খুঁজুন
শুক্রবার, ২৩শে মে, ২০২৫, ৯ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

শ্রমিক আন্দোলন কি সবসময় মুক্তির পথ দেখায়?

ড. সুলতান মাহমুদ রানা প্রকাশিত: শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৪, ১২:২২ অপরাহ্ণ
শ্রমিক আন্দোলন কি সবসময় মুক্তির পথ দেখায়?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় মেক্সিকান আমেরিকান নাগরিক অধিকার কর্মী সিজার শ্যাভেজ (Cesar Chavez) এবং ফিলিপিনো আমেরিকান সংগঠক ল্যারি ইটলিয়ং (Larry Itliong)-এর নেতৃত্বে নব-সংগঠিত খামার কর্মীরা ভালো বেতন এবং আরও বেশি মানবিক কাজের পরিস্থিতির দাবিতে পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে আন্দোলন করেছিলেন।

তারা আংশিকভাবে মিছিল এবং অনশনের মতো অহিংস প্রতিবাদী কৌশল অবলম্বন করেন। তাদের দীর্ঘ সংগ্রামের ফলে সরকার দাবি মেনে নিতে বাধ্য হয়। ওই সময়ে ক্যালিফোর্নিয়া কৃষি শ্রম সম্পর্ক আইন ১৯৭৫ প্রণয়ন করে—যা রাজ্যজুড়ে কৃষকদের সম্মিলিত দর কষাকষির ক্ষমতা দেয়। কৃষক-শ্রমিক ক্রমেই অধিকার পায়। আবার ক্রমেই নতুন দাবি-দাওয়া তৈরি হয়।

সারা পৃথিবীতে শ্রমিকদের কল্যাণে নানা ধরনের আইন থাকা সত্ত্বেও এখনো শ্রম কিংবা শ্রমের পারিশ্রমিক নিয়ে দর কষাকষি করতেই হয়। পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশেই শ্রমিক আন্দোলন একটি সাধারণ বিষয়ে পরিণত হয়েছে। শ্রমিকরা যেন বঞ্চিত না হয়, তাদের দাবি যেন গুরুত্ব পায়—সেজন্য যুগে যুগে বিভিন্ন দেশের অর্থনীতির বিকাশ ও বৈষম্য কমানোর উদ্যোগ আমরা লক্ষ করেছি।

তারপরও আইনে বৈষম্য, মজুরিতে বৈষম্য, নারী পুরুষ শ্রমিকের বৈষম্য, অধিকারে বৈষম্য বিশ্বব্যাপী আমাদের সামনে রয়ে গেছে। এসব বৈষম্য নিরসন এবং বিভিন্ন অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য অসংখ্য শ্রমিক রক্ত দিয়েছে যুগে যুগে। তারপরও শ্রমিকদের তাদের দাবি-দাওয়া তথা নানা ধরনের বৈষম্য নিরসনের লক্ষ্যে প্রতিদিন ছুটতে হচ্ছে, এমনকি লড়াই করতে হচ্ছে। নামতে হচ্ছে রাজপথে। বুকের তাজা রক্ত দিয়ে অধিকার প্রতিষ্ঠা করছে।

উন্নত, উন্নয়নশীল কিংবা অনুন্নত যে দেশের কথাই বলি না কেন—কোনো দেশই এই সংকটের বাইরে নেই। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের অধ্যাপক আরভিন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্বের সবচেয়ে সহিংস শ্রম ইতিহাসের প্রমাণ রয়েছে—বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ধর্মঘটকে অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে যুগ যুগ ধরে ব্যবহার করে আসছে সাধারণ নিপীড়িত শ্রমিক জনতা।

আইনে বৈষম্য, মজুরিতে বৈষম্য, নারী পুরুষ শ্রমিকের বৈষম্য, অধিকারে বৈষম্য বিশ্বব্যাপী আমাদের সামনে রয়ে গেছে। এসব বৈষম্য নিরসন এবং বিভিন্ন অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য অসংখ্য শ্রমিক রক্ত দিয়েছে যুগে যুগে।

মার্কিন ডাক বিভাগের কর্মচারীরা ইউএস পোস্টাল সার্ভিসের অগ্রদূত। বছরের পর বছর কম বেতন এবং দেশের মেইল প্রসেসিং এবং ডেলিভারির কাজ করে। কিন্তু তাদের সামান্য লিভারেজ ছিল। কারণ ফেডারেল কর্মচারীদের ধর্মঘট করা বেআইনি ছিল। কিন্তু ১৯৭০ সালের মার্চে নিউইয়র্কের ডাককর্মীরা তাদের নিজস্ব ইউনিয়ন নেতৃত্বকে অস্বীকার করে ধর্মঘট ডাকে। শিগগিরই অন্যত্র শ্রমিকরা ফেডারেল সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গে সেই ধর্মঘটে যোগ দেয়।

