খুঁজুন
শুক্রবার, ২৩শে মে, ২০২৫, ৯ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

ব্রিকস সম্মেলন : সত্যিকার অর্থেই কি ঐক্যবদ্ধ শক্তি গড়ে উঠবে?

ড. সুজিত কুমার দত্ত প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৪, ৪:৫৮ অপরাহ্ণ
ব্রিকস সম্মেলন : সত্যিকার অর্থেই কি ঐক্যবদ্ধ শক্তি গড়ে উঠবে?

ব্রিকস জোট তার প্রাথমিক পাঁচটি সদস্য দেশ থেকে সম্প্রসারিত হয়ে নয়টি দেশে পরিণত হয়েছে। মিসর, ইথিওপিয়া, ইরান এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের যুক্ত হওয়া এই জোটকে আরও বেশি বহুমাত্রিক এবং বৈশ্বিক করেছে। এছাড়া প্রায় তিন ডজন দেশ ব্রিকসে যোগ দেওয়ার জন্য আবেদন করেছে, যা ব্রিকসের শক্তিশালী প্রভাবের প্রমাণ।

বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির একটি জোট হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার মাধ্যমে, ব্রিকস এখন জি-৭-এর বিকল্প একটি শক্তি কেন্দ্র হিসেবে কাজ করতে পারে। জনসংখ্যার দিক থেকে এই সম্প্রসারিত জোট বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪৬ শতাংশকে প্রতিনিধিত্ব করে, যা জি-৭-এর মাত্র ৮.৮ শতাংশের তুলনায় অনেক বৃহৎ। এই সম্প্রসারণ বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং বাণিজ্যে বিশাল প্রভাব ফেলতে পারে।

ব্রিকসের সদস্য দেশগুলো যেমন চীন এবং ভারত ইতিমধ্যেই বৃহৎ অর্থনৈতিক শক্তি এবং সম্প্রসারিত সদস্য দেশগুলোর সংযোজনের ফলে এই জোটের আর্থিক এবং বাণিজ্যিক প্রভাব আরও বাড়বে। এটির পাশাপাশি ব্রিকস প্লাস জোট এখন পশ্চিমা দেশগুলোর ওপর নির্ভরতা কমাতে এবং একটি স্বাধীন অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক নীতি গড়ে তোলার দিকে মনোযোগ দিচ্ছে।

ব্রিকসের (BRICS) সাম্প্রতিক শীর্ষ সম্মেলনটি ২০২৪ সালের ২২ থেকে ২৪ অক্টোবর রাশিয়ার কাজান শহরে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সম্মেলন বিশ্ব অর্থনীতির প্রেক্ষাপটে একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হিসেবে চিহ্নিত হয়, যেখানে উন্নয়নশীল দেশগুলো পশ্চিমা অর্থনৈতিক আধিপত্য থেকে মুক্তির উপায় নিয়ে আলোচনা করা হবে।

ব্রিকস সহযোগিতা মডেলটি উন্নয়নশীল দেশগুলো নতুন অর্থনৈতিক পরিসরে উন্নয়নের সুযোগ প্রদানের জন্য তৈরি করা হয়েছে। পশ্চিমা শক্তির অধীন অর্থনৈতিক মডেল থেকে সরে এসে, বৈশ্বিক অর্থনীতিতে নতুন ধারার বিকাশের প্রয়োজনীয়তাও এ সম্মেলনে তুলে ধরা হয়। আন্তর্জাতিক অর্থনীতিতে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোর দীর্ঘদিনের আধিপত্য রয়েছে।

