খুঁজুন
শুক্রবার, ২৩শে মে, ২০২৫, ৯ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

কৃষি বাজেট : কার জন্য এবং কেন?

অমিত রঞ্জন দে প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৮ জুন, ২০২৪, ১২:০৩ অপরাহ্ণ
কৃষি বাজেট : কার জন্য এবং কেন?

খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে দুনিয়াব্যাপী মানুষ উদ্বিগ্ন। বাংলাদেশে সেই উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা আরও বেশি। কারণ এখানে প্রতি বর্গকিলোমিটারে  বাস করে ১১১৬ জন মানুষ। যা পৃথিবীর আর কোথাও দেখা যায় না। এই ব্যাপক জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়টি তাই সর্বাগ্রে বিবেচ্য। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করছি, তা ক্রমান্বয়ে গুরুত্বহীন হয়ে পড়ছে। মুখে চলছে বাগাড়ম্বরতা।

কখনো কখনো বঙ্গবন্ধুকে উদ্ধৃত করে বলা হচ্ছে, ‘খাদ্যের জন্য অন্যের ওপর নির্ভর করলে চলবে না। আমাদের নিজেদের প্রয়োজনীয় খাদ্য আমাদেরই উৎপাদন করতে হবে, কৃষককে বাঁচাতে হবে, উৎপাদন বাড়াতে হবে, তা না হলে বাংলাকে বাঁচানো যাবে না।’ এই বক্তব্যের সাথে বোধহয় কারোর কোনো মতভেদ নেই। বরং এইটাই আপামর জনসাধারণের ঐকান্তিক চাওয়া।

প্রশ্ন হলো, এই স্বয়ংসম্পূর্ণতা বা উৎপাদন বৃদ্ধি কতদিনের জন্য, কার জন্য? এই স্বয়ংসম্পূর্ণতা কি সাময়িক সময়ের জন্য, নাকি এর সুদূরপ্রসারী কোনো লক্ষ্য আছে? এর ধারাবাহিকতা রক্ষা করাটাও আমাদের দায়-দায়িত্বের মধ্যে পড়বে কিনা?

প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, বাংলাকে বাঁচানো, কৃষি বা কৃষককে বাঁচানোর উদ্যোগ-আয়োজনগুলো কোথায়? প্রস্তাবিত বাজেট কি কৃষি বা কৃষকের স্বার্থ রক্ষার কথা বলছে? নাকি একদল মুনাফালোভী ব্যবসায়ীর উদ্দেশ্য চরিতার্থে কাজ করছে?

পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যাবে, কৃষিকেন্দ্রিক আমাদের চিন্তা-ভাবনা, উদ্যোগ-আয়োজনসমূহ একেবারেই তাৎক্ষণিক প্রয়োজন মেটানোর মতো। তা কোনো গবেষণা বা কৃষি ও কৃষকের টিকে থাকা বা স্থায়িত্ব বিবেচনায় গৃহীত হচ্ছে না। জাতীয় বাজেট তা আরও সুস্পষ্ট করে তোলে। কৃষিতে এখনো ৪০.৬ শতাংশ মানুষের শ্রম নিযুক্ত সেইখানে বাজেটের আকার কত?

কৃষিকেন্দ্রিক আমাদের চিন্তা-ভাবনা, উদ্যোগ-আয়োজনসমূহ একেবারেই তাৎক্ষণিক প্রয়োজন মেটানোর মতো। তা কোনো গবেষণা বা কৃষি ও কৃষকের টিকে থাকা বা স্থায়িত্ব বিবেচনায় গৃহীত হচ্ছে না।

কৃষির সাথে সংশ্লিষ্ট কৃষি, মৎস্য ও পশুসম্পদ, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন, ভূমি ও পানি সম্পদ এই পাঁচটি মন্ত্রণালয় মিলে বরাদ্দ রাখা হয়েছে মোট বাজেটের মাত্র ৫.৯০ শতাংশ। অথচ এই পাঁচটি খাতই বাংলাদেশের মানুষের জীবন-জীবিকা তথা টিকে থাকার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এদের মধ্যে সঙ্গতি স্থাপনই প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশ তথা বাংলাদেশের জনগণকে রক্ষা করবে। কিন্তু যে উৎপাদন ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে আমরা অগ্রসর হচ্ছি এবং উৎসাহিত করছি তা কোনোভাবেই আমাদের কৃষিকে টিকিয়ে রাখার মৌলিক উপাদান মাটি, পানি ও পরিবেশের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ না।