অবশেষে নিক্সন প্রশাসন তাদের পূর্ববর্তী বেতন বৃদ্ধি করে এবং আট দিন পর ডাকবিভাগের কর্মীরা আবার কাজে ফেরে। ১৯৭১ সালে ইউএসপিএস গঠনের পর ডাক কর্মীদের বেতন এবং কাজের অবস্থা নিয়ে আলোচনা করার অধিকার দেওয়া হয়েছিল।

ভারতবর্ষেও এমন উদাহরণ অসংখ্য রয়েছে। আমাদের এই উপমহাদেশে শ্রমিক আন্দোলনরে অসংখ্য নজির রয়েছে। শ্রমিকরা লড়াই করেছে, রক্ত দিয়েছে, দাবিও বাস্তবায়ন করেছে। শ্রমিকদের কোনো ন্যায্য দাবি বাস্তবায়ন হয়নি—এমন ঘটনা নেই বললেই চলে।

২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শ্রমিকের ক্ষমতায়ন ও অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং শ্রম পরিবেশের উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্র কাজ করবে বলে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধ অর্জন, সরবরাহ ব্যবস্থার অভিঘাত সহনশীলতা বৃদ্ধিসহ সবার জন্য সমান ক্ষেত্র প্রস্তুতিতে শ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা গুরুত্বপূর্ণ।

এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রে বৈশ্বিকভাবে বিদ্যমান যে নীতি রয়েছে, তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে অন্য দেশগুলো শ্রমিকের ক্ষমতায়ন ও শ্রমিক ইউনিয়নগুলো এগিয়ে নেওয়া হবে বলে জানায়। পাশাপাশি শ্রমিক ও শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে কর্মসূচি প্রণয়ন ও জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করার নির্দেশনাও দেওয়া হয়। এমনকি আমরা লক্ষ করেছি, বাংলাদেশের শ্রমিক আন্দোলন নিয়েও যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ নজর রয়েছে—সেটি আমরা সাম্প্রতিক সময়ের পরিস্থিতিতে লক্ষ করেছি।

উল্লেখ্য, উন্নয়নশীল দেশগুলোয় শ্রমিকদের অধিকার প্রসঙ্গে সংকট অধিকভাবে লক্ষ করা যায়। বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশে হিসেবে এই সংকটের মধ্যে রয়েছে সবসময়ই। এখানে শ্রমিকদের দাবির শেষ নেই। কারণ এখানে শুধু শ্রমিক নয় সাধারণ মানুষের দাবিরও শেষ নেই।

অনেক মানুষ রয়েছেন দারিদ্র্য ও অতিদারিদ্র্য অবস্থায়। দৈনিক, সাপ্তাহিক কিংবা মাসিক আয় দিয়ে সংসার চালানো দায় হয়ে পড়েছে অনেকের। ধনীরা টের না পেলেও মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্তরা অনেকটা দিশেহারা হতে চলেছে। কৃষক-শ্রমিক তাদের ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তিতে সংকটের মুখোমুখি। বাজারে গিয়ে শ্রমিক এবং দিনমজুরদের সাথে কথা বললে হতাশা এবং ক্ষোভের কথা শুনতে পাই।

ব্রিটিশ ভারত, পাকিস্তান-পরবর্তী বাংলাদেশ, এমনকি বর্তমানেও শ্রমিক অসন্তোষ অনেক। উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান, ৭১-এর স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে শ্রমিক আন্দোলন এবং ২৪ এর জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে শ্রমিকদের বড় ভূমিকা ছিল। ঐতিহাসিকভাবে শ্রমিকশ্রেণি শুধু নিজের জন্য নয়, সামগ্রিকভাবে দেশের উন্নয়ন ও গণমানুষের অধিকার আদায়ের জন্য লড়াই-সংগ্রাম করেছে শ্রমিকরা। একটি সমস্যার সমাধান হলে, নতুন আরেকটি সমস্যা সামনে আসে। এ জন্য শুধু দেশের অর্থনীতি দায়ী নয়। মানুষের চাহিদার যেমন শেষ নেই, ঠিক তেমনি বৈষম্যের শেষ নেই।