ভারত ও চীন তাদের সীমান্ত সমস্যা সত্ত্বেও, দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশ তথা বাংলাদেশের উপর প্রভাব বিস্তার করতে ব্রিকসকে ব্যবহার করতে পারে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে গড়ে ওঠা এই অর্থনৈতিক ব্যবস্থা পশ্চিমা দেশের আধিপত্যকে কেন্দ্র করে পরিচালিত হয়েছে। তবে, বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে, বিশেষ করে সাম্প্রতিক বছরগুলোয়, এই ব্যবস্থার সংকটগুলো আরও প্রকট হয়েছে। অর্থনৈতিক অসমতা, বাণিজ্য যুদ্ধ এবং আর্থিক সংকট এই ব্যবস্থার গভীর সংকটের প্রমাণ দিচ্ছে।

পশ্চিমা বিশ্বের নেতৃত্বে গঠিত বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক কাঠামো বহু দশক ধরে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও বাণিজ্যের ওপর প্রভাব বিস্তার করেছে। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জি-৭ এবং অন্যান্য পশ্চিমা সংস্থাগুলো বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক নিয়ম ও প্রভাব নিয়ন্ত্রণ করেছে। কিন্তু ব্রিকস তার সম্প্রসারণের মাধ্যমে এই হেজিমনিক ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ করতে চাইছে।

তবে এটি করতে গিয়ে, ব্রিকসের সদস্যদের মধ্যে মতপার্থক্য এবং তাদের অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জগুলোও রয়েছে। চীন ও রাশিয়া এই জোটের মধ্যে পশ্চিমা আধিপত্যের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় বিরোধী শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। এই দুই দেশ যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বিশ্বব্যবস্থার বিপক্ষে সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে প্রস্তুত। চীন, যার অর্থনীতি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং রাশিয়া, যার ভূরাজনৈতিক অবস্থান পশ্চিমা দেশের বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে, তারা জোটের ভেতরে সবচেয়ে আগ্রাসী ভূমিকায় আছে।

অন্যদিকে ব্রাজিল ও ভারত তাদের পশ্চিমা সম্পর্ককে পুরোপুরি ত্যাগ করতে চাইছে না। তারা আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে আরও ভারসাম্যপূর্ণ নীতি গ্রহণের পক্ষে। ব্রাজিল এবং ভারত উভয় দেশই পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বজায় রাখতে চায় এবং তারা বৈশ্বিক ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে কোনো সংঘাত এড়াতে আগ্রহী।

এটি একটি মৌলিক চ্যালেঞ্জ তৈরি করে যে, ব্রিকস কি সত্যিকার অর্থেই একটি ঐক্যবদ্ধ শক্তি হিসেবে গড়ে উঠতে পারবে? নাকি এর সদস্য দেশগুলোর মধ্যকার মতভেদ এর ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে?

ভারত ও চীনের মতো দুটি বৃহত্তম অর্থনীতি ব্রিকসের অন্যতম প্রধান শক্তি হিসেবে রয়েছে। এই দুই দেশের ব্রিকসের মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ায় একটি বিকল্প শক্তি কেন্দ্র গড়ে তোলার সম্ভাবনা রয়েছে। ভারত ও চীন তাদের সীমান্ত সমস্যা সত্ত্বেও, দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশ তথা বাংলাদেশের উপর প্রভাব বিস্তার করতে ব্রিকসকে ব্যবহার করতে পারে।

দক্ষিণ এশিয়ার ছোট ছোট দেশগুলো যেগুলো পশ্চিমা দেশের চাপের মধ্যে রয়েছে, তারা ব্রিকসের একটি বিকল্প অর্থনৈতিক মডেল থেকে উপকৃত হতে পারে। তবে, ভারত ও চীনের মধ্যকার প্রতিযোগিতামূলক সম্পর্ক ব্রিকসের মধ্যে একটি অন্তর্দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করতে পারে। যদি এই দুই দেশ নিজেদের মধ্যে সমঝোতা করতে সক্ষম হয়, তাহলে দক্ষিণ এশিয়ায় ব্রিকসের ভূমিকা আরও প্রভাবশালী হতে পারে। কিন্তু যদি এই প্রতিযোগিতা আরও বাড়ে, তবে ব্রিকস দক্ষিণ এশিয়ার ক্ষেত্রে তেমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রাখতে পারবে না।