আমরা উৎপাদন বাড়ানোর নামে ক্রমাগত ভূ-গর্ভস্থ পানি ব্যবহারে ধান চাষ করছি, ফলে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ক্রমাগত নিচে নেমে যাচ্ছে। মৎস্য সম্পদের জোগান নিশ্চিত করার নামে মিষ্টি পানিতে লবণাক্ততা বৃদ্ধি করছি। যা একদিকে ভূগর্ভস্থ পানি নিচে নেমে যাওয়ায় খরা পরিস্থিতি তৈরি করছে, অন্যদিকে লবণের খরা দেখা দিচ্ছে। পানির প্রাপ্যতা কমছে, লবণাক্ততা বাড়ছে, ব্যবহার উপযোগী পানি দুষ্প্রাপ্য হয়ে পড়ছে। মাটি ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে। মরুভূমির মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে।

অর্থমন্ত্রী তার বাজেটে সেচের জন্য বিদ্যুৎ বিলে ২০ শতাংশ রেয়াত রেখেছেন। কিন্তু তা থেকে কে লাভবান হবে? কৃষক না সেচযন্ত্রের মালিক? কেননা, অধিকাংশ ক্ষেত্রে সেচযন্ত্রের মালিকানা কৃষকের হাতে থাকে না। এর মালিকানা ও ব্যবস্থাপনা দুটোই প্রভাবশালীদের হাতে। ফলে কৃষক টাকা দিয়েও পানি পায় না, কৃষক প্ররোচিত হয় আত্মহত্যায়।

দ্বিতীয়ত আমরা দেখছি ভূ-গর্ভস্থ পানি উত্তোলনের ফলে আমরা ক্রমান্বয়ে মরুময় পরিস্থিতির দিকে ধাবিত হচ্ছি। তাহলে, ভূ-উপরিস্থ যেসব পানির আধার রয়েছে পুকুর, খাল, বিল, নদী তা রক্ষণাবেক্ষণের পরিকল্পনা কই, বাজেট কই?

বাজেট বরাদ্দের সময় এই বিষয়সমূহ চিন্তায় থাকছে না, চিন্তায় থাকছে না কৃষকের স্বার্থ। সেইখানে কৃষকের স্বার্থের চেয়ে কোম্পানি বা সম্পদের মালিকের স্বার্থ অধিক গুরুত্ব পাচ্ছে। কৃষক যাতে সাশ্রয়ী মূল্যে সার-কীটনাশক পায় তার জন্য ভর্তুকি রাখা হয়েছে। যার পুরোটাই রাসায়নিক সার ও কীটনাশক আমদানিতে ব্যবহৃত হবে। ফলে সার-কীটনাশকে রাখা ভর্তুকির পুরোটাই চলে যাবে কোম্পানি বা ব্যবসায়ীর পকেটে।

অথচ কয়েক বছরে কেঁচো সার আমাদের কৃষিতে যুগান্তকারী ভূমিকা রেখে চলেছে। এছাড়া প্রাকৃতিক উপায়ে কৃষকের নিজস্ব প্রযুক্তিতে উৎপাদিত আরও বিভিন্ন ধরনের সার, বালাইনাশক রয়েছে। তার উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে কোনো প্রণোদনা নেই, নেই গবেষণা।

কৃষক তার উৎপাদিত পণ্য বিশেষ করে ধান, আলু, পেঁয়াজ ওঠার সাথে সাথে বিক্রি করতে বাধ্য হন। কারণ তার উৎপাদিত ফসল সংরক্ষণের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। ফলনের মাত্র ১২-২২ শতাংশ সংরক্ষণ করার সামর্থ্য আমাদের আছে। সুতরাং রাখার জায়গার অভাবে ফসল মাড়াইয়ের সাথে সাথে তা বিক্রি করতে বাধ্য হয়। এই সুযোগে মিল মালিক কৃষকের কাছ থেকে স্বল্পমূল্যে ধান কিনে নেয় এবং লাভও চলে যায় তার পকেটে।

এক গবেষণায় দেখা গেছে, কুষ্টিয়া, নওগাঁ, বগুড়া ও দিনাজপুর অঞ্চলের ৫০টির মতো বড় চালকল প্রতিষ্ঠান রয়েছে। মূলত এরাই বাজারের নিয়ন্তা। ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ তাদেরই ঋণ দিয়ে থাকে।

