খুঁজুন
শুক্রবার, ২৩শে মে, ২০২৫, ৯ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

পুলিশকে যেভাবে আরও জনবান্ধব করে তোলা সম্ভব

খন্দকার ফারজানা রহমান প্রকাশিত: শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ১০:৩০ পূর্বাহ্ণ
পুলিশকে যেভাবে আরও জনবান্ধব করে তোলা সম্ভব

আঠারো শতকে যখন ইংল্যান্ডে মেট্রোপলিটন পুলিশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, তখন সেটি ছিল একটি বেসামরিক পুলিশ বাহিনী যা বেসামরিক নয় এবং বেসামরিক কমান্ড দুটোর অধীনেই কাজ করতো। ধীরে ধীরে ঔপনিবেশিক বসতি স্থাপনকারী দেশগুলো সাধারণ মানুষকে শোষণ করা শুরু করে।

ঔপনিবেশিক রাষ্ট্র থেকে সম্পদ আহরণের লক্ষ্যে পুলিশকে তারা ব্যবহার করা শুরু করে এবং পরবর্তীতে তারই ধারাবাহিকতায় স্বাধীনতার পর অনেক দেশই পুলিশকে জনগণের নিরাপত্তার কাজে ব্যবহার না করে মিলিটারাইজশনের মাধ্যমে এই সংগঠনকে জনগণের বিরুদ্ধে কিংবা কর্তৃত্ববাদী রাজনৈতিক স্বার্থ অর্জনের যন্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছে।

জুলাই-আগস্ট বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায়, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত পুলিশকে অস্ত্রায়ন ও সামরিকীকরণের মাধ্যমে সাধারণ জনগণের দাবি নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়েছে।

যেহেতু বাংলাদেশ পুলিশ দীর্ঘদিনের ব্রিটিশ আইনের মাধ্যমে পরিচালিত হয়, তাই এই আইনগুলো বাংলাদেশে একটি আধুনিক জনবান্ধব পুলিশিং গড়ে তুলতে সক্ষম কিনা তা নিয়ে অনেকদিন ধরেই প্রশ্ন উঠেছে। বাংলাদেশ পুলিশ মূলত ১৮৬১ সালের পুলিশ আইন দ্বারা পরিচালিত, এর সাথে সাথে ১৮৯৮ সালের ফৌজদারি কার্যবিধি; সাক্ষ্য আইন ১৮৭২; পুলিশ রেগুলেশন অফ বেঙ্গল ১৯৮৩ এবং অন্যান্য বিশেষ আইন দ্বারাও নিয়ন্ত্রিত হয়।

১৯৭৬ সালে সরকারি বিভিন্ন কমিটিতে পুলিশের দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নিয়োগ ব্যবস্থা পৃথকীকরণ, পুলিশের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা এবং ট্রেনিং ব্যবস্থা করাসহ বিভিন্ন সুপারিশ করা হয়। এরপর ১৯৮৮ সালের কমিশন পুলিশের পেশাগত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি প্রতিবন্ধকতা চিহ্নিত করেছিল, যার মধ্যে রয়েছে পর্যাপ্ত পুলিশের অভাব, সাংগঠনিক ও প্রাতিষ্ঠানিক অপসংস্কৃতি, জনগণের আস্থার অভাব, ত্রুটিপূর্ণ নিয়োগ নীতি, অপর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ এবং দুর্নীতি।

দুঃখজনক হলেও সত্য যে, পুলিশের বর্তমান অবস্থা একদিকে যেমন রাজনৈতিক শোষণ ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের স্বেচ্ছাচারিতার ফল, তেমনি অনেক দুর্নীতিগ্রস্ত পুলিশ অফিসার আইনের শাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বছরের পর বছর জনগণের অধিকারহরণ করেছে।