ব্রিকস দেশগুলো উন্নয়নশীল দেশগুলোর স্বার্থ রক্ষার জন্য সমতাভিত্তিক বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করছে। বর্তমানে, বিশ্ব অর্থনীতিতে পশ্চিমা দেশগুলো বাণিজ্যিক সম্পর্কের ওপর একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ রাখে। এই পরিস্থিতিতে, ব্রিকস দেশগুলো একটি নতুন মডেল তৈরি করার প্রয়াস চালাচ্ছে, যেখানে প্রত্যেক দেশ স্বাধীনভাবে তাদের অর্থনৈতিক নীতি নির্ধারণ করতে পারবে এবং আর্থিক স্বাধীনতা বজায় রাখতে পারবে।

ব্রিকস দেশগুলো আর্থিক হেজিমনি মোকাবিলার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন SWIFT আর্থিক লেনদেন ব্যবস্থা দীর্ঘদিন ধরে বৈশ্বিক আর্থিক লেনদেনের কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে আসছে। তবে, সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বিশেষ করে রাশিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার পর থেকে, এই ব্যবস্থা রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্র SWIFT সিস্টেমকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে আন্তর্জাতিক আর্থিক লেনদেনকে নিয়ন্ত্রণ করছে। এই পরিস্থিতি উন্নয়নশীল দেশগুলোর আর্থিক স্বাধিকারকে হুমকির মুখে ফেলেছে। এই প্রেক্ষাপটে, ব্রিকস দেশগুলো SWIFT-এর বিকল্প একটি আর্থিক লেনদেন ব্যবস্থা তৈরি করার প্রয়াস চালাচ্ছে, যা তাদের নিজস্ব আর্থিক স্বাধিকার রক্ষা করতে সক্ষম হবে।

পশ্চিমা আধিপত্যের অর্থনৈতিক মডেলটি বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং আর্থিক নিয়ন্ত্রণের ওপর একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে। এই মডেলটি বিশেষভাবে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষে কাজ করেছে। তবে, উন্নয়নশীল দেশগুলো তাদের স্বার্থ রক্ষার জন্য এই মডেল থেকে সরে আসার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে।

ব্রিকস একটি সম্ভাবনাময় মডেল, যা পশ্চিমা আধিপত্য থেকে সরে এসে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য একটি সমতাভিত্তিক অর্থনৈতিক কাঠামো গড়ে তোলার সুযোগ সৃষ্টি করছে। যদিও ব্রিকস এখনো একটি সম্পূর্ণ বিকল্প মডেল হিসেবে গড়ে ওঠেনি, তবে এটি অর্থনৈতিক বিকাশের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।

ব্রিকস একটি সম্ভাবনাময় মডেল, যা পশ্চিমা আধিপত্য থেকে সরে এসে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য একটি সমতাভিত্তিক অর্থনৈতিক কাঠামো গড়ে তোলার সুযোগ সৃষ্টি করছে। যদিও ব্রিকস এখনো একটি সম্পূর্ণ বিকল্প মডেল হিসেবে গড়ে ওঠেনি, তবে এটি অর্থনৈতিক বিকাশের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।

ব্রিকস তার সম্প্রসারণের মাধ্যমে বৈশ্বিক কূটনীতিতে একটি নতুন মঞ্চ তৈরির চেষ্টা করছে। ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে রাশিয়া পশ্চিমা দেশগুলোর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছে এবং এই বিচ্ছিন্নতা ব্রিকসকে আরও শক্তিশালী করেছে। রাশিয়া তার কৌশলগত ও অর্থনৈতিক সম্পর্কগুলো ব্রিকসের মধ্যে পুনর্গঠন করার চেষ্টা করছে। পশ্চিমা বিশ্ব রাশিয়াকে বৈশ্বিক অঙ্গন থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করলেও, ব্রিকসের মাধ্যমে রাশিয়া তার গুরুত্ব বজায় রাখার সুযোগ পেয়েছে।