এর বিপরীতে কৃষকের স্বার্থের পক্ষে দাঁড়িয়ে জেলা বিবেচনায় ধান, পেঁয়াজ, আলুর মতো অর্থকরী ফসল সুরক্ষায় ইউনিয়ন পর্যায়ে কোল্ড স্টোরেজ, কৃষিগোলা স্থাপন বা ক্ষুদ্র, মাঝারি চাতাল মালিক, কোল্ডস্টোরেজের মালিক বা মিল মালিকদের প্রণোদনা দিয়ে সেইখানে কৃষকের ফসল সুরক্ষার ব্যবস্থা করা দরকার। কিন্তু সেইখানে নজর নেই, নেই বাজেট প্রক্ষেপণ।

ফলে হাতেগোনা ওই ৫০টির মতো প্রতিষ্ঠানের লুটপাটে কোনো অসুবিধা হচ্ছে না, কৃষক বঞ্চিত হচ্ছে প্রকৃত মূল্য থেকে। সেইখানে লাভজনক মূল্য তো অনেক দূরে। তাহলে কীভাবে সম্ভব বাংলার কৃষি এবং কৃষককে নিজের পায়ে দাঁড় করানো?

এখনো নদী-খাল, বিলসহ জলাশয়গুলোর দখল-দূষণ অব্যাহত রয়েছে। তার সংস্কার, রক্ষণাবেক্ষণের নাম নেই। প্রতিবছর প্রাকৃতিক দুর্যোগে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হচ্ছে আমাদের কৃষি। সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে উপকূলবর্তী ২০ জেলার ৬২টি উপজেলার ৪১৯টি ইউনিয়ন। প্রায় ৯৬ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

বাজেট বরাদ্দের সময় এই বিষয়সমূহ চিন্তায় থাকছে না, চিন্তায় থাকছে না কৃষকের স্বার্থ। সেইখানে কৃষকের স্বার্থের চেয়ে কোম্পানি বা সম্পদের মালিকের স্বার্থ অধিক গুরুত্ব পাচ্ছে।

বলা হচ্ছে, ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে প্রায় ২১৭ কোটি ২৯ লাখ টাকার মৎস্য সম্পদের ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৮ হাজার ২০৯ হেক্টর ফসলি জমির ফসল।

সম্প্রতি ভারতের মেঘালয়, চেরাপুঞ্জের বৃষ্টির পানিতে প্লাবিত হয়েছে সিলেট-সুনামগঞ্জ এলাকা। পানি বের হতে পারছে না। কৃষক এই বছর বন্যার আগে ফসল ঘরে তুললেও ঘরের ভেতর পানি ঢুকে কৃষকের ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, জুলাইয়ের শুরুতে দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে বন্যা হতে পারে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কৃষক যে বারবার ক্ষতির মুখোমুখি হচ্ছে তা থেকে রক্ষায় বাজেটে কী রাখা হলো?

কী রাখা হলো প্রাকৃতিক দুর্যোগের করাল থাবা থেকে বারংবার রক্ষাকারী প্রাকৃতিক দুর্গ সুন্দরবনের জন্য। সুন্দরবন বারবার বুক দিয়ে আমাদের জানমাল এবং কৃষিকে আগলে রাখছে। সম্প্রতি সেইখানে অগিকাণ্ড এবং ঘূর্ণিঝড় রিমালে যে ক্ষতি হয়েছে তা পোষাতে এবং তার সুরক্ষায় পরিকল্পনা গ্রহণ এবং বাজেটে কি বরাদ্দ রাখা হলো?

এই সবকিছুর মধ্যে একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে, তাহলো বাজেট তাহলে কার জন্যে, কীসের জন্যে? এখানে আবহাওয়ার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ স্থানীয় বীজ, কৃষকের জ্ঞান, ফসলের ন্যায্য মূল্য, ফসল সংরক্ষণ, বৈরি আবহাওয়ার সাথে খাপ খাওয়ানোর বিষয়গুলো কোথায়?