পরবর্তীতে জাতীয়ভাবে পুলিশ সংস্কার প্রকল্পের উদ্যোগ নেওয়া হয়, যেখানে কমিউনিটি ব্যবহারের পাশাপাশি পুলিশের দক্ষতা বৃদ্ধি ও আইসিটি অবকাঠামোর উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়। একইসাথে একটি পুলিশ অর্ডিন্যান্স খসড়া নীতি ২০০৭ চূড়ান্ত করা হয়, যেটি বাংলাদেশে পুলিশের সাংগঠনিক এবং সাংস্কৃতিক উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারে। বিশেষ করে পুলিশ বাহিনীকে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপমুক্ত, জনগণের কাছে জবাবদিহিতামূলক করতে এবং বাহিনীর পরিবর্তিত মানসিক কাঠামোর সাথে, পেশাগত দায়িত্বের দিক থেকে আরও দক্ষ করে তুলতে পারে।

পুলিশ অধ্যাদেশে যদিও গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রবিধান যুক্ত করা হয়েছে, কিন্তু এই আইনটি কার্যকর না হওয়ায় পুলিশকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা এবং পুলিশের অতিরিক্ত বল প্রয়োগের মাধ্যমে জনগণকে নিপীড়ন করা বাহিনীর মৌলিক নীতিগুলোর অংশ হয়ে রয়েছে।

সম্প্রতি জনবান্ধব ও নিরপেক্ষ পুলিশ বাহিনী প্রতিষ্ঠার উদ্দেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ‘পুলিশ সংস্কার কমিশন’ গঠন করেছে। যেহেতু বাংলাদেশে পুলিশের আগ্রাসী ভূমিকার কারণে সাধারণ মানুষ এবং পুলিশের মধ্যে বিশ্বাসহীনতার সুযোগ এবং অনাস্থা তৈরি হয়েছে সেহেতু এই সংস্কার কমিটি জনগণের সাথে পুলিশের সম্পর্ক পুনরায় স্থাপনের ক্ষেত্রে কার্যকর নীতি সুপারিশ করবেন বলে আমি ব্যক্তিগত ভাবে বিশ্বাস করি।

যদিও বাংলাদেশের পুলিশের অনেক সাফল্য রয়েছে, জাতিসংঘ মিশনে দায়িত্ব পালন কিংবা করোনাকালীন সময়ে দায়িত্ব পালন কিংবা সন্ত্রাস মোকাবিলায় বাংলাদেশের পুলিশ আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, পুলিশের বর্তমান অবস্থা একদিকে যেমন রাজনৈতিক শোষণ ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের স্বেচ্ছাচারিতার ফল, তেমনি অনেক দুর্নীতিগ্রস্ত পুলিশ অফিসার আইনের শাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বছরের পর বছর জনগণের অধিকারহরণ (কখনো অসদাচরণ, গুম, অকারণে মামলার আসামি) করেছে। কিছু মৌলিক সংস্কার প্রয়োজনীয় এবং আবশ্যক বলে মনে করি—

স্বচ্ছ জবাবদিহিমূলক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা:

বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী কখনো কখনো মানবাধিকার লঙ্ঘন, বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং রাজনৈতিক পক্ষপাতের অসংখ্য অভিযোগের সম্মুখীন হয়েছে। স্বাধীন তদারকির অভাব, পুলিশ সাব কালচারের প্রভাব এবং দায়মুক্তির এই প্র্যাকটিসগুলো সাংগঠনিক ব্যবস্থার অংশ হিসেবে রয়ে গেছে। পুলিশ বাহিনীর মধ্যে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে এবং স্বচ্ছতা বৃদ্ধির জন্য একটি স্বাধীন পর্যবেক্ষণ ও তদারকি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ পুলিশের বিরুদ্ধে অসদাচরণ তদন্ত ও অনুসন্ধানের জন্য বেসামরিক রিভিউ বোর্ড বা স্বাধীন সংস্থা স্থাপন করেছে যা পুলিশ কার্যক্রমের তদারকি প্রদান করে। এই ধরনের ব্যবস্থা পুলিশের জনসাধারণের কাছে দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করতে সাহায্য করে যার ফলে সাংগঠনিক স্বচ্ছতা এবং জনগণের আস্থা বজায় রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই বাংলাদেশে স্বাধীন সংস্থার মাধ্যমে পুলিশের অসদাচরণের তদন্ত পর্যবেক্ষণ এবং তার নিয়মিত প্রতিবেদনসহ প্রক্রিয়াটি স্বচ্ছ হওয়া উচিত।