একইভাবে, চীনও ব্রিকসের মাধ্যমে তার কূটনৈতিক অবস্থানকে শক্তিশালী করতে চায়। বিশেষ করে, আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সাথে তার বাণিজ্যিক সম্পর্কগুলো ব্রিকসের মধ্য দিয়ে আরও গভীর হচ্ছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিসর, ইথিওপিয়ার মতো দেশের যোগদান চীনের এই কৌশলকে আরও শক্তিশালী করছে।

তবে, পশ্চিমা দেশগুলো ব্রিকসের এই সম্প্রসারণকে তাদের বৈশ্বিক আধিপত্যের জন্য একটি হুমকি হিসেবে দেখছে। তাই, ব্রিকসের মধ্যে থাকা বিভিন্ন দেশগুলোর মধ্যে ঐক্য বজায় রাখা এবং তাদের অভ্যন্তরীণ সমস্যা সমাধান করাই হবে ভবিষ্যতের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

ব্রিকসের সম্প্রসারণের মাধ্যমে বিশ্ব রাজনীতি এবং অর্থনীতিতে একটি নতুন ধারা গড়ে উঠতে পারে। পশ্চিমা আধিপত্যের বিকল্প হিসেবে একটি নতুন শক্তি কেন্দ্র তৈরি করার জন্য ব্রিকসকে তার সদস্য দেশগুলোর মধ্যে ঐক্য ও সহযোগিতা বাড়াতে হবে। তবে এই নতুন মডেল কতটা কার্যকর হবে, তা অনেকাংশেই নির্ভর করবে ব্রিকসের নেতৃত্ব এবং সদস্য দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ কৌশলগুলোর ওপর।

ব্রিকস যদি সঠিকভাবে তার সম্প্রসারণ পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন করতে পারে, তাহলে এটি একটি নতুন বৈশ্বিক অর্থনৈতিক এবং কূটনৈতিক শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারে।

অধ্যাপক ড. সুজিত কুমার দত্ত ।। সাবেক সভাপতি, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

‘পদত্যাগের’ কথা ভাবছেন ড. ইউনূস, না করার অনুরোধ নাহিদের

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫, ১২:৩১ পূর্বাহ্ণ
‘পদত্যাগের’ কথা ভাবছেন ড. ইউনূস, না করার অনুরোধ নাহিদের

দেশের সর্বত্র উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে গুঞ্জন শুরু হয়েছে পদত্যাগের চিন্তা করছেন অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এমন গুঞ্জনের মধ্যে তার সঙ্গে দেখা করে আসলেই পদত্যাগ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ভাবছেন বলে নিশ্চিত করলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। অবশ্য তিনি যেন এমন সিদ্ধান্ত না নেন সেই অনুরোধ জানিয়েছেন সাবেক তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গিয়ে তার সাথে সাক্ষাৎ করেন নাহিদ ইসলাম। পরে বিবিসি বাংলাকে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘দেশের চলমান পরিস্থিতি, স্যারেরতো পদত্যাগের একটা খবর আমরা আজকে সকাল থেকে শুনছি। তো ওই বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে স্যারের সাথে দেখা করতে গেছিলাম। প্রধান উপদেষ্টা দেশের চলমান পরিস্থিতিতে কাজ করতে পারবেন না এমন শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।’

এসময় তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদও ছিলেন বলে জানা গেছে।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘স্যার বলছেন আমি যদি কাজ করতে না পারি… যে জায়গা থেকে তোমরা আমাকে আনছিলা একটা গণঅভ্যুত্থানের পর, দেশের পরিবর্তন, সংস্কার…। কিন্তু যেই পরিস্থিতি যেভাবে আন্দোলন বা যেভাবে আমাকে জিম্মি করা হচ্ছে। আমিতো এভাবে কাজ করতে পারবো না। তো রাজনৈতিক দলগুলা তোমরা সবাই একটা জায়গায়, কমন জায়গায় না পৌঁছাতে পারো।’