তা নিশ্চিতকরণে পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে না পারলে বাজেট নামক টাকা পয়সার হিসাব-নিকেশ করে কোনো লাভ হবে কি? কারণ বাজেটের সাথে যুক্ত থাকে দৃষ্টিভঙ্গি, যুক্ত থাকে স্থায়ী হওয়া তথা প্রজন্মের ভবিষ্যৎ।

 

অমিত রঞ্জন দে ।। সংস্কৃতিকর্মী ও সহ-সাধারণ সম্পাদক, উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদ

‘পদত্যাগের’ কথা ভাবছেন ড. ইউনূস, না করার অনুরোধ নাহিদের

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫, ১২:৩১ পূর্বাহ্ণ
‘পদত্যাগের’ কথা ভাবছেন ড. ইউনূস, না করার অনুরোধ নাহিদের

দেশের সর্বত্র উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে গুঞ্জন শুরু হয়েছে পদত্যাগের চিন্তা করছেন অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এমন গুঞ্জনের মধ্যে তার সঙ্গে দেখা করে আসলেই পদত্যাগ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ভাবছেন বলে নিশ্চিত করলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। অবশ্য তিনি যেন এমন সিদ্ধান্ত না নেন সেই অনুরোধ জানিয়েছেন সাবেক তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গিয়ে তার সাথে সাক্ষাৎ করেন নাহিদ ইসলাম। পরে বিবিসি বাংলাকে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘দেশের চলমান পরিস্থিতি, স্যারেরতো পদত্যাগের একটা খবর আমরা আজকে সকাল থেকে শুনছি। তো ওই বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে স্যারের সাথে দেখা করতে গেছিলাম। প্রধান উপদেষ্টা দেশের চলমান পরিস্থিতিতে কাজ করতে পারবেন না এমন শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।’

এসময় তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদও ছিলেন বলে জানা গেছে।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘স্যার বলছেন আমি যদি কাজ করতে না পারি… যে জায়গা থেকে তোমরা আমাকে আনছিলা একটা গণঅভ্যুত্থানের পর, দেশের পরিবর্তন, সংস্কার…। কিন্তু যেই পরিস্থিতি যেভাবে আন্দোলন বা যেভাবে আমাকে জিম্মি করা হচ্ছে। আমিতো এভাবে কাজ করতে পারবো না। তো রাজনৈতিক দলগুলা তোমরা সবাই একটা জায়গায়, কমন জায়গায় না পৌঁছাতে পারো।’

প্রধান উপদেষ্টাকে পদত্যাগের মতো সিদ্ধান্ত না নিতে আহ্বান জানিয়েছেন নাহিদ। এ প্রসঙ্গে নাহিদ বলেন, ‘আমাদের গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা এবং জাতীয় নিরাপত্তা ও দেশের ভবিষ্যৎ সবকিছু মিলিয়ে উনি যাতে শক্ত থাকেন এবং সব দলকে নিয়ে যাতে ঐক্যের জায়গায় থাকেন, সবাই তার সাথে আশা করি কো-অপারেট করবেন।’

প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগের বিষয়টি বিবেচনা করছেন জানিয়ে নাহিদ বলেন, ‘হ্যাঁ, যদি কাজ করতে না পারেন, থাকবেন, থেকে কী লাভ। উনি বলছেন উনি এ বিষয়ে ভাবছেন। ওনার কাছে মনে হয়েছে পরিস্থিতি এরকম যে তিনি কাজ করতে পারবেন না।’

পদত্যাগের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার এখনকার মনোভাবের বিষয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘এখন ওনি যদি রাজনৈতিক দল তার পদত্যাগ চায়… সেই আস্থার জায়গা, আশ্বাসের জায়গা না পাইলে উনি থাকবেন কেন?’

জুলাই ঐক্য বিনষ্টের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ঢাবিতে বিক্ষোভ

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫, ১২:২৮ পূর্বাহ্ণ
জুলাই ঐক্য বিনষ্টের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ঢাবিতে বিক্ষোভ

জুলাইয়ের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক শক্তির মধ্যে ফাটল তৈরি ও ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ র‍্যালি ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে গণ-অভ্যুত্থানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৮০টি সংগঠনের ঐকবদ্ধ প্লাটফর্ম ‘জুলাই ঐক্য’।

আজ বৃহস্পতিবার (২২ মে) রাত ১১ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে  প্রতিবাদ র‌্যালি শুরু হয়ে শাহবাগ মোড় ঘুরে আবারও রাজু ভাস্কর্যের এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

সমাবেশে অংশ নেওয়া সংগঠনগুলোর নেতারা বলেন, “যে ঐক্য নিয়ে আমরা জুলাই গণঅভ্যুত্থান করেছিলাম সে ঐক্য ভাঙতে দেশি বিদেশি ষড়যন্ত্র হচ্ছে। যারা ষড়যন্ত্র করে জুলাই ঐক্যকে বিনষ্ট করতে চাইবে জুলাই জনতা তাদেরকে আবারও দিল্লিতে পাঠিয়ে দেবে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে আমরা লড়ে যাবো। ভারতীয়, মার্কিন আগ্রাসনে ও দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে জুলাই জনতা বুক পেতে আবার রাজপথে নেমে আসবে। আমরা আবারও বুকের তাজা রক্ত দেবো তবুও বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নষ্ট হতে দেবো না।”

