খুঁজুন
শনিবার, ২৪শে মে, ২০২৫, ১০ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

ইরানকে কোন পথে নেবেন সংস্কারপন্থি পেজেশকিয়ান?

আন্তর্জাতিক ডেক্স প্রকাশিত: শনিবার, ৬ জুলাই, ২০২৪, ১১:০১ অপরাহ্ণ
ইরানকে কোন পথে নেবেন সংস্কারপন্থি পেজেশকিয়ান?

গত মে মাসে উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় নিহত ইব্রাহিম রাইসির স্থলাভিষিক্ত হিসেবে ইসলামি প্রজাতন্ত্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে সংস্কারপন্থি মাসুদ পেজেশকিয়ানকে বেছে নিয়েছেন ইরানিরা। ৬৯ বছর বয়সী পেজেশকিয়ান পেশায় হৃদরোগবিষয়ক শল্যবিদ। দেশটির অতিরক্ষণশীল সাঈদ জালিলির বিরুদ্ধে রানঅফ নির্বাচনে সর্বোচ্চসংখ্যক ভোট পেয়েছেন তিনি। শুক্রবারের নির্বাচনে পড়া মোট ৩ কোটি ৬০ লাখ ভোটের প্রায় এক কোটি ৬০ লাখই পেয়েছেন ইরানের সংস্কারপন্থি আইনপ্রণেতা পেজেশকিয়ান। যা ভোটের হারে প্রায় ৫৪ শতাংশ।

তিনি দেশটির প্রধান সংস্কারপন্থি জোট ও অনেক ইরানির সমর্থন পেয়েছেন। যারা আবারও ইরানের ক্ষমতায় কট্টরপন্থীদের নিয়ন্ত্রণের আশঙ্কা করেছিলেন। নির্বাচনী প্রচারণার সময় পেজেশকিয়ান ‌‌‘‘ইরানকে বিচ্ছিন্নতা থেকে মুক্ত’’ করে পশ্চিমা দেশগুলোর সাথে তেহরানের ‘‘গঠনমূলক সম্পর্ক’’ গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য পরাশক্তির সাথে ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন তিনি। ইরানের পারমাণবিক কার্যকলাপ সীমিত করতে দেশটির ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা কমিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি ছিল সেই চুক্তিতে। কিন্তু ২০১৮ সালে ওয়াশিংটন এই চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর সেটি ভেস্তে যায়।

২০২২ সালে হিজাব পরার বিধান লঙ্ঘনের অভিযোগে ইরানের নৈতিকতা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন মাহসা আমিনি নামের এক তরুণী। পরে পুলিশি জিম্মায় নির্যাতনে ওই তরুণীর মৃত্যুর পর ইরানজুড়ে হিজাববিরোধী আইন শিথিলের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। এবারের নির্বাচনী প্রচারণায় নারীদের বাধ্যতামূলক হিজাব পরার বিধান কার্যকর করার জন্য পুলিশি টহলের ‘‘পুরোপুরি’’ বিরোধিতা করেছেন পেজেশকিয়ান। একই সঙ্গে ইরানে দীর্ঘদিন ধরে ইন্টারনেটের ওপর যে কড়াকড়ি আরোপ রয়েছে তা শিথিল করারও অঙ্গীকার করেছেন তিনি।

পেজেশকিয়ান তার সরকারে আরও বেশি নারী ও জাতিগত সংখ্যালঘু যেমন— কুর্দি এবং বেলুচদের অন্তর্ভুক্ত করার অঙ্গীকার করেছেন। তিনি মুদ্রাস্ফীতি কমানোর প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন; যা দেশটিতে বর্তমানে প্রায় ৪০ শতাংশে অবস্থান করছে। গত কয়েক বছরে মুদ্রাস্ফীতি দেশের মানুষের পিঠ দুমড়ে-মুচড়ে দিয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

অতিরক্ষণশীল সাঈদ জালিলির সাথে এক বিতর্কে পেজেশকিয়ান বলেছিলেন, ইরানের ২০০ বিলিয়ন ডলারের বিদেশি বিনিয়োগ প্রয়োজন। বিশ্বজুড়ে ইরানের সম্পর্কে সংশোধন আনার মাধ্যমেই এই বিনিয়োগ পাওয়া সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।