প্রশিক্ষণ এবং পেশাগত দক্ষতা উন্নয়ন:

বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী প্রায়শই তার পেশাদারিত্বের অভাবের জন্য সমালোচিত হয়, অনেক কর্মকর্তা মৌলিক মানবাধিকার রক্ষা বা ডি-এস্কেলেশন কৌশলগুলোয় অপ্রশিক্ষিত। যেহেতু অনেক সময় রাজনৈতিক প্রভাবের মাধ্যমে পুলিশ নিয়োগ ও প্রমোশন দেওয়া হয়ে থাকে, অনেক অফিসারই আধুনিক পুলিশিং চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দক্ষ নয়।

পুলিশ নিয়োগের পর বিশ্বের অনেক দেশে তিন থেকে ছয় মাসের পুলিশ প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হয়। শারীরিক তৎপরতা, শক্তি, ফিটনেস এবং এর পাশাপাশি মনস্তাত্ত্বিক বা অন্যান্য পরীক্ষারও প্রয়োজন হয়। বাংলাদেশের পুলিশ বাহিনীকে দক্ষ করে তুলতে হলে অবশ্যই বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ যেমন—উত্তপ্ত পরিস্থিতি কমাতে এবং শক্তির ব্যবহার রোধ করার কৌশলগুলোর প্রশিক্ষণ, নিরাপদ থাকার কৌশলগুলোর প্রশিক্ষণ, অন্তর্নিহিত পক্ষপাত দূরীকরণ এবং জাতিগত সংবেদনশীলতার প্রশিক্ষণ, ট্রমাজনিত পরিস্থিতিতে কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে হয়, মানবাধিকার, নৈতিক আচরণ, বিরোধ নিষ্পত্তি সংক্রান্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

মেধার ভিত্তিতে পুলিশ নিয়োগীকরণ :

শুধুমাত্র যোগ্য এবং সক্ষম ব্যক্তিদের একটি স্বচ্ছ নিয়োগ ব্যবস্থার মাধ্যমে এই পেশায় নিযুক্ত করতে হবে। নির্বাচনের মানদণ্ড হতে হবে কঠোর এবং রাজনৈতিক হস্তক্ষেপমুক্ত। নতুন নিয়োগকারীদের অপরাধমূলক ইতিহাস, আর্থিক রেকর্ড এবং মনস্তাত্ত্বিক মূল্যায়নসহ ব্যাপক পটভূমি পরীক্ষা করে উপযুক্ত এবং দুর্নীতিমুক্ত ব্যক্তিদের পুলিশ হিসেবে নিয়োগ দিতে হবে।

দুর্নীতি, রাজনৈতিক প্রভাব এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে জর্জরিত বর্তমান ব্যবস্থায় জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধার করতে এবং পুলিশ যাতে সততার সাথে জনসাধারণের সেবা করে তা নিশ্চিত করার জন্য টেকসই সংস্কারের প্রয়োজন।

কার্যকর কমিউনিটি পুলিশিং বা নেবারহুড ওয়াচ ব্যবস্থা:

বাংলাদেশের পুলিশ এবং জনগণের মধ্যে আস্থা তৈরি না হলে কখনোই অপরাধ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। কমিউনিটি পুলিশিং, যার মধ্যে পুলিশ এবং স্থানীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে ইতিবাচক সম্পর্ক তৈরি করা, এই বিশ্বাসকে পুনঃনির্মাণ করতে, আইন প্রয়োগকারী এবং জনসাধারণের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করতে পারে। জননিরাপত্তামূলক যেকোনো কার্যক্রমে কমিউনিটি পুলিশিং-এ স্থানীয় সংস্থা, নারী, যুবক শ্রেণি এবং ধর্মীয় সম্প্রদায়ের নেতাদের সাথে অংশীদারিত্ব গঠন করা উচিত।

