দিনাজপুর-১ আসনে নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটারদের প্রাণপণ চেষ্টা – প্রার্থীদের

দিনাজপুর -১ (বীরগঞ্জ -কাহারোল) আসনে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কে সামনে রেখে রাস্তা-ঘাট, জনসাধারণের ভাগ্য উন্নয়ন, নানা প্রতিশ্রুতি প্রার্থীদের মুখে মুখে। বেশি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। তবে এসব প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন নিয়ে সন্ধিহীন ভোটাররা। ভোটাররা বলছেন, ভোটারদের মন গলাতেই প্রার্থীদের মুখে এখন প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি। এ আসনে প্রচার প্রচারণায় এগিয়ে রয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী। তাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে এলাকার অলিগলি চষে বেড়াচ্ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী। তারাও নৌকা প্রার্থীর মতোই দিচ্ছেন প্রতিশ্রুতি। এই আসনে টানা চতুর্থবারের মতো নৌকার প্রার্থী মনোরঞ্জন শীল গোপাল। ভোটের লড়াইয়ে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকলেও ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ছুটছেন তিনি। উক্ত আসনে পাঁচজন প্রার্থী অংশ নিলেও প্রচারের মাঠে আ.লীগ মনোনীত প্রার্থী ও তাদেরই স্বতন্ত্র প্রার্থী ছাড়া অন্যদের তেমন একটা দেখা যাচ্ছে না। তারা হলেন বর্তমান এমপি মনোরঞ্জন শীল গোপাল (নৌকা) ও বীরগঞ্জ আ.লীগের সভাপতি আলহাজ্ব জাকারিয়া জাকা (ট্রাক) প্রতীক। অন্য তিন প্রার্থীর প্রচারণা অনেকটা দায় সারা।
সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ আসনে আ.লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকে মনোরঞ্জন শীল গোপাল, স্বতন্ত্র প্রার্থী ট্রাক প্রতীকে আলহাজ্ব জাকারিয়া জাকা, লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির শাহিনুর ইসলাম, হাতুড়ী প্রতীকে বাংলাদেশ ওয়ার্কাস পার্টির আব্দুল হক ও আম প্রতীকে বাংলাদেশ পিপলস পার্টির জহুরুল ইসলাম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, দুই উপজেলার প্রতিটি চা দোকানে এখন নির্বাচনী আলোচনার পাশাপাশি নির্বাচনী অফিস খুলেছেন নেতাকর্মীরা। আ.লীগ প্রার্থী মনোরঞ্জন শীল গোপাল নৌকা ও আলহাজ্ব জাকারিয়া জাকা ট্রাক প্রতীক নিয়ে আলোচনা চললেও অন্য প্রার্থীদের বিষয়ে অনেকেই খোঁজ-খবর নেন না। নৌকা ও ট্রাক প্রতীকের বিভিন্ন এলাকায় একটি অফিস থাকলেও অন্যান্যদের কোনো অফিস নেই বললেই চলে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জমে উঠেছে প্রচার প্রচারণা। ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে রাস্তাঘাট, অলিগলিতে ব্যানার-পোষ্টার টানাচ্ছেন প্রার্থীরা। অন্যদিকে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দিনাজপুর -১(বীরগঞ্জ -কাহারোল)আসনে সংসদ সদস্য পদে আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনীত নৌকা প্রতীকের বিপরীতে স্বতন্ত্র প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব জাকারিয়া জাকা এর নির্বাচনী প্রচার প্রচারণায় দলীয় নেতাকর্মীরা বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। মরিচা ইউনিয়নের খামার খড়ি কাদাম গ্রামের আদিবাসী নৃ-গোষ্ঠীর বাবুল মরমু এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, এ এলাকার ভোটাররা বর্তমান এমপি নৌকা প্রতীকে মনোরঞ্জন শীল গোপাল ও আ.লীগের সভাপতি আলহাজ্ব জাকারিয়া জাকাকে চেনেন। এ এলাকার মানুষ এই দুই প্রার্থীর পক্ষে-বিপক্ষে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। শুনেছি আরো নাকি তিন প্রার্থী দাঁড়িয়েছেন। তাদের কখনো দেখিনি। ভোটারদের দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি। মনোরঞ্জন শীল গোপাল ভোটারদের জানান,জনগণের সেবক হিসেবে থাকতে চাই। আমি কথা আর কাজে বিশ্বাসী। বিগত দিনে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে নৌকা মার্কার প্রতি ভোটারদের আস্থা অর্জন করেছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা।
স্বতন্ত্র প্রার্থী আলহাজ্ব জাকারিয়া জাকা বলেন, অন্যান্য আসনের তুলনায় দিনাজপুর -১(বীরগঞ্জ -কাহারোল) আসনে তেমন কোনো উন্নয়ন হয়নি। আমি জয়ী হয়ে এ এলাকার সার্বিক উন্নয়ন করতে চাই’। ওয়ার্কাস পার্টির হাতুড়ী প্রতীকের প্রার্থী আব্দুল হক জানান, ছোটবেলা থেকে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। আমাকে এলাকার সবাই চেনে। কয়েকদিন ধরে বীরগঞ্জ উপজেলায় পোস্টার লাগানোর কাজ শেষ হয়েছে। অন্য উপজেলায় দু-এক দিনের মধ্যেই পোস্টার লাগানো শুরু হবে। জয়ের বিষয়ে আমি আশাবাদী। পিপলস পার্টির আম প্রতীকের প্রার্থী জহুরুল ইসলাম জানান, দুই উপজেলায় প্রচারের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী শাহিনুর ইসলাম জানান,দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রচার প্রচারণা অব্যাহত রয়েছে। বিজয় এর বিষয়ে শতভাগ আশাবাদী। বীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ফজলে এলাহী বলেন, এবারে নির্বাচনে এ আসন থেকে পাঁচজন প্রার্থী বিভিন্ন প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু করার লক্ষে সার্বক্ষণিক তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচনে শতভাগ আশাবাদী।
উত্তরের কণ্ঠ/এ.এস বিকাশ ঘোষ
আপনার মতামত লিখুন