অন্যান্য অনেক দেশের মতো ইরানের প্রেসিডেন্ট রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহী নন এবং চূড়ান্ত কর্তৃত্ব দেশটির সর্বোচ্চ নেতার হাতে। আর সর্বোচ্চ নেতার পদে প্রায় ৩৫ বছর ধরে আছেন আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। প্রেসিডেন্ট হিসেবে পেজেশকিয়ান দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদাধিকারী হবেন। দেশের অভ্যন্তরীণ ও পররাষ্ট্রনীতিতে তার প্রভাব থাকবে। অর্থনৈতিক বিভিন্ন বিষয়ে নীতি নির্ধারণ তার ক্ষমতার আওতায় থাকবে।

তবে দেশটির পুলিশের ওপর তার সীমিত নিয়ন্ত্রণ থাকলেও সেনাবাহিনী ও ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) ওপর তার কোনও কর্তৃত্ব থাকবে না। কারণ দেশটির পুলিশ, সেনাবাহিনী এবং আইআরজিসি সরাসরি সর্বোচ্চ নেতার কাছে জবাবদিহি করে। খামেনির নির্ধারিত রাষ্ট্রীয় নীতি বাস্তবায়নের দায়িত্ব পাবেন পেজেশকিয়ান।

দেশটির পুলিশের ওপর প্রেসিডেন্ট হিসেবে পেজেশকিয়ানের সীমিত নিয়ন্ত্রণ থাকলেও সেনাবাহিনী ও ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) ওপর কোনও কর্তৃত্ব থাকবে না।

পেজেশকিয়ানের বিজয় নিয়ে ইরানিদের মাঝে মিশ্র অনুভূতি দেখা গেছে। কেউ কেউ আনন্দ প্রকাশ করলেও অনেকে সংশয়ে আছেন। তেহরানের বাসিন্দা ৪০ বছর বয়সী স্থপতি আবুল ফজল বলেন, ‘‘জনগণের অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধানের জন্য আমাদের সত্যিই একজন শিক্ষিত প্রেসিডেন্টের প্রয়োজন।’’ ৪০ বছর বয়সী নরসুন্দর রাশেদ বলেন, পেজেশকিয়ানের জয় কোনও বিষয় নয়। বরং দেশের ‘‘পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে’’ বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তেহরানের এই বাসিন্দা।

ইরানের রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সাংবাদিক মাজিয়ার খোসরাভি বলেন, নতুন প্রেসিডেন্ট ইরানের সমস্যাগুলো তাৎক্ষণিক সমাধানের প্রতিশ্রুতি দেননি। তিনি বলেন, জনগণ তাকে ভোট দিয়েছে, কারণ তারা বুঝতে পেরেছিল যে বিশ্বের সাথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে পেজেশকিয়ানের আগ্রহ রয়েছে; যা বর্তমান সরকারের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি।

দেশটির রাজনৈতিক ভাষ্যকার মোসাদ্দেগ মোসাদেঘপুর বলেন, লোকজন অত্যন্ত সতর্কতার সাথে আশা করছেন যে, তিনি কিছু ভালো পরিবর্তন আনতে ও দেশের কিছু সমস্যার সমাধান করতে পারেন— বিশেষ করে অর্থনীতির। অন্যদিকে কিছু বিশ্লেষক বলছেন, পেজেশকিয়ান জটিল চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবেন। কারণ এখনও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে রক্ষণশীলদের আধিপত্য রয়েছে।

এ রকম একটি প্রতিষ্ঠান হল সংসদ; যা গত মার্চ মাসে গঠন করা হয়েছিল। এই সংসদে রক্ষণশীল ও অতিরক্ষণশীলদের ব্যাপক আধিপত্য রয়েছে। সংসদের স্পিকার মোহাম্মদ বাঘের গালিবাফ প্রথম দফার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তিনি রানঅফ পর্বে জালিলিকে সমর্থন জানিয়েছিলেন। এছাড়া প্রথম দফার ভোটের মাত্র একদিন আগে নির্বাচন থেকে বাদ পড়া অন্য দুই প্রার্থীও জালিলির প্রতি নিজেদের সমর্থন দিয়েছিলেন।

‘‘হিজাব কিংবা অন্য কোনও আদর্শিক বিষয় নিয়ে কাজের এখতিয়ার প্রেসিডেন্টের হাতে নেই,’’ বলেন মোসাদ্দেগ মোসাদেঘপুর। তিনি বলেন, এটা পুরোপুরি ধর্মীয় বিষয়।

