খুঁজুন
শুক্রবার, ২৩শে মে, ২০২৫, ৯ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

তিস্তা চুক্তি : বন্ধুত্ব না স্বার্থের সংঘাত?

ড. সুজিত কুমার দত্ত প্রকাশিত: সোমবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৯:০৫ পূর্বাহ্ণ
তিস্তা চুক্তি : বন্ধুত্ব না স্বার্থের সংঘাত?

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ক্ষেত্রে তিস্তা নদীর পানিবণ্টন চুক্তি দীর্ঘকালীন বিরোধের কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করছে। দীর্ঘ আলোচনার পরও এই চুক্তি সম্পাদন করা সম্ভব হয়নি, যার প্রধান কারণ হিসেবে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যসরকার এবং বিশেষ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তি গুরুত্ব বহন করছে।

বাংলাদেশ এবং ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যে চুক্তির ক্ষেত্রে সমঝোতার পথে বাধা সৃষ্টি করেছে রাজ্যসরকারের স্বার্থ এবং রাজনৈতিক জটিলতা। এই প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন ওঠে, তিস্তা চুক্তি কি শুধুই কূটনৈতিক সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে বন্ধুত্বের সংকট, নাকি এই চুক্তির পেছনে রয়েছে গভীর রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক স্বার্থের সংঘাত?

তিস্তা নদী ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রবাহিত অন্যতম একটি অভিন্ন নদী, যা দুই দেশের রাজনৈতিক, কূটনৈতিক এবং অর্থনৈতিক সম্পর্কের মধ্যে একটি জটিল এবং অমীমাংসিত সমস্যা হিসেবে রয়ে গেছে। শুষ্ক মৌসুমে পানি ভাগাভাগির বিষয়টি নিয়ে দুই দেশের মধ্যে আলোচনার শুরু হলেও চুক্তিটি চূড়ান্ত করা যায়নি, যার মূল কারণ পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিরোধিতা।

তিস্তার পানির পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করছে পশ্চিমবঙ্গ, যা উজানে পানির ব্যবহার বাড়িয়েছে এবং বাংলাদেশের জন্য তীব্র সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস এই সমস্যার সমাধানে কূটনৈতিক এবং আলোচনা ভিত্তিক পন্থার ওপর জোর দিয়েছেন।

তিনি মনে করেন, দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা এই সমস্যাটি শুধু আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান করা সম্ভব। তার মতে, তিস্তা চুক্তির প্রয়োজনীয়তা শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, বরং ভারতের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। ড. ইউনূস বলেছেন, ‘আমাদের অবশ্যই একত্রে বসে সমস্যার সমাধান করতে হবে। যদি আমরা জানি কতটুকু পানি আমরা পেতে যাচ্ছি, তাহলে আমাদের অর্থনীতি এবং কৃষি পরিকল্পনা করতে সহজ হবে।’

তিস্তা চুক্তি : সমস্যার শিকড়

তিস্তা নদী বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পানি সম্পদ। এর প্রবাহ ভারতের সিকিম এবং পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে এবং ব্রহ্মপুত্রের সঙ্গে মিলিত হয়। বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের কৃষি ব্যবস্থা তিস্তার পানির ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল।

তবে শুষ্ক মৌসুমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে নদীর পানি বণ্টন এবং ব্যবহারের কারণে বাংলাদেশের অনেক অঞ্চলে পানির অভাব দেখা দেয়, যা বাংলাদেশের কৃষিক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ১৯৭২ সাল থেকেই বিভিন্ন নদীর পানি বণ্টন নিয়ে আলোচনা হয়েছে, তবে তিস্তার পানির বণ্টন চুক্তি এখনো অমীমাংসিত রয়েছে।

এই চুক্তির মূল সমস্যা হলো দুই দেশের ভৌগোলিক অবস্থান, রাজনৈতিক স্বার্থ এবং পানির চাহিদা, যা দুই দেশের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি করছে। পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক অবস্থান তিস্তা চুক্তির পথে প্রধান বাধা হিসেবে দেখা দেয়।