পৃথিবীর সব দেশেই একটির পর একটি বৈষম্য সামনে আসে। একটি বৈষম্য নিরসন হলে আরেকটি বৈষম্য সামনে আসে। এক্ষেত্রে আমাদের বলতেই হয়, যেকোনো দেশের অর্থনীতি দাঁড়িয়ে থাকে সে দেশের শ্রমজীবী মানুষের শ্রম ও ঘামের ওপর। কৃষি উৎপাদন, প্রবাসী রেমিট্যান্স এবং গার্মেন্টস শ্রমিকরাই সচল রাখে অর্থনীতি। আরও স্পষ্ট করে বললে, তুলনামূলক স্বল্পশিক্ষিত মেহনতি মানুষই আর্থিক খাতের প্রাণশক্তি হয়।

সাধারণত স্বপ্নভঙ্গ আর হতাশার মধ্যে আশার দিক হচ্ছে গণতন্ত্রকামী জনতার পাশাপাশি শ্রমিকরা সংগঠিত হয়। যুগযুগ ধরে বিশ্বব্যাপী তাই লক্ষ করা গেছে। শ্রমিকশ্রেণি সংগঠিত প্রতিরোধের মাধ্যমে নিজেদের কথা বলছে। রাস্তায় নামছে। রক্ত ও জীবন দিতেও পিছ পা হচ্ছে না।

রাজনীতির পাশাপাশি কৃষক, শ্রমিক আর ছাত্র আন্দোলনই পারে যেকোনো দেশের মুক্তির পথ দেখাতে। এমন দৃষ্টান্ত রয়েছে অসংখ্য। দেশ ও জাতির ক্রান্তিলগ্নে শ্রমিক অধিকার নিয়ে সোচ্চার হওয়ার ঘটনা আমাদের নতুন স্বপ্ন দেখায়।

শ্রমিকশ্রেণি নতুন ইতিহাস লেখার রসদ জোগাচ্ছে। নব উদ্যমে আন্দোলন ও সংগ্রামের ভিত্তি তৈরি করছে। এমনকি আমরা লক্ষ করেছি সব ক্ষেত্রেই শ্রমিকদের পক্ষে সোচ্চার হয়েছে দেশ ও বিদেশের গণতান্ত্রিক শক্তি।

আমরা লক্ষ করি, শ্রমিকশ্রেণির সাংগঠনিক ও সমষ্টিগত লড়াই সমাজে ন্যায় ও সমতা প্রতিষ্ঠার জন্য। শ্রমিকরা সাহস পাচ্ছে, সংগঠিত হচ্ছে, রাস্তায় নামছে শুধু বেতনের জন্য নয়, দেশ ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্যও। রাজনীতির পাশাপাশি কৃষক, শ্রমিক আর ছাত্র আন্দোলনই পারে যেকোনো দেশের মুক্তির পথ দেখাতে। এমন দৃষ্টান্ত রয়েছে অসংখ্য। দেশ ও জাতির ক্রান্তিলগ্নে শ্রমিক অধিকার নিয়ে সোচ্চার হওয়ার ঘটনা আমাদের নতুন স্বপ্ন দেখায়। নিজেদের অধিকার এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনেও শ্রমিক আন্দোলন অনেক বেশি প্রয়োজন।

অতীতে শ্রমিকশ্রেণি বারবার সভ্যতার গতিপথ পাল্টে দিয়েছে। আধুনিক সমাজে আজও শ্রমিকের সেবা ছাড়া একটি মুহূর্তও কল্পনা করা যায় না। শ্রমিকদের রক্ত আর ঘামের ওপর দাঁড়িয়ে আছে এ সভ্যতা। শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত রেখে তাদের ওপর জুলুম করা চরম মানবাধিকারের লঙ্ঘনের শামিল।

বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কারের সঙ্গে সঙ্গে শ্রমিক আন্দোলনের ধরন, গঠন ও চর্চার মধ্যেও নতুন চিহ্ন তৈরি করার সময় এসেছে। সংস্কার, জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা অন্তর্বর্তী সরকারসহ সব সরকারের উদ্যোগের মধ্যে প্রতিফলিত হতে হবে শ্রমিক এবং দিনমজুরদের প্রত্যাশা। কারণ এই জাতির ইতিহাস কৃষক-শ্রমিকদের ত্যাগের ইতিহাসের সাথে জড়িত।

ড. সুলতান মাহমুদ রানা ।। অধ্যাপক, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