আন্তর্জাতিক থিংক ট্যাংক প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের আলী ওয়ায়েজ এএফপিকে বলেন, দেশের ভেতরে মানুষের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার এবং বিদেশে কূটনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা নিয়ে কঠিন লড়াইয়ের মুখোমুখি হবেন পেজেশকিয়ান। পারমাণবিক ইস্যুতে পেজেশকিয়ান কিছুটা সমস্যার সমাধান করতে পারেন। তবে এক্ষেত্রেও সর্বোচ্চ নেতার ইচ্ছাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

ওয়াশিংটন ও ইউরোপের সাথে ইরানের স্বাক্ষরিত ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করার কূটনৈতিক প্রচেষ্টা বছরের পর বছর ধরে ব্যর্থ হয়েছে। মাজিয়ার খোসরাভি বলেছেন, ‘‘পররাষ্ট্রনীতিতে ইরানের দৃষ্টিভঙ্গি মৌলিকভাবে পরিবর্তন হবে বলে কারও প্রত্যাশা করা ঠিক হবে না।’’

তেহরানের মিত্র হামাসের সাথে ইসরায়েলের যুদ্ধ নিয়ে ব্যাপক আঞ্চলিক উত্তেজনার মাঝে ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইসরায়েলের সাথে যুদ্ধে ইরানের আঞ্চলিক মিত্র সিরিয়া, লেবানন, ইরাক এবং ইয়েমেনের সশস্ত্রগোষ্ঠীগুলোও জড়িয়েছে। মোসাদ্দেগ মোসাদেঘপুর বলেছেন, পেজেশকিয়ান ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা হ্রাস কিংবা প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোর প্রতি তেহরানের সমর্থন বন্ধ করবেন না।

প্রকৃতির ভাষা ও প্রাণের চাহিদা বোঝা বাজেট

এম জাকির হোসেন খান
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫, ১:৫৯ অপরাহ্ণ
প্রকৃতির ভাষা ও প্রাণের চাহিদা বোঝা বাজেট

মায়ের কোলে ঘুমিয়ে থাকা শিশুর নিঃশ্বাসে হয়তো ধুলাবালি নেই, হয়তো নেই নদী হারানোর দীর্ঘশ্বাস। কিন্তু তার ভবিষ্যৎ কি আমরা নিশ্চিত করে দিচ্ছি? হয়তো নয়। কারণ আমাদের জাতীয় বাজেটে প্রকৃতির কোনো স্বর নেই, নেই নদীর জন্য বরাদ্দ, বনাঞ্চলের কান্না বা একটি তপ্ত শহরের শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার সুযোগ।

২০২৪-২৫ অর্থ বছরের বাজেট আলোচনায় জলবায়ু পরিবর্তন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কিংবা নবায়নযোগ্য জ্বালানির কথা উঠে এসেছে-তবে গণমাধ্যমে। বাস্তবে, যে দেশ প্রতিবছর ৭ হাজার কোটি টাকার বেশি ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি হয় ঘূর্ণিঝড়ের কারণে, যে দেশে প্রায় ২ লাখ ৭০ হাজার মানুষ শুধু পরিবেশ দূষণের কারণে অকালে মৃত্যুবরণ করে, সেই দেশের বাজেটে জলবায়ু ও পরিবেশ খাতে বরাদ্দ জিডিপির মাত্র ০.৭০৬ শতাংশ-এ কি উপহাস নয়?

এ অবস্থার পেছনে রয়েছে একটি ‘উন্নয়ন-বিনাশ ফাঁদ’ (Development-Destruction Trap)। উন্নয়নের নামে প্রকৃতি ধ্বংস হচ্ছে, অথচ প্রকৃতির উপর নির্ভর করেই টিকে আছে কৃষি, খাদ্য, স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা। এ সংকট সমাধানে শুধুমাত্র খাতভিত্তিক বাজেট নয়, প্রয়োজন ন্যায্যতা ও অধিকার ভিত্তিক বাজেট কাঠামো, যেখানে প্রকৃতি ও জনগণের অধিকার সম্মান পায়।