২০১১ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সময় তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরের পরিকল্পনা প্রায় চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল। তবে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই চুক্তিকে অনুমোদন দিতে অস্বীকৃতি জানান এবং দাবি করেন যে পশ্চিমবঙ্গে পানির সংকট রয়েছে। সেই থেকে তিস্তা চুক্তি আর আলোর মুখ দেখেনি।

তিস্তা নদীর পানিবণ্টনের ইস্যুটি বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ জলসম্পদ সমস্যা। তিস্তা নদীর পানি বাংলাদেশের উত্তরের কয়েকটি জেলার কৃষি ও অর্থনীতির জন্য অপরিহার্য। তবে শুষ্ক মৌসুমে উজানে ভারতের পানি উত্তোলন এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ থেকে পানিবণ্টনের বিরোধিতার কারণে বাংলাদেশের উত্তরের জেলাগুলোয় পানির সংকট তীব্র হচ্ছে।

এটি শুধু একটি পরিবেশগত সমস্যা নয়, বরং এটি বাংলাদেশের অর্থনীতি এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাতেও প্রভাব ফেলছে। ২০১১ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সময় তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরের পরিকল্পনা প্রায় চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল। তবে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই চুক্তিকে অনুমোদন দিতে অস্বীকৃতি জানান এবং দাবি করেন যে পশ্চিমবঙ্গে পানির সংকট রয়েছে। সেই থেকে তিস্তা চুক্তি আর আলোর মুখ দেখেনি।

আন্তর্জাতিক আইন ও বাংলাদেশের দাবি

তিস্তা নদী শুধু একটি অভিন্ন নদীই নয়, এটি দুই দেশের সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। অভিন্ন নদী হিসেবে তিস্তার পানি ভাগাভাগির বিষয়ে কোনো চুক্তি না থাকায় উজানে ভারতের কার্যক্রম বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক নদীর ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী পানিবণ্টন হওয়া উচিত, যেখানে উজানের দেশ উজানের পাশাপাশি ভাটির দেশেরও অধিকারকে স্বীকৃতি দেয়।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, তিস্তা চুক্তি নিয়ে মতপার্থক্য দূর করার জন্য ভারতের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। দীর্ঘদিন ধরে অমীমাংসিত এই সমস্যাটি দুই দেশেরই জন্য ক্ষতিকর। তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, বিষয়টির সমাধান হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের অবশ্যই আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী পানিবণ্টন করতে হবে, যেখানে বাংলাদেশের মতো ভাটির দেশগুলোর অধিকার রক্ষা পাবে।

মমতার ভূমিকা ও পশ্চিমবঙ্গের সংকট

২০১১ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং যখন বাংলাদেশ সফরে আসেন, তখন তিস্তা চুক্তি সই হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তির কারণে চুক্তিটি শেষ মুহূর্তে ভেস্তে যায়। তার প্রধান উদ্বেগ ছিল পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাঞ্চলের কৃষি এবং সেচ ব্যবস্থা। তার মতে, যদি চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশকে বেশি পরিমাণ পানি সরবরাহ করা হয়, তবে পশ্চিমবঙ্গের কৃষি ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হতে পারে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই অবস্থানকে শুধু আঞ্চলিক স্বার্থের দিকে নজর দেওয়ার মতো বলে বিবেচনা করা হয় না, বরং এটি ভারতীয় কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে তার রাজনৈতিক সম্পর্কেরও একটি প্রকাশ হিসেবে দেখা যেতে পারে। কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক বিরোধিতার কারণে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার বিভিন্ন জাতীয় প্রকল্প এবং আন্তর্জাতিক চুক্তির বিরোধিতা করেছেন, যাতে পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তার নেতৃত্বকে দৃঢ় করা যায়।

তিস্তা চুক্তি দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা একটি সমস্যা, যা দুই দেশের সম্পর্কের জন্য বড় ইস্যু। তিস্তা চুক্তি বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে সম্পর্কের একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে পারে…