‘পদত্যাগের’ কথা ভাবছেন ড. ইউনূস, না করার অনুরোধ নাহিদের

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫, ১২:৩১ পূর্বাহ্ণ
‘পদত্যাগের’ কথা ভাবছেন ড. ইউনূস, না করার অনুরোধ নাহিদের

দেশের সর্বত্র উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে গুঞ্জন শুরু হয়েছে পদত্যাগের চিন্তা করছেন অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এমন গুঞ্জনের মধ্যে তার সঙ্গে দেখা করে আসলেই পদত্যাগ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ভাবছেন বলে নিশ্চিত করলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। অবশ্য তিনি যেন এমন সিদ্ধান্ত না নেন সেই অনুরোধ জানিয়েছেন সাবেক তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গিয়ে তার সাথে সাক্ষাৎ করেন নাহিদ ইসলাম। পরে বিবিসি বাংলাকে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘দেশের চলমান পরিস্থিতি, স্যারেরতো পদত্যাগের একটা খবর আমরা আজকে সকাল থেকে শুনছি। তো ওই বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে স্যারের সাথে দেখা করতে গেছিলাম। প্রধান উপদেষ্টা দেশের চলমান পরিস্থিতিতে কাজ করতে পারবেন না এমন শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।’

এসময় তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদও ছিলেন বলে জানা গেছে।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘স্যার বলছেন আমি যদি কাজ করতে না পারি… যে জায়গা থেকে তোমরা আমাকে আনছিলা একটা গণঅভ্যুত্থানের পর, দেশের পরিবর্তন, সংস্কার…। কিন্তু যেই পরিস্থিতি যেভাবে আন্দোলন বা যেভাবে আমাকে জিম্মি করা হচ্ছে। আমিতো এভাবে কাজ করতে পারবো না। তো রাজনৈতিক দলগুলা তোমরা সবাই একটা জায়গায়, কমন জায়গায় না পৌঁছাতে পারো।’

প্রধান উপদেষ্টাকে পদত্যাগের মতো সিদ্ধান্ত না নিতে আহ্বান জানিয়েছেন নাহিদ। এ প্রসঙ্গে নাহিদ বলেন, ‘আমাদের গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা এবং জাতীয় নিরাপত্তা ও দেশের ভবিষ্যৎ সবকিছু মিলিয়ে উনি যাতে শক্ত থাকেন এবং সব দলকে নিয়ে যাতে ঐক্যের জায়গায় থাকেন, সবাই তার সাথে আশা করি কো-অপারেট করবেন।’

প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগের বিষয়টি বিবেচনা করছেন জানিয়ে নাহিদ বলেন, ‘হ্যাঁ, যদি কাজ করতে না পারেন, থাকবেন, থেকে কী লাভ। উনি বলছেন উনি এ বিষয়ে ভাবছেন। ওনার কাছে মনে হয়েছে পরিস্থিতি এরকম যে তিনি কাজ করতে পারবেন না।’

পদত্যাগের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার এখনকার মনোভাবের বিষয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘এখন ওনি যদি রাজনৈতিক দল তার পদত্যাগ চায়… সেই আস্থার জায়গা, আশ্বাসের জায়গা না পাইলে উনি থাকবেন কেন?’

জুলাই ঐক্য বিনষ্টের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ঢাবিতে বিক্ষোভ

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫, ১২:২৮ পূর্বাহ্ণ
জুলাই ঐক্য বিনষ্টের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ঢাবিতে বিক্ষোভ

জুলাইয়ের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক শক্তির মধ্যে ফাটল তৈরি ও ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ র‍্যালি ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে গণ-অভ্যুত্থানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৮০টি সংগঠনের ঐকবদ্ধ প্লাটফর্ম ‘জুলাই ঐক্য’।

আজ বৃহস্পতিবার (২২ মে) রাত ১১ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে  প্রতিবাদ র‌্যালি শুরু হয়ে শাহবাগ মোড় ঘুরে আবারও রাজু ভাস্কর্যের এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

সমাবেশে অংশ নেওয়া সংগঠনগুলোর নেতারা বলেন, “যে ঐক্য নিয়ে আমরা জুলাই গণঅভ্যুত্থান করেছিলাম সে ঐক্য ভাঙতে দেশি বিদেশি ষড়যন্ত্র হচ্ছে। যারা ষড়যন্ত্র করে জুলাই ঐক্যকে বিনষ্ট করতে চাইবে জুলাই জনতা তাদেরকে আবারও দিল্লিতে পাঠিয়ে দেবে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে আমরা লড়ে যাবো। ভারতীয়, মার্কিন আগ্রাসনে ও দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে জুলাই জনতা বুক পেতে আবার রাজপথে নেমে আসবে। আমরা আবারও বুকের তাজা রক্ত দেবো তবুও বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নষ্ট হতে দেবো না।”