প্রধান উপদেষ্টাকে পদত্যাগের মতো সিদ্ধান্ত না নিতে আহ্বান জানিয়েছেন নাহিদ। এ প্রসঙ্গে নাহিদ বলেন, ‘আমাদের গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা এবং জাতীয় নিরাপত্তা ও দেশের ভবিষ্যৎ সবকিছু মিলিয়ে উনি যাতে শক্ত থাকেন এবং সব দলকে নিয়ে যাতে ঐক্যের জায়গায় থাকেন, সবাই তার সাথে আশা করি কো-অপারেট করবেন।’

প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগের বিষয়টি বিবেচনা করছেন জানিয়ে নাহিদ বলেন, ‘হ্যাঁ, যদি কাজ করতে না পারেন, থাকবেন, থেকে কী লাভ। উনি বলছেন উনি এ বিষয়ে ভাবছেন। ওনার কাছে মনে হয়েছে পরিস্থিতি এরকম যে তিনি কাজ করতে পারবেন না।’

পদত্যাগের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার এখনকার মনোভাবের বিষয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘এখন ওনি যদি রাজনৈতিক দল তার পদত্যাগ চায়… সেই আস্থার জায়গা, আশ্বাসের জায়গা না পাইলে উনি থাকবেন কেন?’

জুলাই ঐক্য বিনষ্টের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ঢাবিতে বিক্ষোভ

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫, ১২:২৮ পূর্বাহ্ণ
জুলাই ঐক্য বিনষ্টের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ঢাবিতে বিক্ষোভ

জুলাইয়ের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক শক্তির মধ্যে ফাটল তৈরি ও ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ র‍্যালি ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে গণ-অভ্যুত্থানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৮০টি সংগঠনের ঐকবদ্ধ প্লাটফর্ম ‘জুলাই ঐক্য’।

আজ বৃহস্পতিবার (২২ মে) রাত ১১ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে  প্রতিবাদ র‌্যালি শুরু হয়ে শাহবাগ মোড় ঘুরে আবারও রাজু ভাস্কর্যের এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

সমাবেশে অংশ নেওয়া সংগঠনগুলোর নেতারা বলেন, “যে ঐক্য নিয়ে আমরা জুলাই গণঅভ্যুত্থান করেছিলাম সে ঐক্য ভাঙতে দেশি বিদেশি ষড়যন্ত্র হচ্ছে। যারা ষড়যন্ত্র করে জুলাই ঐক্যকে বিনষ্ট করতে চাইবে জুলাই জনতা তাদেরকে আবারও দিল্লিতে পাঠিয়ে দেবে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে আমরা লড়ে যাবো। ভারতীয়, মার্কিন আগ্রাসনে ও দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে জুলাই জনতা বুক পেতে আবার রাজপথে নেমে আসবে। আমরা আবারও বুকের তাজা রক্ত দেবো তবুও বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নষ্ট হতে দেবো না।”

এ সময়  বক্তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “সচিবালয়ে ফ্যাসিবাদের অনেক দোসর বসে আছে। ৩১ মে এর মধ্যে সচিবালয় থেকে ফ্যাসিবাদের সকল দোসর  অপসারণ না করলে সচিবালয় ঘেরাও হবে।”

জুলাই ঐক্যের আপ বাংলাদেশের প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ আল মিনহাজ বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে যে সকল ভারতীদের পুনর্বাসন করা হয়েছে তাদের চিহ্নিত করে অতি দ্রুত অপসারণ করতে হবে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “জুলাইয়ের শহীদদের রক্তের ওপর আপনার সরকার গঠিত। আমরা আপনার ওপর আস্থা রাখতে চাই। জুলাইয়ের ঐক্যকে যারা নষ্ট করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। অতি দ্রুত জুলাই ঘোষণাপত্র ঘোষণা দেন এবং আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত করুন।”