পেশাগত উৎকর্ষতা বৃদ্ধি:

যেহেতু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ২৪ ঘণ্টা নিযুক্ত একটা পেশা এবং অপরাধ দমন, তদন্তসহ বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ অপারেশনে পুলিশের  সক্রিয় অংশগ্রহণ করতে হয়, তাই কাজের কর্মঘণ্টা কমিয়ে কিংবা বেতন বা অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে হবে এবং এই পেশাকে রাষ্ট্রের যতটুকু সম্ভব সম্মান দিতে হবে।

একই সাথে পুলিশ স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট উন্নত করার জন্য সাংগঠনিকভাবে কিছু কৌশল গ্রহণ করতে হবে, যেমন মননশীলতা অনুশীলন, পিয়ার সাপোর্ট গ্রুপ মিথস্ক্রিয়া, রিলাক্সেশন ট্রেনিং, প্রয়োজনে মানসিক স্বাস্থ্য সেবা বা থেরাপি নেওয়া, সহকর্মীদের এবং নেতৃত্বের সাথে খোলা যোগাযোগ প্রভৃতি। তাহলে পুলিশ পেশার জটিল প্রকৃতির সাথে অফিসাররা আরও ভালোভাবে মোকাবিলা করতে সক্ষম হবে।

বাংলাদেশের পুলিশ বাহিনীকে সংস্কার করা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার কিন্তু প্রয়োজনীয় এবং সময়োপযোগী কাজ। দুর্নীতি, রাজনৈতিক প্রভাব এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে জর্জরিত বর্তমান ব্যবস্থায় জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধার করতে এবং পুলিশ যাতে সততার সাথে জনসাধারণের সেবা করে তা নিশ্চিত করার জন্য টেকসই সংস্কারের প্রয়োজন।

একটি স্বাধীন তদারকি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করে, প্রশিক্ষণ ও পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি করে, নিয়োগ পদ্ধতির সংস্কার করে, কমিউনিটি পুলিশিং প্রয়োগ করে, বাংলাদেশ একটি সৎ ও দক্ষ পুলিশ বাহিনী তৈরি করতে পারে যা ভবিষ্যতে তার নাগরিকদের চাহিদার প্রতি স্বচ্ছ এবং জবাবদিহিমূলক। তাই পুলিশ সংস্কার কমিশন উপরের বিষয়গুলো মাথায় রেখে তাদের গঠনমূলক সুপারিশের মাধ্যমে বাংলাদেশে শক্তিশালী ও জনমুখী পুলিশ বাহিনী প্রতিষ্ঠায় কার্যকরী ভূমিকা রাখবে বলে আমি আশা প্রকাশ করি।

খন্দকার ফারজানা রহমান ।। সহযোগী অধ্যাপক ও এক্স চেয়ার, অপরাধবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

(বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ইলিনয় শিকাগোতে পিএইচডিরত)

‘পদত্যাগের’ কথা ভাবছেন ড. ইউনূস, না করার অনুরোধ নাহিদের

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫, ১২:৩১ পূর্বাহ্ণ
‘পদত্যাগের’ কথা ভাবছেন ড. ইউনূস, না করার অনুরোধ নাহিদের

দেশের সর্বত্র উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে গুঞ্জন শুরু হয়েছে পদত্যাগের চিন্তা করছেন অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এমন গুঞ্জনের মধ্যে তার সঙ্গে দেখা করে আসলেই পদত্যাগ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ভাবছেন বলে নিশ্চিত করলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। অবশ্য তিনি যেন এমন সিদ্ধান্ত না নেন সেই অনুরোধ জানিয়েছেন সাবেক তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গিয়ে তার সাথে সাক্ষাৎ করেন নাহিদ ইসলাম। পরে বিবিসি বাংলাকে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘দেশের চলমান পরিস্থিতি, স্যারেরতো পদত্যাগের একটা খবর আমরা আজকে সকাল থেকে শুনছি। তো ওই বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে স্যারের সাথে দেখা করতে গেছিলাম। প্রধান উপদেষ্টা দেশের চলমান পরিস্থিতিতে কাজ করতে পারবেন না এমন শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।’