তার এ ধরনের অবস্থান তিস্তা চুক্তির ক্ষেত্রে ভারতের কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারের মধ্যে একটি অভ্যন্তরীণ বিরোধের জন্ম দিয়েছে, যা বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

সমালোচকরা মনে করেন, মমতা এই চুক্তিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছেন এবং পশ্চিমবঙ্গের জনগণের স্বার্থ রক্ষার নামে বাংলাদেশকে চুক্তি থেকে বঞ্চিত করছেন। তবে পশ্চিমবঙ্গের এই অবস্থানের কারণে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তিস্তা চুক্তি না হওয়ায় বাংলাদেশের ওপর এর প্রভাব গভীরতর হচ্ছে এবং দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন আরও বাড়ছে।

সমাধানের পথ : আলোচনা ও সহযোগিতা

তিস্তা চুক্তির সমাধানে কূটনৈতিক আলোচনার প্রয়োজন, যা উভয় দেশের জন্যই সমানভাবে লাভজনক হতে পারে। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে তিস্তা ইস্যুতে সহযোগিতার প্রয়োজন রয়েছে, যেখানে উভয় দেশই তাদের স্বার্থ বজায় রাখার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক আইনের ভিত্তিতে একটি সমঝোতায় পৌঁছাতে পারে।

ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার এই সমস্যার সমাধানে আগ্রহী এবং ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক আলোচনা চালানোর পরিকল্পনা করছে। এই আলোচনায় মূল বিষয় হলো, উজানে তিস্তার পানির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা এবং ভাটির দেশ বাংলাদেশের জন্য ন্যায্য ভাগ নিশ্চিত করা।

তিস্তা চুক্তির মতো সমস্যাগুলো আন্তর্জাতিক আইনের আলোকে সমাধান করা গুরুত্বপূর্ণ। অভিন্ন নদীর ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী পানির ন্যায্য ভাগ নিশ্চিত করা জরুরি। এই সমস্যার সমাধান না হলে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আরও সম্পর্কের জটিলতা তৈরি হতে পারে, যা দুই দেশের জন্যই ক্ষতিকর হতে পারে।

তিস্তা চুক্তি দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা একটি সমস্যা, যা দুই দেশের সম্পর্কের জন্য বড় ইস্যু। তিস্তা চুক্তি বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে সম্পর্কের একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে পারে, যেখানে উভয় দেশই তাদের স্বার্থ বজায় রাখার পাশাপাশি কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক সহযোগিতার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানে অগ্রসর হতে পারে।

তিস্তার পানিবণ্টনের সমাধান না হলে এই সমস্যা দুই দেশের সম্পর্কের মধ্যে আরও জটিলতা তৈরি করবে। তবে ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের আগ্রহ এবং ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধানের সম্ভাবনা রয়েছে।

অধ্যাপক ড. সুজিত কুমার দত্ত ।। সাবেক সভাপতি, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

‘পদত্যাগের’ কথা ভাবছেন ড. ইউনূস, না করার অনুরোধ নাহিদের

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫, ১২:৩১ পূর্বাহ্ণ
‘পদত্যাগের’ কথা ভাবছেন ড. ইউনূস, না করার অনুরোধ নাহিদের

দেশের সর্বত্র উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে গুঞ্জন শুরু হয়েছে পদত্যাগের চিন্তা করছেন অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এমন গুঞ্জনের মধ্যে তার সঙ্গে দেখা করে আসলেই পদত্যাগ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ভাবছেন বলে নিশ্চিত করলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। অবশ্য তিনি যেন এমন সিদ্ধান্ত না নেন সেই অনুরোধ জানিয়েছেন সাবেক তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গিয়ে তার সাথে সাক্ষাৎ করেন নাহিদ ইসলাম। পরে বিবিসি বাংলাকে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘দেশের চলমান পরিস্থিতি, স্যারেরতো পদত্যাগের একটা খবর আমরা আজকে সকাল থেকে শুনছি। তো ওই বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে স্যারের সাথে দেখা করতে গেছিলাম। প্রধান উপদেষ্টা দেশের চলমান পরিস্থিতিতে কাজ করতে পারবেন না এমন শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।’