এ সময়  বক্তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “সচিবালয়ে ফ্যাসিবাদের অনেক দোসর বসে আছে। ৩১ মে এর মধ্যে সচিবালয় থেকে ফ্যাসিবাদের সকল দোসর  অপসারণ না করলে সচিবালয় ঘেরাও হবে।”

জুলাই ঐক্যের আপ বাংলাদেশের প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ আল মিনহাজ বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে যে সকল ভারতীদের পুনর্বাসন করা হয়েছে তাদের চিহ্নিত করে অতি দ্রুত অপসারণ করতে হবে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “জুলাইয়ের শহীদদের রক্তের ওপর আপনার সরকার গঠিত। আমরা আপনার ওপর আস্থা রাখতে চাই। জুলাইয়ের ঐক্যকে যারা নষ্ট করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। অতি দ্রুত জুলাই ঘোষণাপত্র ঘোষণা দেন এবং আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত করুন।”

জুলাই ঐক্যের অন্যতম সংগঠক মোসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মদ বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের সুচিকিৎসার না দিয়ে উপদেষ্টারা ক্ষমতা উদযাপন শুরু করেছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে ভারতীয় আধিপত্যবদের দোসরা আবারও দেশকে ভারতের কাছে তুলে দিতে চায়। উপদেষ্টা পরিষদে ভারতীয় কোনো দালাল থাকতে পারবে না। জুলাই যোদ্ধারা বেঁচে থাকতে তা সফল হবে না। এবার রাজপথে নামতে হলে আপনাদের উৎখাত করে দেশ ছাড়া করা হবে। যারা জুলাই ঐক্যের ফাটল ধরানোর চেষ্টা করছে তাদের চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থা করুন।”

এছাড়াও জুলাই স্পিরিট ধরে রেখে নতুন বাংলাদেশ গড়তে সকল ভেদাভেদ ভুলে সকল রাজনৈতিক ও সমাজিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

এ সময় মোসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মদ জুলাই ঐক্যের পক্ষ থেকে তিন দফা দাবি জানান। জুলাই ঐক্যের ৩ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে—

ক) জুলাইয়ের সকল শক্তিকে বিনষ্ট করতে যে সকল ভারতীয় এজেন্ট কাজ করছে তাদের অবিলম্বে খুজে বের করে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে হবে।

খ) উপদেষ্টা পরিষদে যারা ভারতের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে ব্যাতিব্যাস্ত অবিলম্বে তাদের অপসারন করে উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন করতে হবে।

গ) অবিলম্বে জুলাই ঘোষণাপত্র যথা সময়ে দিতে হবে।

উপদেষ্টা মাহফুজের পর হাসনাতেরও ঐক্যের ডাক

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫, ১২:০৪ পূর্বাহ্ণ
উপদেষ্টা মাহফুজের পর হাসনাতেরও ঐক্যের ডাক

আগের সব ‘বিভাজনমূলক বক্তব্য ও শব্দচয়নের’ জন্য দুঃখ প্রকাশ করে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম দেশপ্রেমিক শক্তির ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন। তার সঙ্গে সুর মিলিয়ে একই আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহও।

হাসনাত বলেছেন, “এ দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য এবং পতিত ফ্যাসিবাদের নগ্ন, দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র থেকে মুক্তির জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।”

বৃহস্পতিবার (২২ মে) উপদেষ্টা মাহফুজ আব্দুল্লাহ ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার কিছুক্ষণ পরেই নিজের ভেরিফায়েড আইডিতে এমন আহ্বান জানান হাসনাত আব্দুল্লাহ।

সেখানে তিনি লিখেচেন, “জুলাইয়ের ফ্যাসিবাদবিরোধী সব শক্তির প্রতি আহ্বান—যে বিভাজনটা অপ্রত্যাশিতভাবে আমাদের মধ্যে এসেছিল, সেই বিভাজনকে দেশ ও জাতির স্বার্থে মিটিয়ে ফেলতে হবে।”

