লেবানন থেকে ইসরায়েলে হামলা, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার

লেবানন থেকে ইসরায়েলে হামলা, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে লেবানন থেকে ইসরায়েলে গোলাবর্ষণ করা হয়েছে। তবে এই হামলায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। অনেক হামলার ক্ষেত্রে হিজবুল্লাহর সদস্যরা আধুনিক প্রযুক্তিও ব্যবহার করছে।
সোমবার ইসরায়েলি সেনারা জানিয়েছে যে হিজবুল্লাহর যোদ্ধারা দু’টি মর্টার হামলা করেছে। ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকেই লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর মধ্যে বিচ্ছিন্ন সংঘাত চলছে।লেবাননের শক্তিশালী সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহ ইসরায়েলের উত্তর দিকের সীমানায় থাকা মিলিটারি পোস্টে বেশ কয়েকবার রকেট ও বোমা হামলা চালিয়েছে।
জবাবে ইসরায়েলের বাহিনীও লেবাননের দিকে বেশ কয়েক দফা রকেট ছুঁড়েছে। গত মাসে ইসরায়েলের হামলায় অন্তত ছয়জন হিজবুল্লাহ সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন। অপরদিকে হিজবুল্লাহর রকেট হামলায়ও এর মধ্যে বেশ কয়েকজন ইসরায়েলি সেনা আহত ও নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
হিজবুল্লাহর শীর্ষ নেতারা বেশ কিছু দিন ধরেই সতর্ক করে আসছেন যে গাজায় বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলা বন্ধ না হলে পুরো মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ ছড়িয়ে যেতে পারে।
এছাড়া লেবাননের এ প্রতিরোধ সংগঠনটির ক্ষতি করার ক্ষেত্রে ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর কার্যকারিতা সাম্প্রতিক দিনগুলোতে কমে গেছে বলে ইসরায়েলি টিভি চ্যানেলগুলো খবর দিয়েছে। ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর সক্ষমতা কীভাবে অচল করে দিতে হয় তা হিজবুল্লাহ রপ্ত করেছে বলে চ্যানেলগুলো জানিয়েছে। এক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করছে লেবাননের এ সশস্ত্র গোষ্ঠীটি।
ইসরায়েলের চ্যানেল-১৩ গতকাল (সোমবার) এক প্রতিবেদনে বলেছে, ইসরায়েলি বিমান বাহিনী এখন আর লেবানন সীমান্তের ওপারে গিয়ে অভিযান চালিয়ে সুবিধা করতে পারছে না। কারণ, ওই বাহিনীর সামরিক সক্ষমতা অচল করে দেওয়ার কৌশল ও প্রযুক্তিতে সফলতা দেখিয়েছে হিজবুল্লাহ।
চ্যানেলটি বলেছে, উল্টো সীমান্তের ওপার থেকে হিজবুল্লাহর হামলায় ইসরায়েলি সেনাদের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হচ্ছে।
ইসরায়েলের চ্যানেল-১২-কে একজন সামরিক বিশেষজ্ঞ বলেছেন, রোববার হিজবুল্লাহ যেভাবে ইসরায়েলি সেনা অবস্থান লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে তা তেল আবিবের জন্য লজ্জা বয়ে এনেছে।
বিভিন্ন রিপোর্টে জানা গেছে, গত মাসের শেষ দিকে হিজবুল্লাহ ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইসরায়েলি গোয়েন্দা ড্রোনগুলো ফেলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় এবং তা বাস্তবায়নে সাফল্য পায়। ইসরায়েলি বাহিনী লেবানন সীমান্তে হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের অবস্থান শনাক্ত করার কাজে এসব ড্রোন ব্যবহার করে।
হিজবুল্লাহ মহাসচিব সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ গত শনিবার এক বক্তব্যে বলেছেন, গাজা উপত্যকায় পাশবিক হামলা বন্ধ করার জন্য তার সংগঠনের যোদ্ধারা ইসরায়েলের ওপর চাপ বৃদ্ধি করে যাবে। গাজায় গত ৭ অক্টোবর থেকে প্রায় ১২ হাজার ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি সেনারা, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
হিজুবল্লাহ নেতা বলেন, তার বাহিনী হেভি-কেলিবারের বুরকান ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করছে যা ৫০০ কেজি ওজনের ওয়ারহেড বহন করতে সক্ষম। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে চলা যুদ্ধে এই ক্ষেপণাস্ত্র হিজবুল্লাহর সামরিক সক্ষমতাকে বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে বলে তিনি জানান।
সূত্র : আল-জাজিরা, বিবিসি, প্রেস টিভি
উত্তরের কন্ঠ /এ,এস
আপনার মতামত লিখুন