চট্টগ্রামের উপকূলীয় এক গ্রামে ঘূর্ণিঝড় রেমালের পর একজন মাঝবয়সী নারী বলেছিলেন, ‘ঘর গেছে, জমি গেছে, এখন ছেলেমেয়েকে নিয়ে শুধু চাই—জীবনটা যেন একটু নিরাপদ হয়।’ কিন্তু বাজেট সেই নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি দিতে পারেনি।

বাংলাদেশের বাজেট প্রণয়ন ধারণাটি এখনো প্রকৃতিকে বোঝে না। প্রকৃতিকে ‘ব্যয়যোগ্য’ হিসেবে দেখা হয়, সংরক্ষণ নয়।

পানি উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ কমেছে; স্বাস্থ্য খাতে বাড়লেও তা নগণ্য; দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বরাদ্দ কমেছে মূল্যস্ফীতির হিসাব কষলে। আশ্চর্যজনক হলো, সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল যেমন রংপুর ও সুনামগঞ্জে জনপ্রতি বরাদ্দ সবচেয়ে কম, বরিশালের তুলনায় প্রায় ৯ গুণ কম। এই বৈষম্য কেবল অর্থনৈতিক নয়, এটি নৈতিক ব্যর্থতাও।

বাংলাদেশের বাজেট প্রণয়ন ধারণাটি এখনো প্রকৃতিকে বোঝে না। প্রকৃতিকে ‘ব্যয়যোগ্য’ হিসেবে দেখা হয়, সংরক্ষণ নয়। অথচ যুক্তরাষ্ট্রের এনভায়রনমেন্টাল প্রটেকশন এজেন্সির মতে, $১ বিনিয়োগ করলে পরিবেশগত প্রতিরক্ষা থেকে $৩০ পর্যন্ত আর্থিক সুবিধা আসে—ব্যবসা ভাষায় যাকে বলে বিনিয়োগের রিটার্ন।

আমাদের মাটি, জল, বাতাস আর জীববৈচিত্র্য আজ বিনষ্ট। এ বিনাশের খরচ কেবল সরকারি হিসাব নয়, প্রতিটি পরিবারের নিত্য জীবনের ভোগান্তি। সুস্থ বাচ্চা জন্ম দিতে না পারা এক মায়ের কান্নায়, গর্ভবতী নারীর ফুসফুসে জমে থাকা ধুলোয়, মাছের খাঁচা ভেসে যাওয়া একজন মৎস্যজীবীর অসহায়তায় সেই খরচ ধরা পড়ে।

তাহলে কেমন হওয়া উচিত প্রকৃতি-পরিবেশ বান্ধব বাজেট?

আমাদের প্রস্তাব একটি কাঠামোগত সংস্কারের দৃষ্টিভঙ্গি:

ক) প্রকৃতিকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি: বাংলাদেশের উচ্চ আদালতের নদীকে জীবন্ত সত্তা হিসেবে প্রদত্ত রায়কে মেনে সরকারের দ্রুত সমুদ্র, বন, পাহাড়কে ‘জীবন্ত সত্তা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে ‘প্রাকৃতিক অধিকার আইন’ প্রণয়ন করুন, যা প্রকৃতি ন্যায্যতাও। শুধু প্রকল্প বা কর্মসূচিতে প্রকৃতি নয়, প্রকৃতির নিজস্ব অস্তিত্বকে স্বীকার করুন এবং প্রাকৃতিক আইন মেনে অর্থায়ন করুন।

খ) ভূমি ও নদী ব্যবস্থাপনায় ন্যায্যতা: ঝুঁকির ভিত্তিতে অগ্রাধিকার দিন। সুনামগঞ্জ, রংপুর, কুড়িগ্রামের মতো জেলাগুলোয় পৃথক ‘ঝুঁকি সামলানো তহবিল’ গঠন করা দরকার।

গ) রাজস্ব উৎস হিসেবে সবুজ কর: কার্বন কর, দূষণ ফি ও পরিবেশ সংরক্ষণ ফি থেকে বছরে ৩ থেকে ৫ বিলিয়ন ডলার রাজস্ব আনা সম্ভব।

  • ইটভাটা, সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক, দূষণকারী পণ্য ও পরিবহন ও জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর পরিবেশ সুরক্ষা কর এবং কার্বন করারোপ করুন। মাত্র ১০ শতাংশ হারে এ ধরনের করারোপে প্রায় এক থেকে দেড় বিলিয়ন ডলার জোগান দেওয়া সম্ভব