এসময় তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদও ছিলেন বলে জানা গেছে।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘স্যার বলছেন আমি যদি কাজ করতে না পারি… যে জায়গা থেকে তোমরা আমাকে আনছিলা একটা গণঅভ্যুত্থানের পর, দেশের পরিবর্তন, সংস্কার…। কিন্তু যেই পরিস্থিতি যেভাবে আন্দোলন বা যেভাবে আমাকে জিম্মি করা হচ্ছে। আমিতো এভাবে কাজ করতে পারবো না। তো রাজনৈতিক দলগুলা তোমরা সবাই একটা জায়গায়, কমন জায়গায় না পৌঁছাতে পারো।’

প্রধান উপদেষ্টাকে পদত্যাগের মতো সিদ্ধান্ত না নিতে আহ্বান জানিয়েছেন নাহিদ। এ প্রসঙ্গে নাহিদ বলেন, ‘আমাদের গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা এবং জাতীয় নিরাপত্তা ও দেশের ভবিষ্যৎ সবকিছু মিলিয়ে উনি যাতে শক্ত থাকেন এবং সব দলকে নিয়ে যাতে ঐক্যের জায়গায় থাকেন, সবাই তার সাথে আশা করি কো-অপারেট করবেন।’

প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগের বিষয়টি বিবেচনা করছেন জানিয়ে নাহিদ বলেন, ‘হ্যাঁ, যদি কাজ করতে না পারেন, থাকবেন, থেকে কী লাভ। উনি বলছেন উনি এ বিষয়ে ভাবছেন। ওনার কাছে মনে হয়েছে পরিস্থিতি এরকম যে তিনি কাজ করতে পারবেন না।’

পদত্যাগের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার এখনকার মনোভাবের বিষয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘এখন ওনি যদি রাজনৈতিক দল তার পদত্যাগ চায়… সেই আস্থার জায়গা, আশ্বাসের জায়গা না পাইলে উনি থাকবেন কেন?’

জুলাই ঐক্য বিনষ্টের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ঢাবিতে বিক্ষোভ

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫, ১২:২৮ পূর্বাহ্ণ
জুলাই ঐক্য বিনষ্টের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ঢাবিতে বিক্ষোভ

জুলাইয়ের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক শক্তির মধ্যে ফাটল তৈরি ও ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ র‍্যালি ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে গণ-অভ্যুত্থানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৮০টি সংগঠনের ঐকবদ্ধ প্লাটফর্ম ‘জুলাই ঐক্য’।

আজ বৃহস্পতিবার (২২ মে) রাত ১১ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে  প্রতিবাদ র‌্যালি শুরু হয়ে শাহবাগ মোড় ঘুরে আবারও রাজু ভাস্কর্যের এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

সমাবেশে অংশ নেওয়া সংগঠনগুলোর নেতারা বলেন, “যে ঐক্য নিয়ে আমরা জুলাই গণঅভ্যুত্থান করেছিলাম সে ঐক্য ভাঙতে দেশি বিদেশি ষড়যন্ত্র হচ্ছে। যারা ষড়যন্ত্র করে জুলাই ঐক্যকে বিনষ্ট করতে চাইবে জুলাই জনতা তাদেরকে আবারও দিল্লিতে পাঠিয়ে দেবে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে আমরা লড়ে যাবো। ভারতীয়, মার্কিন আগ্রাসনে ও দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে জুলাই জনতা বুক পেতে আবার রাজপথে নেমে আসবে। আমরা আবারও বুকের তাজা রক্ত দেবো তবুও বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নষ্ট হতে দেবো না।”

এ সময়  বক্তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “সচিবালয়ে ফ্যাসিবাদের অনেক দোসর বসে আছে। ৩১ মে এর মধ্যে সচিবালয় থেকে ফ্যাসিবাদের সকল দোসর  অপসারণ না করলে সচিবালয় ঘেরাও হবে।”