জুলাই ঐক্যের অন্যতম সংগঠক মোসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মদ বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের সুচিকিৎসার না দিয়ে উপদেষ্টারা ক্ষমতা উদযাপন শুরু করেছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে ভারতীয় আধিপত্যবদের দোসরা আবারও দেশকে ভারতের কাছে তুলে দিতে চায়। উপদেষ্টা পরিষদে ভারতীয় কোনো দালাল থাকতে পারবে না। জুলাই যোদ্ধারা বেঁচে থাকতে তা সফল হবে না। এবার রাজপথে নামতে হলে আপনাদের উৎখাত করে দেশ ছাড়া করা হবে। যারা জুলাই ঐক্যের ফাটল ধরানোর চেষ্টা করছে তাদের চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থা করুন।”

এছাড়াও জুলাই স্পিরিট ধরে রেখে নতুন বাংলাদেশ গড়তে সকল ভেদাভেদ ভুলে সকল রাজনৈতিক ও সমাজিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

এ সময় মোসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মদ জুলাই ঐক্যের পক্ষ থেকে তিন দফা দাবি জানান। জুলাই ঐক্যের ৩ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে—

ক) জুলাইয়ের সকল শক্তিকে বিনষ্ট করতে যে সকল ভারতীয় এজেন্ট কাজ করছে তাদের অবিলম্বে খুজে বের করে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে হবে।

খ) উপদেষ্টা পরিষদে যারা ভারতের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে ব্যাতিব্যাস্ত অবিলম্বে তাদের অপসারন করে উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন করতে হবে।

গ) অবিলম্বে জুলাই ঘোষণাপত্র যথা সময়ে দিতে হবে।

উপদেষ্টা মাহফুজের পর হাসনাতেরও ঐক্যের ডাক

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫, ১২:০৪ পূর্বাহ্ণ
উপদেষ্টা মাহফুজের পর হাসনাতেরও ঐক্যের ডাক

আগের সব ‘বিভাজনমূলক বক্তব্য ও শব্দচয়নের’ জন্য দুঃখ প্রকাশ করে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম দেশপ্রেমিক শক্তির ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন। তার সঙ্গে সুর মিলিয়ে একই আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহও।

হাসনাত বলেছেন, “এ দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য এবং পতিত ফ্যাসিবাদের নগ্ন, দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র থেকে মুক্তির জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।”

বৃহস্পতিবার (২২ মে) উপদেষ্টা মাহফুজ আব্দুল্লাহ ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার কিছুক্ষণ পরেই নিজের ভেরিফায়েড আইডিতে এমন আহ্বান জানান হাসনাত আব্দুল্লাহ।

সেখানে তিনি লিখেচেন, “জুলাইয়ের ফ্যাসিবাদবিরোধী সব শক্তির প্রতি আহ্বান—যে বিভাজনটা অপ্রত্যাশিতভাবে আমাদের মধ্যে এসেছিল, সেই বিভাজনকে দেশ ও জাতির স্বার্থে মিটিয়ে ফেলতে হবে।”

তিনি সবাইকে সতর্ক করে বলেন, “মনে রাখবেন আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পতনে দেশে-বিদেশে অনেকে নাখোশ হয়ে আছে। এই নাখোশ বান্দারা আমাদের বিভাজনের সুযোগ নিতে নিতে আজকের এই অস্থিতিশীল দিন এনেছে। আমরা সবাই এক হয়েছিলাম বলেই দীর্ঘ দেড় যুগের শক্তিশালী ফ্যাসিবাদকে তছনছ করতে পেরেছিলাম। আমরা খণ্ড-বিখণ্ড হলে পতিত ফ্যাসিবাদ ও তার দেশি-বিদেশি দোসরেরা আমাদের তছনছ করার হীন পাঁয়তারা করবে।”