এ সময়  বক্তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “সচিবালয়ে ফ্যাসিবাদের অনেক দোসর বসে আছে। ৩১ মে এর মধ্যে সচিবালয় থেকে ফ্যাসিবাদের সকল দোসর  অপসারণ না করলে সচিবালয় ঘেরাও হবে।”

জুলাই ঐক্যের আপ বাংলাদেশের প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ আল মিনহাজ বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে যে সকল ভারতীদের পুনর্বাসন করা হয়েছে তাদের চিহ্নিত করে অতি দ্রুত অপসারণ করতে হবে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “জুলাইয়ের শহীদদের রক্তের ওপর আপনার সরকার গঠিত। আমরা আপনার ওপর আস্থা রাখতে চাই। জুলাইয়ের ঐক্যকে যারা নষ্ট করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। অতি দ্রুত জুলাই ঘোষণাপত্র ঘোষণা দেন এবং আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত করুন।”

জুলাই ঐক্যের অন্যতম সংগঠক মোসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মদ বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের সুচিকিৎসার না দিয়ে উপদেষ্টারা ক্ষমতা উদযাপন শুরু করেছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে ভারতীয় আধিপত্যবদের দোসরা আবারও দেশকে ভারতের কাছে তুলে দিতে চায়। উপদেষ্টা পরিষদে ভারতীয় কোনো দালাল থাকতে পারবে না। জুলাই যোদ্ধারা বেঁচে থাকতে তা সফল হবে না। এবার রাজপথে নামতে হলে আপনাদের উৎখাত করে দেশ ছাড়া করা হবে। যারা জুলাই ঐক্যের ফাটল ধরানোর চেষ্টা করছে তাদের চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থা করুন।”

এছাড়াও জুলাই স্পিরিট ধরে রেখে নতুন বাংলাদেশ গড়তে সকল ভেদাভেদ ভুলে সকল রাজনৈতিক ও সমাজিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

এ সময় মোসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মদ জুলাই ঐক্যের পক্ষ থেকে তিন দফা দাবি জানান। জুলাই ঐক্যের ৩ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে—

ক) জুলাইয়ের সকল শক্তিকে বিনষ্ট করতে যে সকল ভারতীয় এজেন্ট কাজ করছে তাদের অবিলম্বে খুজে বের করে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে হবে।

খ) উপদেষ্টা পরিষদে যারা ভারতের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে ব্যাতিব্যাস্ত অবিলম্বে তাদের অপসারন করে উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন করতে হবে।

গ) অবিলম্বে জুলাই ঘোষণাপত্র যথা সময়ে দিতে হবে।

উপদেষ্টা মাহফুজের পর হাসনাতেরও ঐক্যের ডাক

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫, ১২:০৪ পূর্বাহ্ণ
উপদেষ্টা মাহফুজের পর হাসনাতেরও ঐক্যের ডাক

আগের সব ‘বিভাজনমূলক বক্তব্য ও শব্দচয়নের’ জন্য দুঃখ প্রকাশ করে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম দেশপ্রেমিক শক্তির ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন। তার সঙ্গে সুর মিলিয়ে একই আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহও।

হাসনাত বলেছেন, “এ দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য এবং পতিত ফ্যাসিবাদের নগ্ন, দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র থেকে মুক্তির জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।”

বৃহস্পতিবার (২২ মে) উপদেষ্টা মাহফুজ আব্দুল্লাহ ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার কিছুক্ষণ পরেই নিজের ভেরিফায়েড আইডিতে এমন আহ্বান জানান হাসনাত আব্দুল্লাহ।

সেখানে তিনি লিখেচেন, “জুলাইয়ের ফ্যাসিবাদবিরোধী সব শক্তির প্রতি আহ্বান—যে বিভাজনটা অপ্রত্যাশিতভাবে আমাদের মধ্যে এসেছিল, সেই বিভাজনকে দেশ ও জাতির স্বার্থে মিটিয়ে ফেলতে হবে।”