এসময় তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদও ছিলেন বলে জানা গেছে।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘স্যার বলছেন আমি যদি কাজ করতে না পারি… যে জায়গা থেকে তোমরা আমাকে আনছিলা একটা গণঅভ্যুত্থানের পর, দেশের পরিবর্তন, সংস্কার…। কিন্তু যেই পরিস্থিতি যেভাবে আন্দোলন বা যেভাবে আমাকে জিম্মি করা হচ্ছে। আমিতো এভাবে কাজ করতে পারবো না। তো রাজনৈতিক দলগুলা তোমরা সবাই একটা জায়গায়, কমন জায়গায় না পৌঁছাতে পারো।’

প্রধান উপদেষ্টাকে পদত্যাগের মতো সিদ্ধান্ত না নিতে আহ্বান জানিয়েছেন নাহিদ। এ প্রসঙ্গে নাহিদ বলেন, ‘আমাদের গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা এবং জাতীয় নিরাপত্তা ও দেশের ভবিষ্যৎ সবকিছু মিলিয়ে উনি যাতে শক্ত থাকেন এবং সব দলকে নিয়ে যাতে ঐক্যের জায়গায় থাকেন, সবাই তার সাথে আশা করি কো-অপারেট করবেন।’

প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগের বিষয়টি বিবেচনা করছেন জানিয়ে নাহিদ বলেন, ‘হ্যাঁ, যদি কাজ করতে না পারেন, থাকবেন, থেকে কী লাভ। উনি বলছেন উনি এ বিষয়ে ভাবছেন। ওনার কাছে মনে হয়েছে পরিস্থিতি এরকম যে তিনি কাজ করতে পারবেন না।’

পদত্যাগের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার এখনকার মনোভাবের বিষয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘এখন ওনি যদি রাজনৈতিক দল তার পদত্যাগ চায়… সেই আস্থার জায়গা, আশ্বাসের জায়গা না পাইলে উনি থাকবেন কেন?’

জুলাই ঐক্য বিনষ্টের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ঢাবিতে বিক্ষোভ

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫, ১২:২৮ পূর্বাহ্ণ
জুলাই ঐক্য বিনষ্টের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ঢাবিতে বিক্ষোভ

জুলাইয়ের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক শক্তির মধ্যে ফাটল তৈরি ও ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ র‍্যালি ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে গণ-অভ্যুত্থানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৮০টি সংগঠনের ঐকবদ্ধ প্লাটফর্ম ‘জুলাই ঐক্য’।

আজ বৃহস্পতিবার (২২ মে) রাত ১১ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে  প্রতিবাদ র‌্যালি শুরু হয়ে শাহবাগ মোড় ঘুরে আবারও রাজু ভাস্কর্যের এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

সমাবেশে অংশ নেওয়া সংগঠনগুলোর নেতারা বলেন, “যে ঐক্য নিয়ে আমরা জুলাই গণঅভ্যুত্থান করেছিলাম সে ঐক্য ভাঙতে দেশি বিদেশি ষড়যন্ত্র হচ্ছে। যারা ষড়যন্ত্র করে জুলাই ঐক্যকে বিনষ্ট করতে চাইবে জুলাই জনতা তাদেরকে আবারও দিল্লিতে পাঠিয়ে দেবে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে আমরা লড়ে যাবো। ভারতীয়, মার্কিন আগ্রাসনে ও দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে জুলাই জনতা বুক পেতে আবার রাজপথে নেমে আসবে। আমরা আবারও বুকের তাজা রক্ত দেবো তবুও বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নষ্ট হতে দেবো না।”

এ সময়  বক্তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “সচিবালয়ে ফ্যাসিবাদের অনেক দোসর বসে আছে। ৩১ মে এর মধ্যে সচিবালয় থেকে ফ্যাসিবাদের সকল দোসর  অপসারণ না করলে সচিবালয় ঘেরাও হবে।”