হাসনাত বলেন, “দেশ ও জাতির প্রতি দায় এবং দরদ আছে বলেই আমরা এক হয়ে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়েছিলাম। দেশ ও জাতির জন্যই এবার আমাদের এক হয়ে আমাদের স্বদেশকে বিনির্মাণ করতে হবে। কোনও ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর স্বার্থের জন্য এই ঐক্য নয়, বরং আমাদের দেশের জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকার কোনও বিকল্প নেই।”

"> ">
‘পদত্যাগের’ কথা ভাবছেন ড. ইউনূস, না করার অনুরোধ নাহিদের জুলাই ঐক্য বিনষ্টের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ঢাবিতে বিক্ষোভ উপদেষ্টা মাহফুজের পর হাসনাতেরও ঐক্যের ডাক প্রধান উপদেষ্টাকে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার আহ্বান জামায়াত আমিরের ব্রাইডাল লুকে মুগ্ধতা ছড়ালেন অপু বিশ্বাস না আছে মরার ভয় না আছে হারাবার কিছু : আসিফ মাহমুদ গ্রেপ্তারের ক্ষমতা পেলেন ট্টাইব্যুনালের তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন নাহিদ ইসলাম সেনানিবাসে আশ্রয় নেওয়াদের পরিচয় প্রকাশ করল আইএসপিআর বীরগঞ্জে বীজ ডিলার ও কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত চলমান আন্দোলনের বিষয়ে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের প্রেস বিজ্ঞপ্তি নাগরিক ছাত্র ঐক্য সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা বীরগঞ্জে ট্রাক-মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৪ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু শেরপুর সীমাবাড়ি ইউনিয়নের কদিম হাঁসড়া গ্রামে বিমলের বাড়িতে মাদকের আখরা, যেন দেখার কেউ নেই রাষ্ট্র সংস্কারের অংশ হিসেবে গ্রাহক সেবার মানোন্নয়নে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডে বড় ধরনের বদলি! ভবানীপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের উদ্যোগে আরাফাত রহমান কোকো ফুটবল টুর্ণামেন্ট উদ্বোধন হবিগঞ্জের বানিয়াচং থানা পুলিশ অঞ্জাত কিশোরীর লাশ উদ্ধারের পরিচয় সনাক্তে ফেইসবুকে পোস্ট বীরগঞ্জে এনসিপি নেতা হাসনাতের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল নানা কর্মসূচীর মধ্যদিয়ে বীরগঞ্জে আন্তর্জাতিক মহান মে দিবস পালিত বীরগঞ্জে মহান শ্রমিক দিবস পালিত ছোনকায় মহান মে দিবস উপলক্ষে বর্নাঢ্য র‌্যালী শেষে শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পন কাহারোলে স্কাউটস দিবস উপলক্ষে র‍্যালি,পরিষ্কার- পরিচ্ছন্নতা অভিযান ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমারের যন্ত্রাংশ চুরি করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তির মৃত্যু দুদকের আকস্মিক অভিযান: বীরগঞ্জ হাসপাতালে দুর্নীতির চিত্র উন্মোচিত শেরপুরে চোরসহ টলিগাড়ি পাবনার ভাঙ্গুরায় আটক শেরপুরে ইউনিয়ন জামাতের সেক্রেটারীর ভাই ৭৫০ পিস ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার শেরপুরে কলেজের অধ্যক্ষের দূর্ণীতির বিরুদ্ধে মানববন্ধন।। শেরপুরে সভাপতি কর্তৃক অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দূর্ণীতি তদন্ত করার কারনে সভাপতি পরিবর্তন নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে শেরপুর উপজেলা বিএনপি’র আনন্দ শোভাযাত্রা শেরপুরে মাদ্রাসা শিক্ষিকার আত্মহত্যা।