তিনি সবাইকে সতর্ক করে বলেন, “মনে রাখবেন আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পতনে দেশে-বিদেশে অনেকে নাখোশ হয়ে আছে। এই নাখোশ বান্দারা আমাদের বিভাজনের সুযোগ নিতে নিতে আজকের এই অস্থিতিশীল দিন এনেছে। আমরা সবাই এক হয়েছিলাম বলেই দীর্ঘ দেড় যুগের শক্তিশালী ফ্যাসিবাদকে তছনছ করতে পেরেছিলাম। আমরা খণ্ড-বিখণ্ড হলে পতিত ফ্যাসিবাদ ও তার দেশি-বিদেশি দোসরেরা আমাদের তছনছ করার হীন পাঁয়তারা করবে।”

হাসনাত বলেন, “দেশ ও জাতির প্রতি দায় এবং দরদ আছে বলেই আমরা এক হয়ে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়েছিলাম। দেশ ও জাতির জন্যই এবার আমাদের এক হয়ে আমাদের স্বদেশকে বিনির্মাণ করতে হবে। কোনও ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর স্বার্থের জন্য এই ঐক্য নয়, বরং আমাদের দেশের জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকার কোনও বিকল্প নেই।”

"> ">
‘পদত্যাগের’ কথা ভাবছেন ড. ইউনূস, না করার অনুরোধ নাহিদের জুলাই ঐক্য বিনষ্টের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ঢাবিতে বিক্ষোভ উপদেষ্টা মাহফুজের পর হাসনাতেরও ঐক্যের ডাক প্রধান উপদেষ্টাকে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার আহ্বান জামায়াত আমিরের ব্রাইডাল লুকে মুগ্ধতা ছড়ালেন অপু বিশ্বাস না আছে মরার ভয় না আছে হারাবার কিছু : আসিফ মাহমুদ গ্রেপ্তারের ক্ষমতা পেলেন ট্টাইব্যুনালের তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন নাহিদ ইসলাম সেনানিবাসে আশ্রয় নেওয়াদের পরিচয় প্রকাশ করল আইএসপিআর বীরগঞ্জে বীজ ডিলার ও কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত চলমান আন্দোলনের বিষয়ে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের প্রেস বিজ্ঞপ্তি নাগরিক ছাত্র ঐক্য সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা বীরগঞ্জে ট্রাক-মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৪ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু শেরপুর সীমাবাড়ি ইউনিয়নের কদিম হাঁসড়া গ্রামে বিমলের বাড়িতে মাদকের আখরা, যেন দেখার কেউ নেই রাষ্ট্র সংস্কারের অংশ হিসেবে গ্রাহক সেবার মানোন্নয়নে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডে বড় ধরনের বদলি! ভবানীপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের উদ্যোগে আরাফাত রহমান কোকো ফুটবল টুর্ণামেন্ট উদ্বোধন হবিগঞ্জের বানিয়াচং থানা পুলিশ অঞ্জাত কিশোরীর লাশ উদ্ধারের পরিচয় সনাক্তে ফেইসবুকে পোস্ট বীরগঞ্জে এনসিপি নেতা হাসনাতের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল নানা কর্মসূচীর মধ্যদিয়ে বীরগঞ্জে আন্তর্জাতিক মহান মে দিবস পালিত বীরগঞ্জে মহান শ্রমিক দিবস পালিত ছোনকায় মহান মে দিবস উপলক্ষে বর্নাঢ্য র‌্যালী শেষে শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পন কাহারোলে স্কাউটস দিবস উপলক্ষে র‍্যালি,পরিষ্কার- পরিচ্ছন্নতা অভিযান ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমারের যন্ত্রাংশ চুরি করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তির মৃত্যু দুদকের আকস্মিক অভিযান: বীরগঞ্জ হাসপাতালে দুর্নীতির চিত্র উন্মোচিত শেরপুরে চোরসহ টলিগাড়ি পাবনার ভাঙ্গুরায় আটক শেরপুরে ইউনিয়ন জামাতের সেক্রেটারীর ভাই ৭৫০ পিস ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার শেরপুরে কলেজের অধ্যক্ষের দূর্ণীতির বিরুদ্ধে মানববন্ধন।। শেরপুরে সভাপতি কর্তৃক অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দূর্ণীতি তদন্ত করার কারনে সভাপতি পরিবর্তন নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে শেরপুর উপজেলা বিএনপি’র আনন্দ শোভাযাত্রা শেরপুরে মাদ্রাসা শিক্ষিকার আত্মহত্যা।