(সূত্র: চেইঞ্জ ইনিশিয়েটিভ স্টাডি, ২০২৪)।

  • বরাদ্দের পরিমাণ: পরিবেশ, জলবায়ু ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে প্রকৃত বা পরিবেশ ও প্রকৃতির ক্ষয়-ক্ষতি বাদে প্রাক্কলিত নেট জিডিপির অন্তত ২০ শতাংশ বরাদ্দ দিতে হবে প্রকৃতির সুরক্ষা এবং কমিউনিটি নেতৃত্বাধীন রেজিলিয়েন্স নিশ্চিতে-

–               কৃষি খাতে: জিডিপির ৫ শতাংশ

–               পানি খাতে: ৫ শতাংশ

–               জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা ও পুষ্টি খাতে: ৫ শতাংশ

–               প্রাকৃতিক সুরক্ষা এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায়: ৫ শতাংশ

সুস্থ বাচ্চা জন্ম দিতে না পারা এক মায়ের কান্নায়, গর্ভবতী নারীর ফুসফুসে জমে থাকা ধুলোয়, মাছের খাঁচা ভেসে যাওয়া একজন মৎস্যজীবীর অসহায়তায় সেই খরচ ধরা পড়ে।

এই মুহূর্তে প্রশ্ন একটাই: আমরা কাকে বাঁচাতে চাই?

শুধু দালান, সড়ক আর মেগা প্রকল্পে কষ্টার্জিত বিনিয়োগ করলেও পানি, নিচে মাটি থাকবে তো? নদী কি থাকবে? মাছ এবং বীজ কি মাইক্রোপ্লাষ্টিক মুক্ত থাকবে?

প্রকৃতিকে বাদ দিয়ে তথাকথিত ধ্বংসাত্মক উন্নয়নকে বেছে নিলে পরিণতি কী হয় তা জানার জন্য সভ্যতাগুলো হারিয়ে যাওয়ার ইতিহাস পড়া উচিত ‘আমি সব জানি’ নীতিনির্ধারক এবং বিশেষজ্ঞদের।

প্রকৃতি প্রদত্ত সুজলা সুফলা বাংলাদেশের সাড়ে বারোশো নদী থেকে মাত্র ২৫০ এর মতো নদী বেচে থাকা, নির্মল বাতাসের ঢাকাকে বৈশ্বিক বায়ু দূষণের কেন্দ্রে পরিণত করা, নদীগুলো বিষের উৎসে পরিণত করাকে যারা উন্নয়ন হিসেবে দেখছেন সে সময় বেশি দূরে নয় যে, তাদের সামনে ভূতুরে অবকাঠামো দাঁড়িয়ে থাকবে-ঝড়ের মুখে, পানির সংকটে, বাতাসের বিষে প্রতিনিয়ত জীবন সংহার হবে।

একটি ন্যায্য, সহনশীল এবং প্রাকৃতিক অধিকার সুরক্ষাবান্ধব বাজেট বাজেট শুধু মানুষের নয়, প্রকৃতি ন্যায্যতা এবং স্থায়িত্বশীলতাও নিশ্চিত করবে।

এম জাকির হোসেন খান ।। প্রধান নির্বাহী, চেইঞ্জ ইনিশিয়েটিভ এবং প্রকৃতির সার্বভৌমত্ব, প্রাকৃতিক অধিকারভিত্তিক শাসন কাঠামার প্রণেতা

ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যেই নির্বাচন, এদিক-সেদিক যাওয়ার সুযোগ নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫, ১:৫৬ অপরাহ্ণ
ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যেই নির্বাচন, এদিক-সেদিক যাওয়ার সুযোগ নেই

পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যেই অনুষ্ঠিত হবে। এই সময়সীমার বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই।

শুক্রবার (২৩ মে) দুপুরে রাজধানীতে একটি প্রোগ্রাম শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা জানান।

রিজওয়ানা হাসান বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ইতোমধ্যে পরিষ্কারভাবে জানিয়েছেন যে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে।