জুলাই ঐক্যের আপ বাংলাদেশের প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ আল মিনহাজ বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে যে সকল ভারতীদের পুনর্বাসন করা হয়েছে তাদের চিহ্নিত করে অতি দ্রুত অপসারণ করতে হবে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “জুলাইয়ের শহীদদের রক্তের ওপর আপনার সরকার গঠিত। আমরা আপনার ওপর আস্থা রাখতে চাই। জুলাইয়ের ঐক্যকে যারা নষ্ট করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। অতি দ্রুত জুলাই ঘোষণাপত্র ঘোষণা দেন এবং আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত করুন।”

জুলাই ঐক্যের অন্যতম সংগঠক মোসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মদ বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের সুচিকিৎসার না দিয়ে উপদেষ্টারা ক্ষমতা উদযাপন শুরু করেছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে ভারতীয় আধিপত্যবদের দোসরা আবারও দেশকে ভারতের কাছে তুলে দিতে চায়। উপদেষ্টা পরিষদে ভারতীয় কোনো দালাল থাকতে পারবে না। জুলাই যোদ্ধারা বেঁচে থাকতে তা সফল হবে না। এবার রাজপথে নামতে হলে আপনাদের উৎখাত করে দেশ ছাড়া করা হবে। যারা জুলাই ঐক্যের ফাটল ধরানোর চেষ্টা করছে তাদের চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থা করুন।”

এছাড়াও জুলাই স্পিরিট ধরে রেখে নতুন বাংলাদেশ গড়তে সকল ভেদাভেদ ভুলে সকল রাজনৈতিক ও সমাজিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

এ সময় মোসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মদ জুলাই ঐক্যের পক্ষ থেকে তিন দফা দাবি জানান। জুলাই ঐক্যের ৩ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে—

ক) জুলাইয়ের সকল শক্তিকে বিনষ্ট করতে যে সকল ভারতীয় এজেন্ট কাজ করছে তাদের অবিলম্বে খুজে বের করে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে হবে।

খ) উপদেষ্টা পরিষদে যারা ভারতের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে ব্যাতিব্যাস্ত অবিলম্বে তাদের অপসারন করে উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন করতে হবে।

গ) অবিলম্বে জুলাই ঘোষণাপত্র যথা সময়ে দিতে হবে।

উপদেষ্টা মাহফুজের পর হাসনাতেরও ঐক্যের ডাক

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫, ১২:০৪ পূর্বাহ্ণ
উপদেষ্টা মাহফুজের পর হাসনাতেরও ঐক্যের ডাক

আগের সব ‘বিভাজনমূলক বক্তব্য ও শব্দচয়নের’ জন্য দুঃখ প্রকাশ করে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম দেশপ্রেমিক শক্তির ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন। তার সঙ্গে সুর মিলিয়ে একই আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহও।

হাসনাত বলেছেন, “এ দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য এবং পতিত ফ্যাসিবাদের নগ্ন, দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র থেকে মুক্তির জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।”

বৃহস্পতিবার (২২ মে) উপদেষ্টা মাহফুজ আব্দুল্লাহ ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার কিছুক্ষণ পরেই নিজের ভেরিফায়েড আইডিতে এমন আহ্বান জানান হাসনাত আব্দুল্লাহ।

সেখানে তিনি লিখেচেন, “জুলাইয়ের ফ্যাসিবাদবিরোধী সব শক্তির প্রতি আহ্বান—যে বিভাজনটা অপ্রত্যাশিতভাবে আমাদের মধ্যে এসেছিল, সেই বিভাজনকে দেশ ও জাতির স্বার্থে মিটিয়ে ফেলতে হবে।”

তিনি সবাইকে সতর্ক করে বলেন, “মনে রাখবেন আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পতনে দেশে-বিদেশে অনেকে নাখোশ হয়ে আছে। এই নাখোশ বান্দারা আমাদের বিভাজনের সুযোগ নিতে নিতে আজকের এই অস্থিতিশীল দিন এনেছে। আমরা সবাই এক হয়েছিলাম বলেই দীর্ঘ দেড় যুগের শক্তিশালী ফ্যাসিবাদকে তছনছ করতে পেরেছিলাম। আমরা খণ্ড-বিখণ্ড হলে পতিত ফ্যাসিবাদ ও তার দেশি-বিদেশি দোসরেরা আমাদের তছনছ করার হীন পাঁয়তারা করবে।”