জুলাই ঐক্যের আপ বাংলাদেশের প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ আল মিনহাজ বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে যে সকল ভারতীদের পুনর্বাসন করা হয়েছে তাদের চিহ্নিত করে অতি দ্রুত অপসারণ করতে হবে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “জুলাইয়ের শহীদদের রক্তের ওপর আপনার সরকার গঠিত। আমরা আপনার ওপর আস্থা রাখতে চাই। জুলাইয়ের ঐক্যকে যারা নষ্ট করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। অতি দ্রুত জুলাই ঘোষণাপত্র ঘোষণা দেন এবং আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত করুন।”

জুলাই ঐক্যের অন্যতম সংগঠক মোসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মদ বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের সুচিকিৎসার না দিয়ে উপদেষ্টারা ক্ষমতা উদযাপন শুরু করেছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে ভারতীয় আধিপত্যবদের দোসরা আবারও দেশকে ভারতের কাছে তুলে দিতে চায়। উপদেষ্টা পরিষদে ভারতীয় কোনো দালাল থাকতে পারবে না। জুলাই যোদ্ধারা বেঁচে থাকতে তা সফল হবে না। এবার রাজপথে নামতে হলে আপনাদের উৎখাত করে দেশ ছাড়া করা হবে। যারা জুলাই ঐক্যের ফাটল ধরানোর চেষ্টা করছে তাদের চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থা করুন।”

এছাড়াও জুলাই স্পিরিট ধরে রেখে নতুন বাংলাদেশ গড়তে সকল ভেদাভেদ ভুলে সকল রাজনৈতিক ও সমাজিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

এ সময় মোসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মদ জুলাই ঐক্যের পক্ষ থেকে তিন দফা দাবি জানান। জুলাই ঐক্যের ৩ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে—

ক) জুলাইয়ের সকল শক্তিকে বিনষ্ট করতে যে সকল ভারতীয় এজেন্ট কাজ করছে তাদের অবিলম্বে খুজে বের করে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে হবে।

খ) উপদেষ্টা পরিষদে যারা ভারতের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে ব্যাতিব্যাস্ত অবিলম্বে তাদের অপসারন করে উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন করতে হবে।

গ) অবিলম্বে জুলাই ঘোষণাপত্র যথা সময়ে দিতে হবে।

উপদেষ্টা মাহফুজের পর হাসনাতেরও ঐক্যের ডাক

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫, ১২:০৪ পূর্বাহ্ণ
উপদেষ্টা মাহফুজের পর হাসনাতেরও ঐক্যের ডাক

আগের সব ‘বিভাজনমূলক বক্তব্য ও শব্দচয়নের’ জন্য দুঃখ প্রকাশ করে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম দেশপ্রেমিক শক্তির ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন। তার সঙ্গে সুর মিলিয়ে একই আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহও।

হাসনাত বলেছেন, “এ দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য এবং পতিত ফ্যাসিবাদের নগ্ন, দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র থেকে মুক্তির জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।”

বৃহস্পতিবার (২২ মে) উপদেষ্টা মাহফুজ আব্দুল্লাহ ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার কিছুক্ষণ পরেই নিজের ভেরিফায়েড আইডিতে এমন আহ্বান জানান হাসনাত আব্দুল্লাহ।

সেখানে তিনি লিখেচেন, “জুলাইয়ের ফ্যাসিবাদবিরোধী সব শক্তির প্রতি আহ্বান—যে বিভাজনটা অপ্রত্যাশিতভাবে আমাদের মধ্যে এসেছিল, সেই বিভাজনকে দেশ ও জাতির স্বার্থে মিটিয়ে ফেলতে হবে।”

তিনি সবাইকে সতর্ক করে বলেন, “মনে রাখবেন আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পতনে দেশে-বিদেশে অনেকে নাখোশ হয়ে আছে। এই নাখোশ বান্দারা আমাদের বিভাজনের সুযোগ নিতে নিতে আজকের এই অস্থিতিশীল দিন এনেছে। আমরা সবাই এক হয়েছিলাম বলেই দীর্ঘ দেড় যুগের শক্তিশালী ফ্যাসিবাদকে তছনছ করতে পেরেছিলাম। আমরা খণ্ড-বিখণ্ড হলে পতিত ফ্যাসিবাদ ও তার দেশি-বিদেশি দোসরেরা আমাদের তছনছ করার হীন পাঁয়তারা করবে।”