তিনি বলেন, আমি প্রথম থেকেই বলে এসেছি যে উনি (প্রধান উপদেষ্টা) একটা সময় দিয়েছেন—ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। তার একদিনও এদিক-সেদিক হওয়ার কোনো সুযোগ আমাদের পক্ষ থেকে নেই। কাজেই এগুলো নিয়ে অন্য ধরনের কোনো কথা বলারও কোনো সুযোগ হওয়া উচিত নয়।

ড. ইউনূসের পদত্যাগ নিয়ে প্রতিক্রিয়ায় রিজওয়ানা হাসান বলেন, এখন কিছু কিছু গুরু দায়িত্ব আছে, সেগুলো পালনের সঙ্গেও তো মাসের একটা সম্পর্ক থাকতে পারে। যদি কোনো কিছু বলার থাকে, আমি নির্বাচনের প্রশ্নেও বলেছি, দায়িত্ব পালনের প্রশ্নেও বলেছি—ওটা আপনারা ওনার (প্রধান উপদেষ্টার) কাছ থেকেই শুনবেন।

চাপের প্রসঙ্গে রিজওয়ানা হাসান বলেন, ধরুন, প্রত্যাশার একটা চাপ হচ্ছে যে আমরা পারফর্ম করতে পারছি কি না। আমাদের বিবেচনায় ওটাই একমাত্র চাপ। এর বাইরে আর কোনো চাপ নেই।

তিনি আরও বলেন, আপনি এখন এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় মিটিংয়ে যাবেন—সচিবালয় থেকে যমুনা—যেতে পারবেন না, রাস্তা বন্ধ। কেন রাস্তা বন্ধ? এরকম অনেক সমস্যা আছে, যেগুলো আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান করা যায়। চাপ হচ্ছে আমাদের নিজেদের পারফরম্যান্সের। আমরা পারফর্ম করতে পারছি কি পারছি না।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, আমরা যদি আমাদের দায়িত্ব পালন করতে পারি, তাহলে আমাদের দায়িত্ব থাকাটা প্রাসঙ্গিক। আমরা যদি দায়িত্ব পালন করতে না পারি, আমাদের যার যার নিজস্ব কাজ আছে, তাহলে দায়িত্ব পালন করার আর প্রাসঙ্গিক থাকলো কি না?

আপনার কি দায়িত্ব পালন করতে পারছেন? এমন প্রশ্নের জবাব তিনি বলেন, অনেক প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে অনেক দূর এগিয়েছি। সংস্কার কমিশনগুলো তাদের প্রতিবেদন দিয়েছে, সেই প্রতিবেদনের ওপর রাজনৈতিক ঐক্য গড়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সব রাজনৈতিক দল সেখানে পার্টিসিপেট করছে। এটা কি পারা না? এটাতো পারা। আমরা একটা নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে বলে দিয়েছি যে, ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে সেটাও একটা পারা। বিচার ট্রাইব্যুনাল একটা ছিল এখন দুইটা হয়েছে, আগামীকাল থেকে ট্রায়ালার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে, কিন্তু জিনিসগুলা স্মুথ যেতে হবে। এগুলোতে কোনো রকমের প্রতিবন্ধকতা না আসে, সেটা প্রথম থেকে একটা আহ্বান ছিল। এই কাজগুলো আমরা সঠিক প্রক্রিয়াতে শেষ করতে চাই।

‘গতকালকে আমাদের মিটিংয়ের পর অনেকক্ষণ আলোচনা করেছি। মোটা দাগে আমাদের দায়িত্ব তিনটা। তিনটায় কঠিন কঠিন দায়িত্ব। একটা দায়িত্ব হচ্ছে সংস্কার, আরেকটা দায়িত্ব হচ্ছে বিচার, আরেকটা দায়িত্ব হচ্ছে নির্বাচন। শুধুমাত্র নির্বাচন করার জন্য আমরা দায়িত্ব নেইনি।’

তিনি বলেন, আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে যার যত দাবি আছে সবগুলো নিয়ে রাস্তায় বসে যাচ্ছে। রাস্তা আটকে দিচ্ছে, একদম ঢাকা শহর অচল করে দিচ্ছে। সে অচলাবস্থা নিরসনে আমরা কিছু করতে পারছি কি না? আমরা আগেও বলেছি আমরা ক্ষমতার নেইনি দায়িত্বে আছি। এই দায়িত্ব পালন করা তখনই আমাদের জন্য সম্ভব হবে, যখন আমরা সবার সহযোগিতা পাব। প্রত্যাশার বিষয়টা এক, আর দায়িত্ব পালন করার বিষয়টা আরেক। আমরা চিন্তা করেছি আসলে দায়িত্ব পালন করতে পারছে কি না।