হাসনাত বলেন, “দেশ ও জাতির প্রতি দায় এবং দরদ আছে বলেই আমরা এক হয়ে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়েছিলাম। দেশ ও জাতির জন্যই এবার আমাদের এক হয়ে আমাদের স্বদেশকে বিনির্মাণ করতে হবে। কোনও ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর স্বার্থের জন্য এই ঐক্য নয়, বরং আমাদের দেশের জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকার কোনও বিকল্প নেই।”

"> ">
‘পদত্যাগের’ কথা ভাবছেন ড. ইউনূস, না করার অনুরোধ নাহিদের জুলাই ঐক্য বিনষ্টের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ঢাবিতে বিক্ষোভ উপদেষ্টা মাহফুজের পর হাসনাতেরও ঐক্যের ডাক প্রধান উপদেষ্টাকে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার আহ্বান জামায়াত আমিরের ব্রাইডাল লুকে মুগ্ধতা ছড়ালেন অপু বিশ্বাস না আছে মরার ভয় না আছে হারাবার কিছু : আসিফ মাহমুদ গ্রেপ্তারের ক্ষমতা পেলেন ট্টাইব্যুনালের তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন নাহিদ ইসলাম সেনানিবাসে আশ্রয় নেওয়াদের পরিচয় প্রকাশ করল আইএসপিআর বীরগঞ্জে বীজ ডিলার ও কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত চলমান আন্দোলনের বিষয়ে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের প্রেস বিজ্ঞপ্তি নাগরিক ছাত্র ঐক্য সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা বীরগঞ্জে ট্রাক-মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৪ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু শেরপুর সীমাবাড়ি ইউনিয়নের কদিম হাঁসড়া গ্রামে বিমলের বাড়িতে মাদকের আখরা, যেন দেখার কেউ নেই রাষ্ট্র সংস্কারের অংশ হিসেবে গ্রাহক সেবার মানোন্নয়নে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডে বড় ধরনের বদলি! ভবানীপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের উদ্যোগে আরাফাত রহমান কোকো ফুটবল টুর্ণামেন্ট উদ্বোধন হবিগঞ্জের বানিয়াচং থানা পুলিশ অঞ্জাত কিশোরীর লাশ উদ্ধারের পরিচয় সনাক্তে ফেইসবুকে পোস্ট বীরগঞ্জে এনসিপি নেতা হাসনাতের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল নানা কর্মসূচীর মধ্যদিয়ে বীরগঞ্জে আন্তর্জাতিক মহান মে দিবস পালিত বীরগঞ্জে মহান শ্রমিক দিবস পালিত ছোনকায় মহান মে দিবস উপলক্ষে বর্নাঢ্য র‌্যালী শেষে শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পন কাহারোলে স্কাউটস দিবস উপলক্ষে র‍্যালি,পরিষ্কার- পরিচ্ছন্নতা অভিযান ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমারের যন্ত্রাংশ চুরি করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তির মৃত্যু দুদকের আকস্মিক অভিযান: বীরগঞ্জ হাসপাতালে দুর্নীতির চিত্র উন্মোচিত শেরপুরে চোরসহ টলিগাড়ি পাবনার ভাঙ্গুরায় আটক শেরপুরে ইউনিয়ন জামাতের সেক্রেটারীর ভাই ৭৫০ পিস ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার শেরপুরে কলেজের অধ্যক্ষের দূর্ণীতির বিরুদ্ধে মানববন্ধন।। শেরপুরে সভাপতি কর্তৃক অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দূর্ণীতি তদন্ত করার কারনে সভাপতি পরিবর্তন নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে শেরপুর উপজেলা বিএনপি’র আনন্দ শোভাযাত্রা শেরপুরে মাদ্রাসা শিক্ষিকার আত্মহত্যা।