হাসনাত বলেন, “দেশ ও জাতির প্রতি দায় এবং দরদ আছে বলেই আমরা এক হয়ে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়েছিলাম। দেশ ও জাতির জন্যই এবার আমাদের এক হয়ে আমাদের স্বদেশকে বিনির্মাণ করতে হবে। কোনও ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর স্বার্থের জন্য এই ঐক্য নয়, বরং আমাদের দেশের জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকার কোনও বিকল্প নেই।”

"> ">
‘পদত্যাগের’ কথা ভাবছেন ড. ইউনূস, না করার অনুরোধ নাহিদের জুলাই ঐক্য বিনষ্টের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ঢাবিতে বিক্ষোভ উপদেষ্টা মাহফুজের পর হাসনাতেরও ঐক্যের ডাক প্রধান উপদেষ্টাকে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার আহ্বান জামায়াত আমিরের ব্রাইডাল লুকে মুগ্ধতা ছড়ালেন অপু বিশ্বাস না আছে মরার ভয় না আছে হারাবার কিছু : আসিফ মাহমুদ গ্রেপ্তারের ক্ষমতা পেলেন ট্টাইব্যুনালের তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন নাহিদ ইসলাম সেনানিবাসে আশ্রয় নেওয়াদের পরিচয় প্রকাশ করল আইএসপিআর বীরগঞ্জে বীজ ডিলার ও কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত চলমান আন্দোলনের বিষয়ে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের প্রেস বিজ্ঞপ্তি নাগরিক ছাত্র ঐক্য সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা বীরগঞ্জে ট্রাক-মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৪ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু শেরপুর সীমাবাড়ি ইউনিয়নের কদিম হাঁসড়া গ্রামে বিমলের বাড়িতে মাদকের আখরা, যেন দেখার কেউ নেই রাষ্ট্র সংস্কারের অংশ হিসেবে গ্রাহক সেবার মানোন্নয়নে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডে বড় ধরনের বদলি! ভবানীপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের উদ্যোগে আরাফাত রহমান কোকো ফুটবল টুর্ণামেন্ট উদ্বোধন হবিগঞ্জের বানিয়াচং থানা পুলিশ অঞ্জাত কিশোরীর লাশ উদ্ধারের পরিচয় সনাক্তে ফেইসবুকে পোস্ট বীরগঞ্জে এনসিপি নেতা হাসনাতের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল নানা কর্মসূচীর মধ্যদিয়ে বীরগঞ্জে আন্তর্জাতিক মহান মে দিবস পালিত বীরগঞ্জে মহান শ্রমিক দিবস পালিত ছোনকায় মহান মে দিবস উপলক্ষে বর্নাঢ্য র‌্যালী শেষে শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পন কাহারোলে স্কাউটস দিবস উপলক্ষে র‍্যালি,পরিষ্কার- পরিচ্ছন্নতা অভিযান ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমারের যন্ত্রাংশ চুরি করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তির মৃত্যু দুদকের আকস্মিক অভিযান: বীরগঞ্জ হাসপাতালে দুর্নীতির চিত্র উন্মোচিত শেরপুরে চোরসহ টলিগাড়ি পাবনার ভাঙ্গুরায় আটক শেরপুরে ইউনিয়ন জামাতের সেক্রেটারীর ভাই ৭৫০ পিস ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার শেরপুরে কলেজের অধ্যক্ষের দূর্ণীতির বিরুদ্ধে মানববন্ধন।। শেরপুরে সভাপতি কর্তৃক অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দূর্ণীতি তদন্ত করার কারনে সভাপতি পরিবর্তন নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে শেরপুর উপজেলা বিএনপি’র আনন্দ শোভাযাত্রা শেরপুরে মাদ্রাসা শিক্ষিকার আত্মহত্যা।