গুজবে কান দেবেন না, বিভ্রান্ত হবেন না : সেনাবাহিনী

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫, ১:৫৪ অপরাহ্ণ
গুজবে কান দেবেন না, বিভ্রান্ত হবেন না : সেনাবাহিনী

জনগণকে গুজবে কান না দেওয়ার অনুরোধ করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।

শুক্রবার দুপুরে ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে সচেতনতামূলক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে লেখা এক পোস্টে এ আহ্বান জানায় বাহিনী।

সেনাবাহিনী বলছে, সম্প্রতি একটি স্বার্থান্বেষী মহল বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর লোগো ব্যবহার করে একটি ভুয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে, যার মাধ্যমে সাধারণ জনগণের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টির পাশাপাশি সশস্ত্র বাহিনী ও জনগণের মধ্যে বিভেদ তৈরির অপচেষ্টা চলছে।

পোস্টে আরও লেখা হয়, গুজবে কান দেবেন না, বিভ্রান্ত হবেন না। সত্যতা যাচাই করুন, সচেতন থাকুন।

এ পোস্টের সঙ্গে ভুয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তিটির ছবিও জুড়ে দেওয়া হয়।

"> ">
প্রকৃতির ভাষা ও প্রাণের চাহিদা বোঝা বাজেট ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যেই নির্বাচন, এদিক-সেদিক যাওয়ার সুযোগ নেই গুজবে কান দেবেন না, বিভ্রান্ত হবেন না : সেনাবাহিনী বীরগঞ্জে ভুয়া ফেসবুক আইডি থেকে মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন ভারত এই পরাজয় কখনোই ভুলতে পারবে না : শেহবাজ লন্ডনে সালমান এফ রহমানের ছেলে শায়ানের সম্পত্তি জব্দ এখনই রাজনীতিতে আসছেন না ডা. জোবাইদা রহমান ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখেই বাঁচতে চায় মুরসালিম এবার প্রকৃতির তাণ্ডব কাশ্মিরে, তাপমাত্রার রেকর্ড ভাঙল ৫৭ বছরের গরুর মাংসে আগুন-মাছেও অস্বস্তি, মুরগিতে ঝুঁকছেন ক্রেতারা কানের উদ্দেশে রওনা দিলেন আলিয়া বাজারে সবজির দামে কিছুটা স্বস্তি ‘পদত্যাগের’ কথা ভাবছেন ড. ইউনূস, না করার অনুরোধ নাহিদের জুলাই ঐক্য বিনষ্টের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ঢাবিতে বিক্ষোভ উপদেষ্টা মাহফুজের পর হাসনাতেরও ঐক্যের ডাক প্রধান উপদেষ্টাকে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার আহ্বান জামায়াত আমিরের ব্রাইডাল লুকে মুগ্ধতা ছড়ালেন অপু বিশ্বাস না আছে মরার ভয় না আছে হারাবার কিছু : আসিফ মাহমুদ গ্রেপ্তারের ক্ষমতা পেলেন ট্টাইব্যুনালের তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন নাহিদ ইসলাম সেনানিবাসে আশ্রয় নেওয়াদের পরিচয় প্রকাশ করল আইএসপিআর বীরগঞ্জে বীজ ডিলার ও কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত চলমান আন্দোলনের বিষয়ে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের প্রেস বিজ্ঞপ্তি নাগরিক ছাত্র ঐক্য সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা বীরগঞ্জে ট্রাক-মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৪ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু শেরপুরের বিমলের বাড়িতে মাদকের আখরা, যেন দেখার কেউ নেই! ভবানীপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের উদ্যোগে ফুটবল টুর্ণামেন্ট হবিগঞ্জের থানা পুলিশ অঞ্জাত কিশোরীর লাশ উদ্ধারের পরিচয় সনাক্তে ফেইসবুকে পোস্ট বীরগঞ্জে এনসিপি নেতা হাসনাতের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল নানা কর্মসূচীর মধ্যদিয়ে বীরগঞ্জে আন্তর্জাতিক মহান মে দিবস পালিত