তিনি সবাইকে সতর্ক করে বলেন, “মনে রাখবেন আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পতনে দেশে-বিদেশে অনেকে নাখোশ হয়ে আছে। এই নাখোশ বান্দারা আমাদের বিভাজনের সুযোগ নিতে নিতে আজকের এই অস্থিতিশীল দিন এনেছে। আমরা সবাই এক হয়েছিলাম বলেই দীর্ঘ দেড় যুগের শক্তিশালী ফ্যাসিবাদকে তছনছ করতে পেরেছিলাম। আমরা খণ্ড-বিখণ্ড হলে পতিত ফ্যাসিবাদ ও তার দেশি-বিদেশি দোসরেরা আমাদের তছনছ করার হীন পাঁয়তারা করবে।”

হাসনাত বলেন, “দেশ ও জাতির প্রতি দায় এবং দরদ আছে বলেই আমরা এক হয়ে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়েছিলাম। দেশ ও জাতির জন্যই এবার আমাদের এক হয়ে আমাদের স্বদেশকে বিনির্মাণ করতে হবে। কোনও ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর স্বার্থের জন্য এই ঐক্য নয়, বরং আমাদের দেশের জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকার কোনও বিকল্প নেই।”

"> ">
‘পদত্যাগের’ কথা ভাবছেন ড. ইউনূস, না করার অনুরোধ নাহিদের জুলাই ঐক্য বিনষ্টের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ঢাবিতে বিক্ষোভ উপদেষ্টা মাহফুজের পর হাসনাতেরও ঐক্যের ডাক প্রধান উপদেষ্টাকে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার আহ্বান জামায়াত আমিরের ব্রাইডাল লুকে মুগ্ধতা ছড়ালেন অপু বিশ্বাস না আছে মরার ভয় না আছে হারাবার কিছু : আসিফ মাহমুদ গ্রেপ্তারের ক্ষমতা পেলেন ট্টাইব্যুনালের তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন নাহিদ ইসলাম সেনানিবাসে আশ্রয় নেওয়াদের পরিচয় প্রকাশ করল আইএসপিআর বীরগঞ্জে বীজ ডিলার ও কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত চলমান আন্দোলনের বিষয়ে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের প্রেস বিজ্ঞপ্তি নাগরিক ছাত্র ঐক্য সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা বীরগঞ্জে ট্রাক-মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৪ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু শেরপুর সীমাবাড়ি ইউনিয়নের কদিম হাঁসড়া গ্রামে বিমলের বাড়িতে মাদকের আখরা, যেন দেখার কেউ নেই রাষ্ট্র সংস্কারের অংশ হিসেবে গ্রাহক সেবার মানোন্নয়নে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডে বড় ধরনের বদলি! ভবানীপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের উদ্যোগে আরাফাত রহমান কোকো ফুটবল টুর্ণামেন্ট উদ্বোধন হবিগঞ্জের বানিয়াচং থানা পুলিশ অঞ্জাত কিশোরীর লাশ উদ্ধারের পরিচয় সনাক্তে ফেইসবুকে পোস্ট বীরগঞ্জে এনসিপি নেতা হাসনাতের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল নানা কর্মসূচীর মধ্যদিয়ে বীরগঞ্জে আন্তর্জাতিক মহান মে দিবস পালিত বীরগঞ্জে মহান শ্রমিক দিবস পালিত ছোনকায় মহান মে দিবস উপলক্ষে বর্নাঢ্য র‌্যালী শেষে শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পন কাহারোলে স্কাউটস দিবস উপলক্ষে র‍্যালি,পরিষ্কার- পরিচ্ছন্নতা অভিযান ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমারের যন্ত্রাংশ চুরি করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তির মৃত্যু দুদকের আকস্মিক অভিযান: বীরগঞ্জ হাসপাতালে দুর্নীতির চিত্র উন্মোচিত শেরপুরে চোরসহ টলিগাড়ি পাবনার ভাঙ্গুরায় আটক শেরপুরে ইউনিয়ন জামাতের সেক্রেটারীর ভাই ৭৫০ পিস ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার শেরপুরে কলেজের অধ্যক্ষের দূর্ণীতির বিরুদ্ধে মানববন্ধন।। শেরপুরে সভাপতি কর্তৃক অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দূর্ণীতি তদন্ত করার কারনে সভাপতি পরিবর্তন নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে শেরপুর উপজেলা বিএনপি’র আনন্দ শোভাযাত্রা শেরপুরে মাদ্রাসা শিক্ষিকার আত্মহত্যা।