহমুদ গ্রেপ্তারের ক্ষমতা পেলেন ট্টাইব্যুনালের তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন নাহিদ ইসলাম সেনানিবাসে আশ্রয় নেওয়াদের পরিচয় প্রকাশ করল আইএসপিআর বীরগঞ্জে বীজ ডিলার ও কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত চলমান আন্দোলনের বিষয়ে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের প্রেস বিজ্ঞপ্তি নাগরিক ছাত্র ঐক্য সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা বীরগঞ্জে ট্রাক-মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৪ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু শেরপুরের বিমলের বাড়িতে মাদকের আখরা, যেন দেখার কেউ নেই! ভবানীপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের উদ্যোগে ফুটবল টুর্ণামেন্ট হবিগঞ্জের থানা পুলিশ অঞ্জাত কিশোরীর লাশ উদ্ধারের পরিচয় সনাক্তে ফেইসবুকে পোস্ট বীরগঞ্জে এনসিপি নেতা হাসনাতের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল নানা কর্মসূচীর মধ্যদিয়ে বীরগঞ্জে আন্তর্জাতিক মহান মে দিবস পালিত